বটমলেস পুঁজিবাদ
মিনা ফারাহ
সরকার হালকা কিন্তু সমস্যা গভীর। লিবিয়া-মিসর সব বসন্তই এখানে।
বিডিআর, ফেলানী আর বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের জন্য নরপশুদের সুষ্ঠু বিচার
যদি না-ই করতে পারি তাহলে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর
মতো অমানুষের বিচার করছি কেন? সব সম্ভবের বাংলাদেশ। বটমলেস
বাস্কেট শুনেছি, এবার দেখব বটমলেস পুঁজিবাদ। ৩২ বছরের
অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, পুঁজিবাদ বাংলাদেশে অসম্ভব।
অবাস্তব
পুঁজিবাদ জন্ম দিয়েছে ভয়ঙ্কর অনিয়ন্ত্রিত এবং অসম সমাজব্যবস্থা,
যেখানে পুঁজি আর সামন্তবাদ একই প্লেটে দীর্ঘমেয়াদে রা হবে না। বড়
বড় বিশেষ শিল্প গ্রুপকে যারা শিল্প বিপ্লব ভাবেন তারা নরকের
বর্ণনা পড়েন না। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তলাবিহীন পুঁজিবাদের
স্বপ্নে হাসিনা সরকারকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করে চলেছেন প্রণব-
মনমোহনেরা। এর কুফল ভোগ করছে ১৬ কোটি মানুষ। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতি,
অত্যন্ত সমস্যাসঙ্কুল; কিন্তু অতি উচ্চাভিলাষী দেশ
বলতে পৃথিবীতে একমাত্র বাংলাদেশই।
২০২১ সাল পর্যন্ত মতার
ধারাবাহিকতা, ওয়েস্ট মিনস্টার পদ্ধতিতে নির্বাচন কিংবা ২০৩০
সালের মধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কি সত্যিই আমাদের
পরিকল্পনা? বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে দেশে-বিদেশে মনমোহনদের
সাথে আলোচনা করে দেশকে আর কত নিচে নামাতে চায় সরকার! শেখ
হাসিনা কী চান সম্ভবত নিজেও জানেন না। রবীন্দ্রনাথ না নজরুল,
অমর্ত্য না ইউনূস, প্যাটেল না আব্বাস, হাসিনা না খালেদা...
প্রমাণ হয়েছে সব সিদ্ধান্তই ভারতের। সুতরাং জাতিসঙ্ঘে মনমোহন-
হাসিনার ২০ মিনিটের অবিশ্বাস্য বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে আর
কতকাল দিল্লির প্রেসক্রিপশনে চলবে বাংলাদেশ। এমনকি মিয়ানমারেরও
আমাদের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ভূমি এবং জনসংখ্যা তিন ভাগের এক ভাগ।
অর্থাৎ আমাদের সাধ ও সাধ্য দুটোই বিপজ্জনক।
বিশাল ভূখণ্ডের মালিক
চীন ও ভারত যা পারে আমরা পারি না। আমাদের সামর্থ্য বড়জোর
পর্যটন শিল্পনির্ভর ক্যারেবিয়ান দেশগুলোর মতো। আজ অবধি প্রায় অর্ধেক
মানুষেরই আবাসন নেই। মধ্যম আয়ের দেশ কিংবা বড় আকারের শিল্প
বিপ্লবের অবাস্তব চিন্তা যাদের, অর্থনীতি সম্পর্কে তারা অজ্ঞ।
এমনকি মাথাপিছু আয় ১৫০০ ডলারে উঠতে হলে ভূমি, পানি, পরিবেশ
লণ্ডভণ্ড হতে পারে।
প্রতি বছরই কৃষকের পাম্প লম্বা হয় কেন? প্রতিকূল
পরিবেশের দেশটি খুবই ছোট এবং সবচেয়ে জনবহুল। নদীতে বিলীন
এবং আবাসনে প্রতি বছরই জমি কমছে তিন থেকে পাঁচ ভাগ। আলগোরের
ভবিষ্যদ্বাণী, ৫০ বছর পর এ দেশের অস্তিত্ব না-ও থাকতে পারে।
পুঁজিবাদ করতে লাগে ভূমি, অর্থনৈতিক শক্তি, মেধা, সততা, সুশাসন,
পানি, বিদ্যুৎ, জনবল ইত্যাদি। একমাত্র জনবল বাদে আমাদের কোনোটাই
সেভাবে নেই।
সুতরাং চাইলেই সিলিকন ভ্যালি বা সাংহাই হতে পারব
না। তলাবিহীন পুঁজিবাদ কিংবা ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের
স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে না এলে ছাড়খার হবে পরিবেশ। আর এই পুঁজিবাদেরই
অন্যতম গার্মেন্ট শিল্প, যেখানে বড় বিনিয়োগের বিনিময়ে অর্জন খুবই
সামান্য। এই েেত্র নামমাত্র মজুরিতে বিশাল বিনিয়োগ এবং প্রাপ্তির
মধ্যে ভারসাম্য কোথায়? এই শিল্পকে ১৭০০ শতাব্দীর ক্রীতদাস শিল্প
বললে কি অত্যুক্তি হবে? এই শিল্পে মানুষ
