আলোকিত একটি গ্রামের স্বপ্ন দেখেছিলেন ১২ তরুণ। সাত বছর আগে সেই প্রচেষ্টায় তাঁদের পথচলা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিন্তাভাবনায় যে গ্রামটি পিছিয়ে ছিল, আজ গ্রামটি উন্নয়নমুখী। নিরক্ষরতা ও কুসংস্কারমুক্ত। গ্রামটির নাম আগদীঘা।
অবস্থান নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নে। ১২ তরুণের সবাই ওই গ্রামেরই শিক্ষার্থী। তাঁদের একটি সংগঠন আছে। নাম ‘আগদীঘা বিতর্কধারা’। এই সংগঠনের পতাকাতলে সমবেত ওঁরা।
তরুণদের অনেকেই গ্রামের বাইরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ছুটি পেলেই ছুটে আসেন সংগঠনের কাজে অংশ নিতে। যাঁরা গ্রামে থাকেন, তাঁরা পালা করে সময় দেন। সংগঠনের সভাপতি জহুরুল ইসলাম রাজশাহী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ছাত্র। তাঁদের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জহুরুল বলেন, ‘সূর্য ডুবে যাওয়ার সময় রাত আলোকিত করতে কারা দায়িত্ব নেবে এমন প্রশ্ন করা হলে মাটির প্রদীপ হয়তো বলবে, আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করব।
ঠিক তেমনি আমরা বিতর্কধারা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। ’ জহুরুলের প্রত্যাশা, দেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে মাটির প্রদীপ জ্বলে উঠবে।
আগের কথা: গ্রামটির সত্যিকারের সমস্যাগুলো কী, তা জানতে ২০০৬ সালের অক্টোবরে জরিপ চালান বিতর্কধারার সদস্যরা। এতে উঠে আসে, নিরক্ষরতা, স্বাস্থ্য বিষয়ে অসচেতনতা, কৃষি কাজে আধুনিক জ্ঞানের অভাব—এগুলোই মূলত গ্রামের ১০ হাজার বাসিন্দার প্রধান সমস্যা। গ্রামের মুক্তমনা মানুষের সঙ্গে আলোচনার পর শুরু হয় অন্ধকার গ্রামকে আলোকিত করার কাজ।
সদস্যরা একমত হন, একবিংশ শতাব্দীতে কেউ নিরক্ষর থাকতে পারে না। প্রথমেই গড়ে তোলা হয় ‘আলোর দিশারি’ নামের একটি গণমুখী নৈশবিদ্যালয়। প্রথমে এখানে ভর্তি হন ২০ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৩০ শিক্ষার্থী। তাঁরা কেউ কৃষক, কেউ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কেউ ভ্যানচালক। অক্ষরজ্ঞানের পাশাপাশি দেওয়া হয় যাপিত জীবনের নানা ব্যবহারিক জ্ঞান।
স্থানীয় কৃষিবিদ, পশুপালন কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষাদান করেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।