নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর এত উপদেষ্টার প্রয়োজন আছে কি না, এ বিতর্কের মধ্যেই আরও একজন উপদেষ্টা নিয়োগ পেলেন। এখন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার সংখ্যা বেড়ে হলো ১১। এর বাইরে নির্বাচনকালীন সরকারের ‘রুটিন দায়িত্ব’ পালনের জন্য ২৯ সদস্যের মন্ত্রিসভা তো আছেই।
গতকাল রোববার জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও ইত্তেফাক-এর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, পুরোনো উপদেষ্টাদের মধ্যে তিন-চারজন বাদ পড়তে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এত উপদেষ্টার বসার স্থানও সংকুলান করা যাচ্ছে না। সর্বশেষ জিয়াউদ্দিন আহমেদকে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সদ্য বাদ পড়া বিশেষ সহকারী মাহবুব উল আলম হানিফের কক্ষটি।
সূত্রমতে, নবনিযুক্ত উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেনকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা করা হতে পারে। গত আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে ‘ঐকমত্যের সরকারে’ তিনি যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
গত তিনটি রাজনৈতিক সরকারের আমলে এত বিপুলসংখ্যক উপদেষ্টা ছিলেন না।
আওয়ামী লীগের আগের আমলে (১৯৯৬-২০০১) প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন তিনজন। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে একজন উপদেষ্টা ও দুজন রাজনৈতিক সচিব নিয়োগ দেন।
মহাজোট সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতজন উপদেষ্টা নিয়োগ দেন। ১৮ নভেম্বর নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠনের পর তিনি প্রথমে দুজন, পরে একজন এবং গতকাল আরেকজন উপদেষ্টা নিয়োগ করলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, খুব জরুরি মনে না করলে উপদেষ্টার সংখ্যা আর বাড়াবেন না প্রধানমন্ত্রী।
তবে তিন-চারজন বাদ পড়তে পারেন। তাঁদের মধ্যে আছেন তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, আলাউদ্দিন আহমেদ এবং হল-মার্ক কেলেঙ্কারির কারণে বিতর্কিত সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী।
নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত চার উপদেষ্টা হলেন শফিক আহমেদ, দিলীপ বড়ুয়া, জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আনোয়ার হোসেন। উপদেষ্টারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসেন এবং মন্ত্রণালয়েও তাঁদের প্রায় সবার জন্য আলাদা কক্ষ রয়েছে। তাঁরা মন্ত্রীর সমান বেতন-ভাতা, মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন এবং মন্ত্রীর মতোই পতাকাবাহী গাড়িতে চড়েন।
নবনিযুক্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা স্মৃতিসৌধে যাননি: নবনিযুক্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা শপথের পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্প অর্পণের রেওয়াজও তাঁরা মানেননি। বিষয়টি নিয়ে গতকাল সচিবালয়ে কানাঘুষা হয়। জানতে চাইলে একজন প্রতিমন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘জাতীয় স্মৃতিসৌধে যেতে হয় নাকি? কেউ তো আমাকে বলেননি!’
জানতে চাইলে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাব। মন্ত্রিসভার বৈঠক আছে কাল (সোমবার)।
এরপর কোনো একদিন যাব। ’
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও উপদেষ্টারা জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবার নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা দায়িত্ব গ্রহণের পরও স্মৃতিসৌধে যাননি।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দায়িত্ব নেওয়ার আগে জাতীয় স্মৃতিসৌধে না যাওয়ার বিষয়টি বেআইনি নয়।
তবে এটা রেওয়াজ বা রীতি। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক এই সচিব বলেন, ‘অতীতে সবাই গেছেন কি না, বলতে পারব না; তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়িত্ব নেওয়ার আগে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গেছেন। অন্য সময়ে উপদেষ্টারা গেছেন কি না জানি না, তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারা গেছেন। ’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।