পুড়িয়ে পুঁজি তৈরি করে ওয়ালমার্টওয়ালারা। রানাপ্লাজার পর পোপ
তো সে কথাই বললেন।
ওয়ালমার্টওয়ালারা এক ডলার খরচ করে ৯০
ডলারে বিক্রি করলে আমাদের কী লাভ? বরং সেখান থেকে যে পরিমাণ
জ্বালানি সাশ্রয় হতো, সেটা দিয়ে হয়তো তিন গুণ বেশি আয় করা যেত। ৪০
লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয় সত্য কিন্তু কোয়ালিটি অব লাইফ
বলতে কী আছে? পৃথিবীতে আর কোনো দেশে একই সাথে সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত
এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম রেইনফরেস্ট আছে? পরিবেশবান্ধব এই শিল্পই ১৬
কোটি মানুষের সুস্থ অর্থনীতির অন্যতম পথ। এখানে এক থেকে ১০০ স্তরের
নানা কর্মসংস্থানসহ বছরে ন্যূনতম ৫০ বিলিয়ন ডলার আয় সম্ভব।
সারা বিশ্বের পর্যটকেরা আসবে। বাহামা, জ্যামাইকা, ভার্জিন
আইল্যান্ড... এইভাবেই চলছে।
সুতরাং অর্থনীতি বুঝলে ১০০ বিলিয়ন
ডলারের পর্যটন শিল্প বাদ দিয়ে রানাপ্লাজার মতো বিপজ্জনক শিল্পের
লালন-পালন করত না। সুতরাং চায়না বা ভারতের পুঁজিবাদের
মতো চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। চায়না যা করছে তাতে পরিবেশ
বিপর্যয় হলেও সোস্যালিস্টদের হিসাব ভিন্ন। ভারতের
পরিবেশবাদীরা নিত্যনতুন প্রতিরোধ গড়ে তুলছে বলেই আমাদের পরিবেশের
ওপর হামলা, যার অন্যতম রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। কেউ কি জানে না,
আলাস্কা কিংবা আমাজানের মতো প্রাকৃতিক স্থাপত্য
সংরণে পরিবেশবিরোধীদের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা? হাসিনার
উচ্চাভিলাষ এগিয়ে গেলে ওই অঞ্চলগুলোর মানুষের ফুসফুসগুলো চায়নিজদের
মতো কয়লা হয়ে যাবে।
প্রতিদিনই
প্রধানমন্ত্রী কী বলতে বা বোঝাতে চান, বুঝতে খুবই কষ্ট হয়। মনমোহন
সরকারের সাথে অতি সম্পর্ক এবং সার্বভৌমত্বে হস্তেেপ বাংলাদেশের
অবস্থা প্রায় অঙ্গরাজ্যের মতো। সাহারাদের
মতো সাম্রাজ্যবাদীরা এ দেশের অর্থনীতিতে জুড়ে বসেছেন। স্থল, জল,
আকাশ সব কিছুতেই দখলদারি। টাইম ম্যাগাজিনের মতে, ভারতের বাতিল
প্রকল্পগুলো বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
প্রতিবাদের মুখেও
স্কাইপে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন যেমনি কুৎসিত তেমনি কলোনিয়ালিজমের
আগ্রাসন। এ যেন তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ রা কমিটির হাত-পায়ের বদলে গলার
রগ কেটে ফেলা। সরকার অর্থনীতির নাড়ি বুঝতে পারে না বলেই
সমাজতন্ত্র আর পুঁজিবাদে গুলিয়ে ফেলায় ভয়ঙ্কর এক অসম অর্থনীতির
সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র ৫৬ হাজার বর্গমাইলে ১৬ কোটি মানুষ।
রয়েছে আবাসন এবং রাজনৈতিক ভূমিদস্যুদের দখলদারী।
অন্য
দিকে কৃষিবিপ্লবের নামে প্রতি বছরই ধসে যাচ্ছে পানির স্তর।
ভূপৃষ্ঠে রিজার্ভার না থাকা আর নদীদূষণের কারণে চড়াও
হয়েছে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর। বড়পুকুরিয়ায় পানির স্তর কমতে কমতে আর
মাত্র তিন বছর, এর পরই বন্ধ হয়ে যাবে বড়পুকুরিয়া। মানুষ সেখানে পানির
জন্য মাইলের পর মাইল হাঁটছে। রোগ-বালাই বেড়েছে।
কৃষিবিপ্লবের
নামে পানির স্তর প্রায় রেড জোনের পথে। এই মাত্রার সেচ
বন্ধে আন্দোলন জরুরি, অন্যথায় সর্বনাশ হয়ে যাবে। দণি-পূর্ব এশিয়ায়
প্রতি বছর পানি কমছে এক মিটার, বাকি মাত্র ৯ মিটার। দুর্বল সরকারের
সুযোগে তলাবিহীন পুঁজিবাদের স্বপ্ন দেখিয়ে ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির
স্টাইলে লুটপাট করে যাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীরা। মিডিয়ায় কতটুকু আসে?
