আচরণ জনিত সামাঞ্জস্যতা যাচাই বাছাই করার পূর্বে জানা প্রয়োজন ফেরাউন লোকটাকে। আসমানী কিতাব পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে তো আছেই, এমনকি খ্রিস্টানদের ধর্ম গ্রন্থ বাইবেলেও ওই ব্যক্তির কথা উল্লেখ আছে। সে ছিলো ততকালীন সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাজা। ক্ষমতার দাপটে সে যা খুশী তাই করতো। শুধু তাই নয়, এক পর্যায়ে সে নিজেকে খোদা ই দাবী করে বসে।
একদিন মহারাজার রাজকীয় জ্যোতিষীরা তাকে জানোলো যে, বনী ইসরাইলের কোনো এক পরিবারে আগামী বৎসর একজন পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করবেন, যিনি ভবিষ্যতে হযরত মুসা নবী আলাইহিস সালাম হবেন।
যিনি ফেরাউনের রাজত্ব্যের ধ্বংস এবং তার জিল্লতীপূর্ণ মৃত্যুর কারণ হবে। সেই আমলের জ্যতিষীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সঠিক ভবিষ্যৎবানী করতে জানতো। ব্যাস! সাথে সাথে রাজকীয় ফরমান জারী হয়ে গেলো, “এখন থেকে বনী ইসরাইল সম্প্রদায়ে যতো পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করবে তাদেরকে তৎখনাত কতল করা হোক”। কত বড় আহাম্মক ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ওই মহারাজা।
সে খোদাই গজব প্রতিরোধ করতে চেয়েছিলো। পরবর্তীতে চরম জিল্লোতিপূর্ণ ধ্বংস নেমে এসেছিলো তার সেই বিরাট গর্বের সেনাবাহিনীর উপর ও তার নিজের উপর।
আফসোস, মহান আল্লাহ পাক কর্তৃক প্রেরিত ওই ঐশি শিক্ষা আমাদের গণতান্ত্রিক নেতারা আজ ভুলে গিয়ে ফেরাউনের মতোই আচরণ করছে, ক্ষেত্র বিশেষে তার চেয়েও বেশি তাগুত সুলভ আচরণ। এবার ক্ষমতাশীনদের জন্য আসছে নির্বাচনে ভরাডুবি (নিশ্চিত গণতান্ত্রিক মৃত্যু) তাই খোদায়ি গজব প্রতিহত করার জন্য ফেরাউন সুলভ আদেশ/নির্দেশসমূহ হচ্ছে:
১। নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষী শাহবাগী আন্দোলনকে সর্বোচ্য নিরাপত্তা প্রদান কর।
তাদেরকে সহযোগীতা প্রদান করতে যত খুশি সরকারী টাকা খরচ করো।
২। শাপলা চত্ত্বরে সমাবেশকারী আস্তিকদেরকে রাতের আধারে বাতি নিভিয়ে নির্বিচারে হত্যা করো।
৩। বিরোধী দল হরতালের ডাক দিয়ে রাস্তায় মিছিল বের করলে বৃষ্টির মতো তাদের উপর গুলি চালাও।
৪। ঢাকা শহরের কয়েকটি ব্যাচেলার ম্যাসে ককটেল পাওয়া গিয়েছে। ঢাকা শহরে প্রায় পনের হাজার ব্যাচেলর ম্যাস আছে। আদেশ - “সব খালী করে ফেল ঢাকা শহরের সকল ব্যাচেলর ম্যাস নির্বাচনে আমাদের জিততে হবে। ম্যাসে থেকে ঢাকার ভালো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে? ওত লেখাপড়ার প্রয়োজন নেই।
গরীব? ছোট খাট ব্যবসায়ী, কিংবা চাকরীজীবি? ঢাকায় সংসার চালাতে পারে না বলে ম্যাসে থাকে? ওই সব গরীবের ঢাকা থাকার প্রয়োজন নেই। গ্রামের পাঠিয়ে দাও, পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকুক। নির্বাচনে আমাদের জিততে হবে। এদেশকে ভারতের হাতে তুলে দিতে হলে এবারের নির্বাচনে হাড়া যাবে না। জনগণ ভোট দিক আর না দিক”।
৫। এ জাতির স্বাধীনতাকে ভারতের হিন্দুদের কাছে হস্তান্তর করা হোক, কারণ ৭৫ সালে যখন আমার পরিবারের সকলকে হত্যা করা হয় তখন ওরা আনন্দ করেছিলো, নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেছিলো।
৬। ইলিয়াস আলীকে গুম করো, সাগর/রুনীকে খুন করো, বিডিআরের সকল সেনা অফিসারকে খুন করো, কারণ ওরাই আমার পিতা-মাতাকে হত্যা করেছিলো।
৭।
বিরোধী দলীয় এক লক্ষ নেতা কর্মীকে হাজতে নিক্ষেপ করো, কঠিন রিমান্ডের ব্যবস্থা করো।
এবার আসা যাক ফেরাউনের সাথে সামঞ্জস্যতার বিশ্লেষণে। ফেরাউন ঢালাওভাবে বনী ইসরাইলিদেরকে হত্যা করতে আদেশ দেয়নি, সে শুধু নবজাত পুত্র সন্তানদেরকে কতল করতে আদেশ দিয়েছিলো। কন্যা সন্তানদের প্রতি ছিল না তার কোনো ক্ষোভ। উপরে উল্লেখিত ঢালাওভাবে গণতান্ত্রিক খুন ও গুমের আদেশসমূহের সাথে তুলনা করলে ফেরাউন অন্যায় একেবারেই সামান্য ও ক্ষমার যোগ্য।
বর্তমান আদেশ সমূহের তুলনায় তার আদেশসমূহ তেমন কোনো অন্যায়ের পর্যায়েই পরে না। কারণ সে ছিলো মহারাজা আর আমাদের নেত্রী হচ্ছেন জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। যেই জনগণ উনাকে বিশ্বাস করে নেতৃত্বের পতাকা হস্তান্তর করেছে, সেই নিরীহ জনগণের উপরই তিনি তার দলসহ পতিত হয়েছেন দুনিয়াবী গজব হিসাবে। হিসাব দেয়ার সময় আগত। উনার পিতার ক্ষেত্রে গজব এসেছিলো পরিবার কেন্দ্রীক এবং সম্ভবত আসবে সমস্ত দলের উপর।
মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই ফেরাউনের গজব পুনরায় এ দেশের নব্য ফেরাউন ও তার দলের উপর নাজিল করুন। আমীন, সুম্মা আমীন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।