নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের একের পর এক হরতাল কর্মসূচিতে বেকার হয়ে পড়েছে মাওয়া ঘাটের বিভিন্ন শ্রেণীর প্রায় ২০ হাজার দিনমজুর। আর এই ২০ হাজার শ্রমিকের সঙ্গে অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছে তাদের পরিবারে থাকা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার লোক। অন্যদিকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে ঘাট ইজারাদারদেরও।
মাওয়া নৌরুটে চলা ৮৭টি লঞ্চে প্রায় ৬০০ শ্রমিক, স্পিড বোটে থাকা ১ হাজার ২০০ শ্রমিক, হোটেলসহ নানা খাবারের ব্যবসায়ী ২ হাজার ও ঘাট দিয়ে চলাচল করা তিন হাজার বাসের ১৫ হাজার শ্রমিক সবাই দিনমজুর। চলতি মাসে বিরোধী দলীয় ডাকা ৬০ ঘণ্টা ও পরে ৮৪ ঘণ্টা মোট ৭ দিনের হরতালে এসব শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।
যেসব হকার হেঁটে হেঁটে মানুষের কাছে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো তাদের আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে হরতালের কারণে। হরতালে ফাঁকা ঘাটে পাওয়া যায় না কোনো লোকজন। এদিকে ঘাট ইজারাদাররাও লোকসান গুনছেন। আর লঞ্চ মালিকরাও হিমশিম খাচ্ছে লঞ্চে কর্মরত কর্মচারীদের বেতন পরিশোধে। হরতালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় খেটে খাওয়া মানুষদের।
তারা হরতালের বিকল্প কর্মসূচি চান।
মাওয়া নৌরুটের লঞ্চ মালিক সমিতির অন্যতম কর্ণধার মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা জানান, এ রুটে তার ৩টি লঞ্চ রয়েছে। হরতালে যাত্রী না থাকায় এগুলো বন্ধ রয়েছে। এতে তার প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এই পরিবহনের শ্রমিকরা বেকার বসে আছে।
এ রুটে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন শ্রমিক লঞ্চের সারেং-শাজাহান, সারেং আমির হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা অলস বসে আছি। লঞ্চ না চললে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচবো কিভাবে। এমনিভাবে এমএল সাথী, এমভি আমজাদের শ্রমিকরাও হরতালের ব্যাপারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান। ঘাটের কুলি তাহের বলেন, আজ দুই দিন কাম নাই, ঘরে খাবারও নাই। দিন আনি দিন খাই।
কাম না করলে না খেয়ে মরতে হবে। আরো হরতাল বাড়ানো হলে আমাদের মতো কুলিদের আর বাচন নাই।
মাওয়া ঘাটের ইজারাদার মো. আশরাফ হোসেন খান বলেন, হরতাল করা যেমন রাজনৈতিক অধিকার, তেমনি হরতাল না করারও অধিকার মানুষের আছে। স্বাধীন মতো মানুষের চলাচল করার অধিকারও রয়েছে। তাই যারা হরতাল করবে তারা করুক আর যারা হরতাল সমর্থন করে না তারা তাদের কাজকর্ম করুক।
তিনি আরো জানান, হরতালের কারণে তার লাখ লাখ টাকার লোকসান হবে। কারণ এই ঘাটটি তার নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ইজারা নেওয়া। তা ছাড়া প্রতিদিন এ ঘাটে যেসব শ্রমিক কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে তারা সবচেয়ে বড় বিপাকে পড়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।