একটি সপ্তাহ এরই মধ্যে পার হয়ে গেছে। জনের কাছে মনে হচ্ছে, সেটি চোখের পলকে। আর এখন সে ভীত। তবে জন তার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। কাঁপাকাঁপা পায়ে সে গির্জার ক্রুশের সামনে এসে দাঁড়ায়।
ঈশ্বরের প্রতি প্রার্থনায় মনোনিবেশ করে।
‘ওহে ঈশ্বর, তুমি আমাকে ক্ষমা করো। কিন্তু আমি তোমার করুণা পেতে চাই। তোমার কাছে আমি একসপ্তাহ সময় চেয়েছিলাম যা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। খোলাখুলি আমি তোমার কাছে সব ব্যক্ত করতে চাই।
আর তুমিও আমার মনের অন্তবাহির সবই জানো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে নোরাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। শুধু তার জন্য আমি এই দুনিয়ার জীবনকে বেছে নিতে চাই। তুমি আমাকে অনুমতি প্রদান কর নতুবা আমাকে ধংস করে দাও। ’
জন উত্তেজনায় কাঁপছে।
যেন এই প্রচন্ড মানসিক চাপ সে বহন করতে পারছেনা। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ঈশ্বরের কাছ থেকে সাঁড়া পাবার জন্য। সে একদৃষ্টিতে ক্রুশের দিকে তাকিয়ে আছে। লেখাগুলো ভেসে উঠতে আরো কিছু সময় ব্যয় হয়। এই সময়ের মধ্যে জন নিজেকে পাপী, ঈশ্বরের আদেশ অমান্যকারি ভেবে নিজেকে অনুশোচনায় দগ্ধ করে।
ক্রুশের লেখাগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে- ওহে জন, আমি জানতাম এমনি কিছু হবে। নারী পৃথিবীর সুন্দরতম সৃষ্টি। শুধু পুরুষের জন্য আমি তা আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ হিসেবে প্রেরণ করেছি। তোমার অন্তবাহির সকল কিছুই আমার অবগত। একজন মানুষ হিসেবে পরবর্তীতে তুমি কি করবে সেটাও আমি জানি।
যেহেতু শয়তান এখন তোমার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে। তবে খারাপ কিছু করলে তার ফল তোমাকে অবশ্যই ভোগ করতে হবে। কারণ তুমি সাধারণ কেউ ছিলে না। ঠিক আছে, পৃথিবীতে আমার নেয়ামত সমূহ তুমি উপভোগ করো।
জন ভীত সন্ত্রস্ত।
তার মনে হচ্ছে সে এখন অসহায়। এই বিশাল পৃথিবীতে সে একা একজন- একমাত্র প্রাণী।
তার পরের এক সকালে জন ঘুমাচ্ছিলো। গির্জার ফাদার এসে তার ঘুম ভাঙায়।
‘ফাদার, আমি খুবই দুঃখিত।
অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে। আমি একদমই টের পাইনি। ’
‘ও কিছুনা বৎস। তবে তোমার ঘুম ভাঙ্গিয়েছি- তোমাকে আমার সাথে একটা কাজে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। ’
‘ফাদার, আমি এক্ষুণি রেডি হয়ে আসছি।
’
ঘোড়ার গাড়িতে চেপে দুজন রওনা দেয়। জন এখনও জানেনা তারা কোথায় যাচ্ছে!
‘ফাদার, আপনার ব্যক্তিত¦ আমার ভালো লাগে। ’
‘তোমাকেও আমার অনেক পছন্দ হয়েছে জন। তুমি চাইলে গির্জার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারো। ’
‘সে আমার পরম সৌভাগ্য।
এতে আমার কোনো আপত্তি নেই। আর এ প্রস্তাবের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ’
‘ধরো, এতে তোমার জীবিকারও একটা সংস্থান হবে। সবকিছু ভেবেই আমি বলছি। ’
‘সত্যিই আপনি সুবিবেচক।
তা ফাদার, আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি!’
