আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
তিনটা ঘটনা একে একে বলব, দেখেন কোন মিল পাওয়া যায় কিনা।
এক:
একদিন আজাইরা টিভিতে চ্যানেল পাল্টাচ্ছিলাম। দেখার তেমন কিছু না পেয়ে, কোন এক চ্যানেলে টেলিসপিং এর একটা প্রোগ্রাম দেখতে লাগলাম। বিক্রি হচ্ছিল, রুদ্রাক্ষ। ঘটনাটা এরকম, কোন এক দানব পৃথিবীতে ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছিল।
সে দেবতাদের পাত্তা দিত না। একে একে দেবতাদের হারিয়ে সে দেবতা শিবের ধ্যানের স্থানে উপস্থিত হল শিবকে নিধনের জন্য। একটার পর একটা অস্ত্র সে শিবের দিকে নিক্ষেপ করে ব্যর্থ হয়। একসময় শিব তাকে আগুন দিয়ে ঝলশিয়ে ধ্বংস করে দেয়।
এই মারামারিতে এক পর্যায়ে শিব ঘামে এবং তার ঘাম ফোটায় ফোটায় পৃথিবীতে এসে পড়ে।
শিবের ঘামের ফোটা পৃথিবীতে যেখানে যেখানে পড়ে সেখানেই একটা গাছ হয়। সেই গাছের নাম রুদ্রাক্ষ। এই রুদ্রাক্ষ হতে তৈরি গুটি ব্যবহারের নানা বিপদ আপদ কাটে, রোগ মুক্তি হয়, স্বাস্থ্য ভাল হয়, ভয়ভীতিহীন জীবন যাপন করা যায়, স্বামী স্ত্রীর সংসারে সুখ আসে আরো অনেক কিছু। একটা মালার দাম প্রায় ১৫৯০ রুপি।
দুই:
আমার বাবার ছোট চাচা, গ্রামের হাইস্কুল শিক্ষক।
অবসরের পরে যে টাকা পান তা দিয়ে একটা মসজিদ তৈরি করেন ঘরের পাশে। অনেক দিনের আশা আর কি!! আমাদের বাড়িটা কে বলা হয় নতুন বাড়ি। কারন আগে এই দিকে কেউ থাকত না। পরে আমার বাবার দাদা তার তিন ছেলেকে গ্রামের এইদিকে বাড়ি তুলতে বলায়, তারা তিন পরিবার সেখানে ঘর তোলেন। অতএব, ছোটদাদার সেই মসজিদে নামাজ পড়বার জন্য থাকে মাত্র তিন পরিবারের সদস্য, কারন গ্রামের অন্য দিকে বড় মসজিদ আছে এবং সবাই সেখানেই যায়।
তাছাড়া, তিন পরিবারের মাঝে আমাদের বাড়িতে কেউ থাকে না। অন্য পরিবার দুটোর প্রায় সব পুরুষই ঢাকা বা চট্টগ্রামে আছেন। বাকি থাকে কিছু পিচ্চি পোলাপান। সেই মসজিদে এক কাওমীমাদ্রাসা পাশ হুজুর রাখা হয়েছে। প্রতিদিন নামাজ পড়ান যদিও কখনই এক কাতার পূর্ণ হয় না।
হুজুর নিজে সেই পোলাপানদের নিয়ে নামাজ পড়েন, তাদের সকালে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসায় কোরান শিক্ষা দেন এবং মাগনা খাবার খান। গ্রামের অনেকেই মনে করেন যেহেতু এক কাতারও পূর্ণ হয় না নামাজের সময়, তাই মসজিদ রাখা অর্থহীন। এটা বন্ধ করে দেওয়াই শ্রেয়।
তো আমার দাদি মারা যাবার পরে সেই মসজিদের পাশেই চল্লিশার খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় এক শুক্রবারে। যেহেতু খেতে আসা হবে, তাই অনেকেই সেই দিন ছোটদাদার সেই মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন।
মসজিদ পূর্ণ হয়ে যায়। হুজুর তার বয়ান শুরু করলেন। বয়ানটা এরকম, পৃথিবী সৃষ্টির পরে আল্লাহ একদিন বড় এক পাথর ভেঙ্গে ছোট ছোট টুকরা করে পৃথিবীতে ছুড়ে দিলেন। সেই পাথরের টুকরা যেখানে যেখানে পড়েছে সেখানে নাকি, একটা মসজিদ হবে বলে আল্লাহ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেহেতু, একটা মসজিদ এখানে হয়েছে, তার মানে একটা পাথরের টুকরা এখানেও পড়েছিল।
এই মসজিদ বন্ধ করা আল্লাহর সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করার সামীল। অতএব, মসজিদটি বন্ধ করার কোন অপসনই নেই।
তিন:
ঢাকার রাস্তাগুলোতে নানাদিকে ওয়ান ওয়ে সিস্টেম করে, রিক্সা চলাচলের পথ দীর্ঘ করা হয়েছে। ২০ মিনিটের দূরত্ব অতিক্রম করতে এখন ঘন্টা খানেকের প্যাচানো রাস্তা দিয়ে ঘুরতে হয় রিক্সায়। আমি তাই প্রায়ই হেটে গুলিস্তান পার হয়ে তারপর রিক্সা নিয়ে দোয়েল চত্তরে যাই।
এতে অনেক সময় বাচে।
এরকমই একদিন হেটে গুলিস্তান দিয়ে যাবার সময় এক ইন্টারেস্টিং ক্যানভাস শুনতে পেলাম। সে এক গাছের মূল বিক্রি করছিল। দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ শুনলাম। তার ক্যানভাসটা ছিল অনেকটা এইরকম, পৃথিবীতে সবারই রাজা আছে।
যেমন বৃটিশের রাজা ব্লেয়ার, আম্রিকার রাজা বুশ তেমনি গাছেরও রাজা আছে । পৃথিবীতে সব গাছের রাজা যেই গাছ তার নাম এক্স (নামটা মনে নাই)। আল্লহ একবার কিছু একটা পৃথিবীতে ছিটিয়ে দেন। যেখানে ওটা পড়ে সেখানে একটা করে সেই এক্স গাছ উঠে। এই গাছের মূল ভক্ষণে রোগ মুক্তি আসবে, যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে, স্ত্রী কাবুতে থাকবে এবং আরো অনেক অনেক সুবিধা।
বুঝলেন কিছু????
পোস্টের সাথে সম্পর্কহীন মন্তব্য এখানে করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।