কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন উপকূলে ফাঁদজাল বসিয়ে অসংখ্য সাদা বক নিধন করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন নানা উদ্যোগ নিয়েও শিকারিদের দমন করতে পারছে না। ফলে শীত মৌসুম উপলক্ষে আসা অতিথি পাখিরাও ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিকারি বলেন, মাছকারিয়া বিলের বিভিন্ন স্থানে দৈনিক আড়াই শ ফাঁদজাল বসানো হয়। এতে প্রতিদিন ধরা পড়ে ৩০০-৪০০ সাদা বক।
তা ছাড়া ঘুঘু, চড়ুই, ময়নাসহ বিভিন্ন পাখিও ধরা পড়ে। এসব পাখি বিক্রি করে চলে শতাধিক মানুষের পরিবার।
শিকারিরা বলেন, বক ধরার জন্য তাঁরা সবুজ ঘাস, প্যারাবন, জলাশয়, ধানখেতসহ বিভিন্ন স্থানে ফাঁদজাল বসিয়ে রাখেন। জালের দুই পাশে বাঁধা থাকে দুটি বাঁশ। আবার বাঁশের সঙ্গে রশি বেঁধে দূরের ঝুপড়িঘরে টেনে রাখা হয়।
এরপর ওই স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় পালিত কিছু বক। এসব বকের বিচরণ দেখে দূরদূরান্ত থেকে দল বেঁধে অন্য বকরা এখানে নামে। একপর্যায়ে বকের সারি ফাঁদজালের ওপরে গেলে দ্রুত রশি টানা হয়। তখন দুই পাশের বাঁশ জালের ওপর দিয়ে দ্রুত ছুটে আসে এবং ভেতরে বকের দল জালে আটকা পড়ে। এরপর বিভিন্ন হাঁটবাজারে প্রতিটি বক ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয় ।
স্থানীয় কৃষক আবুল কাশেম (৫৫), গুরা মিয়া (৬০) বলেন, ‘বড় আকৃতির সাদা বককে আমরা লজ্জাবতী বক বলে ডাকি। ’ এরা রোদ অথবা গরম মোটেও সহ্য করতে পারে না। তাই খুব ভোরে (সূর্যোদয়ের আগে) এরা খাদ্য অন্বেষণে বেরিয়ে পড়ে। সূর্য ওঠার আগেই এরা চারণক্ষেত্রের পাশে ঝোপজঙ্গলে, ঘাসের আড়ালে ঘাপটি মেরে থাকে। তাই দিনে বকদের তেমন দেখা যায় না।
তবে পড়ন্ত বিকেলে এই নিরীহ প্রজাতির বক আবার বের হয়। কিন্তু শিকারিদের তৎপরতা বন্ধ না হলে এই বক বিলুপ্ত হয়ে যাবে। উখিয়া সদর বনবিট কর্মকর্তা মোজামেঞ্চল সরকার বলেন, গত ২০ নভেম্বর সকালে তাঁরা মাছকারিয়াবিলে হানা দিয়ে ফাঁদজালে ধরা ১৫টি সাদা বক উদ্ধার করেছেন।
ইউএনও মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, গত ২৮ অক্টোবর মাছকারিয়া ডেবা থেকে ১৪টি বক ধরে কুতুপালং রোহিঙ্গা বাজারে বিক্রির সময় পুলিশ দুই ব্যক্তিকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।