‘আমরা যাচ্ছি ব্যাংকে। গির্জার অনেকগুলো ডলার জমা হয়েছে। তার অর্ধেক আজকে ব্যাংকে জমা রাখতে যাচ্ছি। ভেঙ্গে ভেঙ্গে নিচ্ছি নিরাপত্তার জন্য। আর সেজন্য তোমাকেও সাথে নিলাম।
যদিও এ অঞ্চলে ও ধরনের কোনো ভয় নেই। তারপরও সাবধানের মার নেই। ’
কিন্তু জনের মনে হচ্ছে পথটাতো ভয় পাবার মতোই। তারা যাচ্ছে নিরিবিলি একটা রাস্তা দিয়ে। যার দুপাশ ঘন গাছপালায় আচ্ছাদিত।
মানুষজনের যাতায়াতও খুব একটা নেই। বেশ দূরের পথ। সবেমাত্র জন জানতে পারলো তারা ইতিমধ্যে অর্ধেক পথ অতিক্রম করেছে। অর্থ স্থানান্তরে একটু আগে ফাদার অনেক অভয় বানী শোনালেও তাকে কিছুটা উৎকন্ঠিত মনে হচ্ছে। তার কপালে জমেছে বিন্দু বিন্দু ঘাম।
যাহোক পথিমধ্যে কোনো বিপদ ঘটেনি। নিরাপদেই তারা ডলারগুলো ব্যাংকে জমা রাখতে সমর্থ হয়। এসব করতে করতে দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে। ক্ষুধার্ত তিনজন খুব দ্রুত খাবারের পাট চুকিয়ে নেয়। তিনজন মানে তাদের সাথে থাকা গাড়োয়ান।
আর জন এখন মানবীয় প্রবৃত্তি সম্পন্ন তাই তারমধ্যেও ক্ষুধা,তৃষ্ণা, ক্লান্তির আবির্ভাব হয়েছে। আবার তাদের ফিরতি যাত্রা শুরু হয়। ফাদারকে এখন বেশ চাপমুক্ত, ফুরফুরে মনে হচ্ছে। আর চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে দেখে জনের সময়টাও ভালো কাটছে। সে নোরার কথা ভাবতে থাকে।
নোরা পাশে থাকলে মন্দ হতো না। আজকে কি তার সাথে দেখা হবে! নোরা কি আমাকে আজকে প্রত্যাশা করেছে!
‘ফাদার, আপনার সাথে একটা ব্যাপার শেয়ার করতে চাচ্ছিলাম। ’
‘বলো। ’
‘নোরা মেয়েটিকে আপনার কেমন মনে হয়!’
‘নোরার ব্যাপারে আগেও তোমার সাথে কথা হয়েছে। ’
‘না মানে আমি ওকে বিয়ে করতে চাই।
’
‘এতো খুবই উত্তম কথা। তুমি চাও তো আমি নোরার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাই। ’
‘তাহলে তো খুব ভালো হয়। ’
‘তবে তার আগে আমাকে জানতে হবে নোরার সাথে তোমার সম্পর্কটা কেমন!’
‘আমি ওকে ভালোবাসি। ’
‘আর ও!’
জন এর উত্তরে কি বলবে খুজে পায়নি! নোরা তো কখনো ওকে তার ভালোবাসার কথা জানায়নি! তবে সেদিনের ঐ ঘটনা- এটা কি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ নয়! তারপরও জনের মনে ধোঁয়াশা।
তবে এসবকিছু নিশ্চয়ই ফাদারের সাথে শেয়ার করা সম্ভব নয়। জন ভাবছে আগামীকাল সরাসরি নোরাকে বিয়ের প্রস্তাব দিবে।
পরেরদিন সকাল সকাল জন নোরাদের বাড়িতে হাজির হয়। প্রধান ফটকে নোরার বাবার সাথে দেখা। জনকে দেখে তিনি উচ্ছসিত।
‘জন, কেমন আছ!’