বাস্তবতা মানলে পুঁজিবাদ এ দেশে হবে না; বরং যাদের আছে সেসব
দেশে আমরা শ্রমিক পাঠাই।
বিষয়টা এখানেই শেষ হওয়া উচিত। মতার
শেষ মাথায় এসে ভুরিভুরি আশ্বাস আর ভিত্তিপ্রস্তরের হিড়িক মানুষ বোঝে।
উন্নত বিশ্বে হলে এর কী পরিমাণ সমালোচনা ও আন্দোলন হতো ভাবাই
যায় না। আমরা বরং প্রতিদিনের হেডলাইনে একই বাণী শুনে আনন্দিত
হই। এ দিকে মনমোহন-হাসিনার কলোনিয়ালিজমের ব্লুপ্রিন্ট একটার পর
একটা ফাঁস হচ্ছে।
সুতরাং বাংলাদেশীদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আর
কতকাল দিল্লির প্রেসক্রিপশনে চলতে চায়। চুক্তি অনুযায়ী আজ পর্যন্ত
তিনবিঘা করিডোরটি হস্তান্তর
না করে বরং দণি বেরুবাড়ি স্থায়ীভাবে রেখে দিয়েছে চুক্তির দিন থেকেই।
২০১১ সালে করিডোরটি খোলার নামে সর্দারজির মস্ত ধোঁকা, সাময়িক
লিজে যেকোনো সময় প্রত্যাহার করবে দিল্লি। বড়মাপের ষড়যন্ত্র
না হলে বিরোধী দলকে বাতিলের খাতায় রেখে ১০ হাজার মাইল
দূরে একটি ঘুপচির মধ্যে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে বৈঠক করতেন না।
এই দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে নেই।
পাওনা আদায় দূরে থাক, দিল্লির
অনুমতি ছাড়া একটি নির্দলীয় নিরপে নির্বাচনের স্বাধীনতা আমাদের
নেই। হয়তো তারা আর বিশ্বাসও করে না, এ দেশে বিরোধী দলের প্রয়োজন
আছে। নির্বাচনের আগে দিল্লিতে গিয়ে জনে জনে ইন্টারভিউ দিতে হয়।
পছন্দের ব্যক্তিকে ঘোড়া উপহার দেয়। নির্দলীয় নির্বাচন নিয়ে যখন
চায়নাসহ সারা বিশ্ব চাপ দিচ্ছে, তখন ভারতের অসাম্প্রদায়িক
সরকারের ফর্মুলা রহস্যজনক।
নিমগাছের আপশাশের সব কিছুই
তেতো হয়ে যায়। সিডরের পর ১০০ কোটি টাকা দিতে চেয়েও একটি পয়সাও
দেয়নি। অথচ ঘোষণা ছাড়াই নেদারল্যান্ড, ইরান, সৌদি... লাখ লাখ
ডলার দিয়েছে; বরং বাংলাদেশে প্রায় দুর্ভিরে অবস্থা,
ফকরুদ্দীনকে জবাব, আমাদের মানুষকে না খাইয়ে আপনাদের কাছে চাল
বিক্রি করব কেন? ফকরুদ্দীন তখন ভিয়েতনাম থেকে চার গুণ বেশি দামে চাল
কিনতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনবিঘা করিডোর আজ
অবধি স্থায়ীভাবে না পেলেও ’৭৩ সাল থেকে দিচ্ছি উজাড় করে।
