আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাওমী মাদ্রাসা

পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ একা, একাই পথ চলতে হয়। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মুলুত ৩ টি মাধ্যম । ১) বাংলা মিডিয়াম ২) ইংলিশ মিডিয়াম ৩) মাদ্রাসা । আমি বাংলা বা ইংলিশ মিডিয়াম নিয়ে আলোচনা করবো না । কারন মোটামোটি সবাই এই ব্যপারে অবগত আছি ।

আবার মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত ২ ধারার আলিয়া মাদ্রাসা ও কাওমী মাদ্রাসা । বাংলা মিডিয়াম ( প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা ) শিক্ষার সাথে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষার সমমান দেয়ার কারণে এ শিক্ষা উপ-ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশী অবগত আছি। তবুও আলোচনার খাতিরে উল্লেখ করা দরকার যে, বর্তমানে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন স্তর সাধারণ শিক্ষার সাথে সমমান প্রাপ্ত। যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বীকৃতি প্রাপ্ত । কিন্তু কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থা সরকার স্বীকৃতি দেয়নি ।

যার ফলে কাওমী মাদ্রাসায় থেকে পাশ করে শিক্ষাথীরা প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার উচ্চ শিক্ষা নিতে ব্যার্থ হন । এবং প্রচলিত কর্মক্ষেত্রেও তারা পিছিয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েন । কাওমী মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষাকাল সর্বমোট ১৩ বছর। সাধারণত কাওমী মাদ্রাসাগুলোতে ৪ বছরের প্রাথমিক ( কোরানের হাফিজ) শিক্ষাস্তরের শেষে পরবর্তী ৯ বছর ধরে আরবী ব্যকরণ, আরবী সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, যুক্তিবিদ্যা, আল্-কুরআন (তরজমা ও তাফসির), আল্-হাদিস, ফিকাহ্ প্রভৃতি পড়ানো হয়ে থাকে। কোন কোন কাওমী মাদ্রাসায় এস্তরে নিজস্ব শিক্ষাক্রমের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার ৫ম শ্রেণী, কোথাও ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত এবং কোন কোন মাদ্রাসায় ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত আবশ্যিক বিষয়গুলো, বিশেষ করে বাংলা, ইংরেজী, গণিত ও ভূগোল পড়ানো হয়ে থাকে।

কিন্তু তা খুব অল্প সংখ্যক মাদ্রাসায় । এখানে লক্ষ্যনীয় যে কাওমী মাদ্রাসার বিপুল অংশ এতিম, এবং সাধারণত দেশের শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরাই সাধারণত কাওমী মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে থাকে। অল্প কিছু সংখ্যক পিতামাতা তাঁদের ছেলেমেয়েদেরকে মাদ্রাসায় পড়াশুনা করতে পাঠান পরকালীন মুক্তির আশায় তাদের সামর্থ্য থাকা সত্বেও । কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থা কে কোন ভাবেই ছোট করে দেখার কারন নেই ,কারন এর ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা নেহাত কম নয় । বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী এই কাওমী মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত রয়েছে।

আর এই মাদ্রাসা গুলো পরিচালিত হয় মুলত মানুষের দানের টাকায়। আর মানুষ ধর্মীয় পরলৈকিক লাভের আশায় এই মাদ্রাসা গুলোতে দান করে থাকে । এখানে মূল বিষয় হচ্ছে ধর্মীয় শিক্ষা, যেখানে পুরো পৃথিবী জুড়ে বিজ্ঞানের জয়-জয়কার সেখানে এই মাদ্রাসা গুলো তে শেখানো হয় কোরান, হাদিস, ফিকাহ্ , ইসলামের ইতিহাস । আসলে বাস্তব জীবনে এই বিষয় গুলো কত টুকু জরুরী ? কর্ম ক্ষেত্রে কাওমী মাদ্রাসায় পড়া ছাত্র ছাত্রী কত টুকু সফল ? একমাত্র পরলৈকিক ব্যাপার টুকু ছাড়া সব ক্ষেত্রে তারা কি পিছিয়ে পরছে না ? শিক্ষানবিশ অবস্থায় একজন মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী কে যেভাবে মানসিক ভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয় তাতে দেখা যায় তারা তাদের শৈশব ও কৈশোর কাটে অমানবিক ভাবে । এছাড়া একটু সাধারন ভুল হলেই তাদের উপর নেমে আসে অমানসিক নির্যাতন ।

এছারা বিভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দ্যেশে এই সব কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী কে ব্যবহার করা এটা আমাদের সবারই জানা । শিক্ষা গুরুর কাজ হচ্ছে আমাদের মানুষ বানানো কিন্তু কাওমী মাদ্রাসা গুলোর দিকে তাকালে মনে হয় সেখানের শিক্ষকগন মানুষ বানানোর চেয়ে ধর্মীয় যোদ্ধা বানানোর দিকে বেশী মনযোগী । আসলে সঠিক শিক্ষার অভাবে অনেক প্রতিভা কি আমরা অকাতরে ধংশ করছি না ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।