‘ভালো। আপনি!’
‘হুম। ’
‘আপনাকে অনেকদিন পর দেখলাম। ’
‘তাই বুঝি!’
‘আমি তো প্রায়ই আসি। নোরাকে তার কাপড় ডেলেভারির কাজে সাহায্য করি।
’
‘নোরা আমাকে বলেছে। আমিও সারাদিন নানান কাজে ব্যস্ত থাকি। ঘোড়াগুলোর পরিচর্যা, তাদের জন্য খাবার আনা, বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে যাওয়া। হাটে নেয়ার উপযোগি করতে ঘোড়ার যতœ আত্তির জন্য নানান উপকরণ প্রয়োজন। সেগুলো দূর দূরান্ত থেকে কিনে আনতে হয়।
তুমি কি জানো- আমার কাছে কয়েকটা রেসের ঘোড়া আছে!’
‘তাই নাকি!’ জন বিস্মিত হয়।
‘আরে এটাই তো আমার বিশেষত্ব। এজন্যইতো আমার নাম ডাক। তোমাকে একদিন ঘোড়ার রেসে নিয়ে যাবো। ’
‘খুব ভালো হবে।
আমি আগ্রহী। ’
‘আচ্ছা তুমি তাহলে বসো। নোরা ভিতরে আছে। আমি ডেকে দিচ্ছি। ’
‘জ্বি, ধন্যবাদ।
’
‘এখন আবার ঘোড়াগুলোকে খাবার দিতে হবে। ’
জনের জন্য তা বরং ভালো হয়েছে। সে নিজেকে গুছিয়ে নেবার সময় পেয়েছে। তার হার্টবিট ক্রমেই বাড়ছে। নোরাকে সে কিভাবে কথাগুলো বলবে সেটাই তার উৎকন্ঠার কারণ।
নোরার পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়। জন তাকিয়ে দেখে সে আজকে সাদা ড্রেস পরেছে। তাকে অপূর্ব লাগছে। ঠোঁটে তার ভুবন ভুলানো হাসি। জন তার সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়।
নোরা কিছু বুঝে উঠার আগেই তার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে তাকে বিয়ের প্রস্তাব জানায়।
নোরার মুখটা বিষাদে ছেয়ে যায়। কিছুটা অস্বাভাবিকই বটে। কারণ যে কোনো মেয়েরই এতে খুশি হবার কথা। তাছাড়া জনের সাথে সে দুদিন পূর্বেই স্বেচ্ছায় অন্তরঙ্গ সময় কাটিয়েছে।
জন, সে নিজেও অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। বুঝতে পারছেনা নোরার এই বিষাদের কারণ। এমন অবস্থায় কি করবে অথবা বলবে সেটাও তার বুঝে আসছে না। অনেকটা সময় নীরবতায় কেটে যায়। অবশেষে নোরাই এগিয়ে আসে।
জনের হাতটা ধরে। দু ফোঁটা অশ্রু কপোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে।
‘জন, তুমি অনেক ভালো, সুপুরুষ। যেকোনো মেয়েই তোমাকে নিজের করে পেতে চাইবে। তোমার এই প্রসÍাবে আমি যার পর নাই খুশি।
’
‘তাহলে তোমার মনটা সেসময় খারাপ হয়ে গিয়েছিলো কেন!’ জন এখন কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছে।
‘আমার হাতে যে আর খুব বেশি সময় নেই। ’
‘মানে!’
‘জন, মন খারাপ করো না । এটাই সত্যি। খুব বেশিদিন আমি আর এই পৃথিবীতে নেই।
সে জন্যই তোমার প্রস্তাবে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। ’
‘কি বলছ তুমি! তোমাকে পাবার জন্য আমি এই পৃথিবীতে থেকেছি। আর তুমি কিনা চলে যাচ্ছ! তাই যদি হয় তবে তা কিসের আশায়!’