কায়দা করে ১৯৫ জন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীকেও নিয়ে গেল।
প্রণববাবু যখন
ঢাকায়, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র
করে জালিনওয়ালাবাগের মতো যে হত্যাকাণ্ড, তার পরও প্রণববাবু
নীরব! সুতরাং এরা মা বা মাসী কোনোটাই নয়।
বাংলা টকশোগুলো প্রায় হিন্দি সিরিয়ালের মতো। রাজনৈতিক
কারণে লাইসেন্স পেলে যা হয়। দেশ নিয়ে যারা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র
বোঝে না, তাদের কোনো অধিকার নেই টকশোতে শেখ হাসিনার
সমালোচনা করা, কারণ একচুল নড়ার মতা তার হাতে থাকলে এসব
করতেন না। মিডিয়ার উচিত ‘সিরিয়াল বাদ দিয়ে সিরিয়াস হওয়া।
’ সিকিম-
ভুটানকে কিভাবে জলবিদ্যুতের কারাগার বানিয়েছে ভারত,
কে জানতে চায়? না সীমান্ত, না পানি, কোনোটাই দেয়নি। টিপাইমুখ
বন্ধ করেছে? জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কিছু দূরে দূরেই অসংখ্য বাঁধ
দিয়ে শুকিয়ে ফেলছে নদী। আগাম বাঁধের বহু প্রকল্প চলমান। পাঁচ হাজার
১৬৪টির মধ্যে ২৮টি বাঁধ পশ্চিমবঙ্গের সাথে যার মধ্যে যুক্ত এই বাংলার
নদী। ফারাক্কা বাঁধের কারণে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের তলে ৩০ বছর আগেই
গাড়ি-ঘোড়া চলে।
আমার কৈশোরের ব্রহ্মপুত্র এখন নৌকার বদলে বহুতল
ভবন। যারা প্রতিবাদ করবে, তারাই দাসানুদাস। যারা করতে চায়,
ভবিষ্যতে তাদেরকে মতার বাইরে রাখার মহাপরিকল্পনা একটার পর
একটা ফাঁস। সুতরাং একতরফা নির্বাচন এবং আরেকটি ১-১১
নিয়ে ন্যূনতম সন্দেহ অনুচিত। পার্লামেন্ট বজায় রেখে কিভাবে নির্বাচন
হবে, দিল্লির সেই সব কাগজপত্র নির্বাচন কমিশনের
হাতে পৌঁছেছে বলে আশ্বস্ত করলেন কমিশনার।
মাইনুকে প্রণবের
ঘোড়া উপহার, ঘোড়ার পিঠে সাওয়ার ২০০৯-এর সরকার।
পরবর্তী ইতিহাস সবারই জানা। বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলেও
একটি বুলডোজার পর্যন্ত দেয় না কিন্তু ’৭৩ সাল থেকেই চুক্তির পর চুক্তির
শেকল। এমনকি ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকেও চুক্তির
মাধ্যমে ছেড়ে দিয়ে আমাদের জন্য দাঙ্গা-হাঙ্গামা। বিডিআরের রক্ত
না শুকাতেই আবারো সেনাবাহিনীকে ১০০টি কম্পিউটার উপঢৌকন?
