গাজীপুরের সালনায় সালনা অরচ্যাডে বেড়াতে গিয়েই ফুলটি প্রথম দেখি। প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলে একটি লম্বালম্বি ফুলের কেয়ারি। তাতে শতদল পদ্ম, সুগন্ধি গুলঞ্চচাঁপা, বিচিত্র ঘাসফুল আর মালতীর ঝাড়। আর একপাশে কার্ডওয়েল লিলি সুদর্শন পাতা ও ফুল নিয়ে নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে। দেখতে কিছুটা সাদামাটা হলেও একধরনের আকর্ষণ আছে।
এই আকর্ষণ গাছটির ব্যতিক্রমী গড়নের জন্যও হতে পারে।
ইতিমধ্যে অন্য কোনো বাগানে ফুলটি দেখেছি বলেও মনে হলো না। কিন্তু ফুলটির সাদামাটা রূপের কারণে প্রথম দেখায় কিছুটা চেনা চেনাও মনে হতে পারে। আমেরিকার ব্রুকলিন বোটানিক্যাল গার্ডেনে বেড়াতে গিয়ে লিলি ফুলের পাশে এদের আস্ত একটা ঝাড় দেখেছি। তবে ফুলগুলোর গড়নে কিছুটা ভিন্নতা আছে।
তখনো অবশ্য নামটি জানা হয়নি। পরে স্থপতি মুশতাক কাদরীর সহযোগিতায় নামটি জানা হলো। কিন্তু এখানে প্রচলিত কোনো বাংলা নাম নেই।
কার্ডওয়েল লিলি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার গাছ। পৃথিবীর বিভিন্ন উষ্ণ অঞ্চলে আকর্ষণীয় কন্দজ ফুল হিসেবে সুপরিচিত।
এরা মূলত বৃষ্টিবহুল বন ও সাগরপাড়ের বাসিন্দা। ইংরেজিতে Brisbane Lily বা Northern Christmas Lily নামেও পরিচিত। কার্ডওয়েল লিলি (Proiphys amboinensis) বহুবর্ষজীবী কন্দজ গাছ। বড় আকৃতির পাতাগুলো লম্বায় ২৫ সে.মি. এবং চওড়ায় ৩৫ সে.মি. পর্যন্ত হতে পারে, দেখতে অনেকটা কিডনি আকৃতির, কিনারা ওপরের দিকে মোড়ানো এবং সুস্পষ্ট শিরাযুক্ত। কাণ্ড ১৫ থেকে ৬০ সে.মি. পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে।
সাদা রঙের ফুলগুলো ফোটে গ্রীষ্মে, অন্তত ১৮টি ফুলের একটি বড় থোঁকা থাকে। প্রতিটি একক ফুলের পাপড়ির সংখ্যা ছয়, হলদেটে পরাগকেশর অনেকটাই দৃশ্যমান। ফুল দীর্ঘস্থায়ী। সাধারণত শীতের আগেই রিক্ত মঞ্জরিদণ্ড নিজের দীনতা জানান দিতে শুরু করে। তারপর হিমেল বাতাসের স্পর্শে ধীরে ধীরে ধড়টা শুকিয়ে ওরা মাটির কম্বলে শীতঘুমে চলে যায়।
ফুল দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় সব ধরনের বাগানেই শোভা বৃদ্ধির জন্য রোপণ করা যেতে পারে। টবেও চাষযোগ্য। বাড়ির লনে বেশ মানানসই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।