যে কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎ পথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথ ভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোন রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না। সুরাঃ বনী ইসরাইল আয়াতঃ ১৫
১ম কিস্তি
২য় কিস্তি
৩য় কিস্তি
ফ্রান্সে সিস্টারসিয়ান সংঘের (Cistercian Order) প্রতিনিধিত্বকারীরা ফ্রান্সের যেসকল নাইটরা জেরুজালেমের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল তাদেরকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয়।
রাজা বল্ডইন (Baldwin II) তার চিঠিতে পবিত্র ভূমির নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে তথাকথিত অসহায় ধার্মিক টেম্পলারদের অতিপ্রশংসা করেন, এছাড়াও তাদের অনুরোধগুলো রক্ষার প্রতি জোরারোপ করেন, যেখানে উল্লেখযোগ্য, চার্চ কতৃক বিশেষভাবে পোপ কতৃক তাদের সংঘের স্বীকৃতিপ্রদান এবং সকল প্রকার সাহায্য সহযোগিতা প্রদানের বিষয়টি উঠে আসে।
টেম্পলাররা যে সাহায্যের আশা অনেকদিন ধরেই করে আসছিলো তা পাওয়ার পথ সুগম হয়ে গেল। Hugues de Payens এবং তার টেম্পলার সাথীদেরকে পোপ Honorius সকল ধরণের সুবিধা এবং দায়মুক্তি দিয়ে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাল।
১১২৮ সালে The Council of Troyes টেম্পলারদেরকে এক কাউন্সিল সভায় আমন্ত্রন জানায় যেখানে টেম্পলাররা বিবিধ সুযোগ এবং আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্তির অনুমোদন লাভ করে। রাজা প্রথম হেনরি প্রচুর পরিমাণে সোনা-রুপা উপহার হিসেবে টেম্পলারদেরকে প্রদান করেন এছাড়াও ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ফ্লানডারসের (Flanders) শাসকরা টেম্পলারদেরকে বিভিন্ন সামগ্রী যেমন বর্ম ও ঘোড়া দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করে।
ইংল্যান্ড ছাড়ার আগে Hugues de Payens এই অঞ্চলে টেম্পলারদের একটি শাখা খুলে তার দায়িত্বে একজন সাথী টেম্পলারকে নিযুক্ত করে। এই কাজের পিছনে তার উদ্দেশ্য ছিল টেম্পলারদের সহযোগী অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা, এই অঞ্চল থেকে উপার্জিত সম্পদ জেরুজালেমে পাঠানো, নতুন সদস্য সংগ্রহ করা ও তাদেরকে দীক্ষিত করা এবং টেম্পলারদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলোতে তাদেরকে পাঠানো। এছাড়াও যেসকল ব্যক্তি এবং ভূমিমালিকরা তাদের নিজস্ব উপার্জন ও ভূমি এই সংঘে দান করত তারা রাজাকে কর দেয়া থেকে অব্যাহতি পেত। এভাবেই এই সংঘের বিশ্বব্যাপী নিয়ন্ত্রণের জাল বুননের সূত্রপাত হয়।
অ্যাংলো- সাক্সন রেকর্ডমতে Hugues de Payens যে সংখ্যক সদস্য তার সংঘের জন্য সংগ্রহ করেছিল তার সংখ্যা পোপ ২য় আরবান (Urban II) মনোনীত প্রথম ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈন্য সংখ্যার থেকেও অনেক বেশী।
যেভাবেই হোকনা কেন, এই সংঘের প্রতি এত বেশী আগ্রহ দেখানো হয়েছিল যে এই সংঘ খুব শীঘ্রই সমগ্র ইংল্যান্ডজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল এবং এভাবেই জেরুজালেমে এই সংঘের শাখা তৈরি হল।
অভিজাত এবং রাজপুত্ররা এই সংঘের সদস্যপদ অর্জনের ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ছিল কিন্তু সমাজের সকল স্তরের মানুষ এই সংঘের সহযোগী হওয়া অথবা এর সংস্পর্শে থাকার জন্য মরিয়া ছিল। টেম্পলাররা পোপ ও রাজার মত প্রতিপত্তি অর্জন করে, তা ব্যবহার করে, প্রচার এবং রটনার মাধ্যমে প্রশংসাযোগ্যভাবে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের উপর প্রভাববিস্তার করেছিলো। তারা মানুষকে এতটাই প্রভাবান্বিত করেছিলো যে কেউ কেউ এই ইচ্ছা পর্যন্ত প্রকাশ করেছে যে তাদেরকে যেন মৃত্যুরপর টেম্পলারদের বিশেষ পোষাকে সমাহিত করা হয়।
মজার কথা হচ্ছে টেম্পলাররা ইউরোপের অভিজাত সম্প্রদায়কে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে তারা খুব শীঘ্রই মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে যাচ্ছে এবং এই সুত্রে তারা আর্থিক সহায়তা কামনা করে।
যাইহোক কেন তারা সারা ইউরোপ থেকে যে সম্পদ সংগ্রহ করে তা যুদ্ধের জন্য ব্যয় করার পরিবর্তে নিজেদের কোষাগারে জমা করছিল। এভাবেই তারা অবৈধ উপায়ে বৈভব অর্জনের পথে প্রথম পদক্ষেপ দেয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।