কম্পিটার চিপ্স-এ কী পাঠিয়েছে দিল্লি, জানা দরকার।
এ
দেশে অস্থিরতা জিইয়ে রাখলে কর্তৃত্ববাদীদের সুবিধা। আর তলাবিহীন
পুঁজিবাদের স্বপ্নে বিভোর হাসিনা; ২০২১ সাল পর্যন্ত মতায় থাকার
ল্েয যা করছেন তা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। ১৪০
জনের বহরের অন্যতম ব্যক্তিত্ব, মন্ত্রীর বংশীবাদক স্বামীটি যখন
ম্যানহাটনের পূর্ব-নদীর হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছেন, তখন
জাতিসঙ্ঘে একান্ত বৈঠকের মাধ্যমে বিরোধী দলকে শুধু অবজ্ঞাই নয়
প্রচণ্ডভাবে অপমানও করেছেন মনমোহন। সার্বভৌমত্ব নিয়ে টানাহেঁচড়ার
বিরুদ্ধে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ বিরোধী দল। জনসমে খালেদার
দীর্ঘ অনুপস্থিতি পরিস্থিতিকে উসকে দিচ্ছে।
২০ মিনিটের ভাষণের
বেশিরভাগজুড়েই ষড়যন্ত্র, বিরোধী দলের গীবত এবং উন্নয়নের
পুরনো রেকর্ড। বিশ্বসভায় ট্রাইব্যুনালের সমর্থন আদায়ে জঙ্গিবাদের
গুজব ছড়ানো। জঙ্গি না থাকলেও জঙ্গি। হাসিনার মুখে জঙ্গি আর
সন্ত্রাস বুশকেও পরাজিত করেছে। আর এসব ষড়যন্ত্রে পাশে পেয়েছে লবিস্ট
মনমোহনকে, যারা জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ এবং ধর্মনিরপে সরকার
দেখতে পশ্চিমকেও ম্যানেজ করেছে।
দেশের লাখ লাখ বানভাসি মানুষ
যার টিকিটিও দেখে না, জাতিসঙ্ঘে গিয়ে জলবায়ু বিষয়ে তার
বিশ্ববাসীকে সতর্ক করতে আলগোরের ভূমিকায় অবতীর্ণ
হওয়া রীতিমতো জোক। অথচ নিজেই সুন্দরবন ধ্বংস করতে জ্বালিয়ে দিয়েছেন
রামপালের চিতা। জলবায়ুর ৯০ ভাগ টাকাই রাবণদের পেটে দিয়েছেন।
আর ১৬ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কিনে বিশ্বকে অস্ত্র নিয়ে না খেলার
পরামর্শ? যাবো না বলেও জাতিসঙ্ঘে গিয়ে পুরস্কার, লবি,
প্রপাগান্ডা সব হয়েছে। পুঁজিবাদীদের আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র কেন্দ্রের
নাম জাতিসঙ্ঘ যেখানে সেপ্টেম্বর মাসে লবিস্টরা দোকান খুলে বসে,
বান কি মুনরা এদেরই কলের পুতুল।
এখানে বসেই ইরাক যুদ্ধের
ব্যবস্থা হয়েছিল। এখানে এসেই কাক্সিক্ষত সব ষড়যন্ত্র সম্ভব হলো।
জাতিসঙ্ঘ থেকে ফিরে কী হচ্ছে, আমরা অন্ধ নই। মনমোহন-হাসিনা বৈঠকের
চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনমোহন-ওবামা বৈঠক। পশ্চিমা পুঁজিবাদের সবচেয়ে বড়
স্তাবক মনমোহন কি শেষ পর্যন্ত ওবামাকে বোঝাতে পেরেছেন যে,
হাসিনাকে মতায় না রাখলে ওই অঞ্চলে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটাবেন
খালেদা জিয়া? খালেদা মতায় এলে দেশ আফগানিস্তান হয়ে যাবে!
হয়তো পেরেছেন।
পরাশক্তি আমেরিকা আগে সামরিক শাসন
জারি হলে সম্পর্ক চুকিয়ে দিতো, এখন নির্বাচিত সরকার উৎখাত
করে সামরিক সরকার বসায়, যেমন মিসর। জঙ্গিবাদ এখন বড় অস্ত্র।
যেকোনো মূল্যে জঙ্গিবাদমুক্ত বিশ্ব দেখতে চায় পশ্চিমারা। আর
হাসিনা সেটারই সর্বোচ্চ ব্যবহার করছেন। পুত্রটিও ক্রমাগত জঙ্গিবাদ
আর খালেদাকে জড়িয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
বিষয়টি উদ্বেগজনক। কারণ
বাংলাদেশের বর্তমান প্রোপটে শেষ পর্যন্ত
সিং হয়তো ওবামাকে বোঝাতে পেরেছেন যে, আন্দোলনরত ভিন্ন পোশাক
এবং চেহারার ওরাই জঙ্গি। সুতরাং খালেদাকে নির্বাচনের
বাইরে না রাখলে ওই অঞ্চলে জঙ্গিবাদের উত্থান
হবে (বাস্তবে তা নয়, কারণ দুই নেত্রীর এত বড় বড় জনসভা নিরাপদেই
সম্ভব হচ্ছে। জঙ্গি থাকলে মধ্যপ্রাচ্যের মতো প্রতিদিনই ঘটনা ঘটত
বরং বাংলাদেশে জঙ্গি আছে কি না প্রশ্নবোধক,
তবে যা আছে তা ষড়যন্ত্র, তুমুল গুজব এবং লবি। ৯ তারিখের
নয়া দিগন্তে সজীবের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সন্দেহজনক।
পরিবর্তিত
বিশ্বে চীনের বিরুদ্ধে ভারত এখন ডান হাত। কান-কথায় মার্কিনিদের
জুড়ি নেই। বুশের ইরাক যুদ্ধের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। সুতরাং ৫ মের
হেফাজত দমন বিষয়টি পশ্চিমারা খুব ভালোভাবেই খেয়েছে। জঙ্গিবাদ
কেউই চায় না কিন্তু হাটহাজারীর মতো ব্রেকিং নিউজগুলো সন্দেহের
সৃষ্টি করে।
হাসিনা-মজিনা-মনমোহনদের বিষয়ে আর ঘুমালে চলবে না। শেখর
গুপ্তদের মতো প্রভাবশালী সম্পাদকেরাও হাসিনাকে মতায়
রাখতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ফলে বৈঠক শেষেই ভূমি আর পানির পরিবর্তে হঠাৎ
৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এসে হাজির। সীমান্ত বিল তোলার আশ্বাসও
হাজির। দেশে ফিরেই স্কাইপে মনমোহন-হাসিনার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন
যেন জোক।
সুন্দরবন কেন, সব কিছুই খেয়ে ফেলবে। বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর
ষড়যন্ত্রের কতটুকু জানি? তলাবিহীন পুঁজিবাদের অন্য ফর্মুলা। ইউনূস
যেদিন পচা দইয়ের জন্য কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন সে দিনও ঢাকায়
হাসিনার পাশে অমর্ত্য সেন। যেমন করে নজরুলের কবরের ওপর
জেগে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের চর। বিশ্বজুড়ে ড. ইউনূস অমর্ত্য সেনের জন্য
হুমকি।
ইউনূসই সপ্তম ব্যক্তি যিনি তিনটি বিশেষ গোল্ড মেডেলের অধিকারী।
মুজিব আরেকটি ফ্যাক্টর। এত সুখবর হজম করা কঠিন। তাই উভয় পরে জন্যই
ইউনূসবধ এত জরুরি। তা না হলে হাসিনার গাঁটে এত জোর নেই
যে বিশ্বকে উপো করে এই মাত্রায় অপমান।
যখন-তখন
অমর্ত্যরে মুখে হাসিনার অর্থনীতির পিলে চমকে ওঠা প্রশংসা ইউনূস
বধেরই অংশ। ভদ্রলোকের নির্লজ্জতা সীমাহীন। তিনি যে নোবেল পেলেন,
সেখানেও ’৭৪-এর দুর্ভি গবেষণায় মুজিবকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা।
আসল ঘটনা আমজনতা জানে। চকচক করিলেই সোনা হয় না।
আশা করি বিষয়টি বোঝাতে পেরেছি। সুতরাং যারাই মনে করেন এক
মন্ত্রীর বংশীবাদক স্বামী ইউনূস বধের জন্য দায়ী, কিছুই জানেন না।
আর এসবের জবাব দিতেই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। ৭ নভেম্বরের
বিপ্লবটি কিউবার অনুকরণে। মার্কিন তাঁবেদার বাতিস্তাকে উৎখাতের
মাধ্যমে কেস্ট্রো, চে গুয়েভারা যে বিপ্লব করেছিলেন, তার
মাধ্যমে আমেরিকা থেকে মাত্র ৯০ মাইল দূরে কিউবা নামের
রাষ্ট্রটি কিভাবে স্বাধীন ও সার্বভৌমত্বের মডেল হয়েছে, অলিভার স্টোন
বা মাইকেল ম্যুরের অস্কারপ্রাপ্ত তথ্যচিত্রগুলো সেসব তুলে ধরে।
কিউবা গরিব কিন্তু পরাশক্তির দাসত্ব মানেনি। আমাদেরও লাগত না,
যদি আওয়ামী লীগ এবং কংগ্রেসের জন্য না হতো। আমাদের
গরিবেরা পুঁটিকে রুইমাছ, কাঁচা মরিচকে সন্দেশ মনে করে খাওয়ার
মতো অসীম মতার অধিকারী বলেই গরিব বাংলাদেশ সপ্তম সুখী রাষ্ট্র
হতে পেরেছে। ৩২ বছরের প্রবাসী পুঁজিবাদী অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, গরিব
থেকেও সুখের এই অসামান্য সমতা, ওয়ালস্ট্রিটের বিলিয়নিয়ারদেরও নেই।
গুটিকয়েক পুঁজিবাদী বাদে আমজনতার চাওয়া-পাওয়া নেই বললেই চলে।
সুতরাং তলাবিহীন পুঁজিবাদীদের সবার আগে পুঁজিবাদের
স্কুলে ভর্তি হয়ে অ-আ শিখতে হবে। ভাষার প্রতিবাদে ’৫২। ’৭২এর
সংবিধানেও ভাষার কারণে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, যা টেকেনি।
পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিয়ানার
সাথে সঙ্গতি রেখে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে যে ১৫ আগস্ট, মূল
যুদ্ধ এখানেই। ‘জয়হিন্দ অনুকরণে জয়বাংলা আর পাকিস্তান জিন্দাবাদ
অনুকরণে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
’ হাসিনা-খালেদার আদর্শের যুদ্ধ
অবসানে আরেকটি ’৪৭ বা ’৭১এর আলামত শুরু হয়েছে। আদর্শের
সাথে সমঝোতা হলে ’৪৭ বা ’৭১ হতো না। বাঙালি বলতে দুই বঙ্গের
ভাষা। তবে সেই আদর্শে ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশের
সংবিধানে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেতা গোড়ায় গলদ।
বাস্তবতা আলাদা।
গোয়েবলসের অনুসারীরা বাংলা আর
বাংলাদেশীর মতো অসাম্প্রদায়িকতার
সাথে ধর্মনিরপেতাকে গুলিয়ে ফেলেছে। দিল্লির সংবিধানে যা সম্ভব,
এখানে অসম্ভব যা বারবার প্রমাণ সত্ত্বেও
মুজিবকোটওয়ালারা ধর্মনিরপেতার বিভ্রান্তি ছড়াতে বদ্ধপরিকর।
মুখে ধর্মনিরপেতা, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম পুনর্বহাল? ‘মুসলমান
হয়ে কোনো মুসলমানকে আগুনে পুড়িয়ে মারে না’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য
সাম্প্রদায়িক। এর অর্থ অন্য ধর্মের লোকেরা তা করে। প্রধানমন্ত্রীকেই
এর ব্যাখ্যা করতে হবে।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানে রাষ্ট্রধর্ম
কিংবা ধর্মনিরপেতা কোনোটাই নয়। সুতরাং দিল্লির প
থেকে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপে ব্যক্তিকে মতায় দেখার মতামত, উভয়
পরে ষড়যন্ত্র। এই পারের সংখ্যালঘুদের দুরবস্থার জন্য দায়ী ভারতের
দূষিত গণতন্ত্র। কখনোই এরা সংখ্যালঘুদের মেরুদণ্ডহীন
হওয়া থেকে রা করেনি। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরা এ জন্য
বেশি দায়ী, যাদের অন্যতম অপরাধী জ্যোতিবসু।
জিন্না-নেহরুর
কথা বাদ। পরে ডান-বাম সব সরকারই ডিপ্লোমেসি না করে বরং ৬৭ বছর
ধরেই হিন্দুপ্রধান অঞ্চলগুলোকে ভারসাম্যহীন হতে দিয়েছে। ওরা প্রশ্রয়
না দিলে এই পারের সংখ্যালঘুরা ৪৭পূর্ব ৪২ থেকে কমে ১০ ভাগ
হতো না। ওদের কারণে মাইগ্রেশন এবং অর্পিত সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে।
ভোটারসংখ্যা বাড়াতে লাখ লাখ রিফিউজিকে পালানোর অবাধ সুযোগ
করে দিয়েছে।
হুন্ডি ব্যবসায় অনিয়ন্ত্রিত-অবাধ করেছে। কলকাতার ফুটপাথ
থেকে অরুণাচল প্রদেশ, ধারাবি বস্তি থেকে দণ্ডকারণ্য... হাতে ভোটার
আর রেশন কার্ড ধরিয়ে দিয়েছে। এইভাবেই কলকাতার রামদের ৩৫ বছরের
বাম-রাজত্ব অনেকটাই সম্ভব হয়েছে। দূষিত গণতন্ত্রের কারণে ৬৭ বছর
ধরেই এপারের সংখ্যালঘুরা মেরুদণ্ড
সোজা করে দাঁড়াতে না পেরে বাধ্য হয়ে ভারতমুখী হয়েছে। ’৭১এর
মাধ্যমে অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে।
ফিরে এলেও বারবার কেন চলে যায়
কিংবা সুযোগ থাকতেও কেন ফিরে আসে না, এসব নিয়ে তেমন
কোনো গবেষণা বা আলোচনা না হওয়াটা দুঃখজনক। এভাবেই
হারিয়ে যাচ্ছে একটি সত্তা, একটি হেরিটেজ। আমরা সেসব ভুলেও গেছি;
বরং যত দিন যায় অর্পিত সম্পত্তির পরিমাণ বাড়ছে। এখন অর্পিত
সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়ার নামে আরেক লঙ্কাকাণ্ডই বাধিয়েছে সরকার।
আমি এর কোনো আগামাথাই বুঝলাম না।
এই প্রসঙ্গে ‘ব্ল্যাক
অ্যাক্টিভিজমের’ উদাহরণ টানতে পারি। ৪০ বছরের আন্দোলনের মাথায়
হোয়াইট হাউজে কালো প্রেসিডেন্ট। সুতরাং বুদ্ধিহীনদের
দিয়ে উন্নতি কিংবা দুবেলা দুমুঠো ভাত... ছেলে ভোলানো গল্প।
আওয়ামী লীগ মতায় এলে দেশে অরাজক পড়ে। দু-তিন প্রজন্ম
পরে আগামী ১০০ বছরের জন্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বন্দোবস্ত করতেই
‘ক’ ও ‘খ’ তফসিল।
কুলোতে না পেরে পদ্মা সেতুর মতো ‘খ’ তফসিলও বাতিল।
সরকার পাঁচ বছরে কোন কাজটা ঠিকমতো করল? বিলবোর্ডের
উন্নতিগুলো খতিয়ে দেখার জন্য ট্রুথ কমিশন দরকার। একমাত্র তৈমুর
লং কিংবা নিরো ছাড়া এই মাপের বিপজ্জনক চিন্তা কেউ করবে না।
পাকিস্তানিরা যথেষ্ট অবিচার করেছে সত্য কিন্তু অন্যদের পলিসি কি খুব
উন্নত? যা বলতে চাইছি, তলাবিহীন পুঁজিবাদের উচ্চাভিলাষে ছাড়খার
হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এখনই প্রতিবাদ না করলে সিকিম-ভুটান-
নেপালের মতো আমাদের স্বাধীনতাও মূল্যহীন হয়ে যাবে।
জানি না ওবামাকে মনমোহন কতটুকু বোঝাতে পেরেছেন, তবে নিঃসন্দেহ
এটা বলতে পারি দিল্লির ষড়যন্ত্র ছাড়া সুরঞ্জিত বাবুদের এই মাত্রায়
নর্তন-কুর্দন কিছুতেই সম্ভব না। তাদের অনুমতি না পেয়ে বিপুল জনসমর্থন
সত্ত্বেও ৮৮ কোটি টাকার কালো-বেড়ালটিকে পর্যন্ত বস্তায়
ভরে বুড়িগঙ্গায় ডুবিয়ে মারতে পারলাম না। বাংলাদেশের সব কিছুই
ম্যানেজ হয় দিল্লিতে আর মনমোহন ম্যানেজ করেন পশ্চিমাদের। যতণ
তারা খনিজসম্পদ ও সার্বভৌমত্বে হস্তেেপর সুযোগ পাবে ততণ পর্যন্ত চুপ।
আর এদের ওপর অতিমাত্রায়
নির্ভরতা বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নিতে পারে ১৭৫৭ সালে যখন বিস্তার
লাভ করেছিল ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানি।
ঢুকেছিল সুঁই হয়ে, বেরিয়ে গেছে ফোড়ার
মতো। এই কাজে উর্মিচাঁদ ও জগৎশেঠেরা ডান হাত। আমার বিশ্বাস,
মুজিব বেঁচে থাকলে নজরুলের বুকের ওপর রবীন্দ্রনাথ কিংবা ইউনূস বধ
করে অমর্ত্য মহাকাব্য কোনোটাই দিতেন না; বরং দিল্লিকে বলতেন,
তোমাদের সাথে শিাসফর শেষ। এবার আমি বাঙালি থেকে আমার
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে বিনির্মাণ করতে বাস্তবমুখী হবো।
মূসা ভাইয়ের কথাই ঠিক, রিমোট কন্ট্রোলে নির্বাচন।
সুতরাং সর্প
হয়ে দংশন করো, ওঝা হয়ে ঝাড়ো, প্রশ্ন থেকেই গেলÑ ‘বাংলাদেশ
তুমি কার?’ বিজেপির অবস্থা ভালো, কংগ্রেস প্রায় ধরাশায়ী।
অনেকেরই সন্দেহ, আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস ও আওয়ামী লীগ পিপিপির
ভাগ্য বরণ করতে পারে। নিউ ইয়র্ক প্রবাসী ও মানবাধিকার
কর্মী
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।