‘উত্তেজিত হয়োনা জন। বাস্তবতাকে মেনে নাও। বড়জোড় আর তিন মাস।
ক্যান্সার খুব ভালোভাবেই আমার শরীরে বিস্তৃতি ঘটিয়েছে। ’
জন দুহাতে নিজের মুখ ঢেকে ফেলে। পরক্ষণেই ক্রোধে ফেটে পড়ে।
‘তাহলে তুমি সেদিন কেন আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হলে। ’
‘জন, বুঝতে চেষ্টা করো- আমরা সেদিন পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলাম।
তুমি কষ্ট পেতে পারো তারপরও বলছি আগ্রহটা তোমারই ছিলো। ’
‘তোমাকে আমি যে করেই হোক সারিয়ে তুলবো। ’
‘আমার বাবা আমি অনেক চেষ্টা করেছি। ’
‘আমি শেষ চেষ্টা করে দেখবো। ’
‘তুমি কি ডাক্তার!’
‘পৃথিবীর সেরা ডাক্তারের কাছে তোমাকে নিয়ে যাবো।
’
‘তবে ক্ষীণ একটা সম্ভাবনা আছে। ’
‘তুমি আমাকে বলো। ’
‘ডাক্তার ক্যালিস, জার্মানির সেরা ডাক্তার। শুনেছি, কয়েকজন ক্যান্সার রোগীকে তিনি ভালো করতে পেরেছিলেন। ’
‘তোমাকে তার কাছে নিয়ে যাবো।
’
‘কিন্তু সেজন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তার চেয়ে বড় কথা আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি। ’
‘ফিফটি সম্ভাবনাকে আমি একশতে নিয়ে যাবো। ’
‘জন, তোমাকে আমি নিজেও ভালোবেসে ফেলেছি। আমিও অনেক কষ্ট পাচ্ছি।
’
জন নোরার চোখের জল মুছে দেয়। তার কপালে ভালোবাসার চুম্বন এঁকে দেয়।
‘প্রিয়, আমি সবকিছুর ব্যবস্থা করে তারপর তোমার কাছে আসছি। সে সময় পর্যন্ত তুমি আমার অপেক্ষা করো। ’
অশ্রুসজল চোখে জন নোরার কাছ থেকে বিদায় নেয়।
নোরা, তার চোখও ভেজা। ঝাপসা দৃষ্টিতে সে জনের গমন পথের দিকে চেয়ে আছে। সেজন্যই হয়তোবা খুব তাড়াতাড়িই জন তার দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যায়।
ব্যথিত হৃদয়ে জন ফিরে এসেছে গির্জায়। ভেবে পাচ্ছেনা এখন সে কি করবে! কোথায় পাবে এত অর্থ! অথচ নোরাকে সে কথা দিয়ে এসেছে।
সে রাত্রিতে তার ঘুম হয়না। সারারাত ছটফট করে কাটায়। ঘরময় পায়চারি করে। সকাল হয়েছে বুঝতে পারে তার দরজায় কড়া নাড়ায়। দরজা খুলে দেখতে পায় ফাদার দন্ডায়মান।
‘জন, তুমি কি এখন জাগ্রত হলে। ’
‘না মহাশয়। ’
‘তোমার চোখ টকটকে লাল। রাতে বুঝি ঘুম হয়নি। তাছাড়া তোমাকে এমন উদভ্রান্তের মতো দেখাচ্ছে কেন! কি হয়েছে তোমার!’
‘ফাদার, ও কিছুনা।
আপনার কথাই ঠিক। রাতে ভালো ঘুম হয়নি। ’
‘তোমাকে নিয়ে ব্যাংকে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এ অবস্থা দেখে তোমাকে আর অনুরোধ করতে পারছিনা। ’
‘কোনো অসুবিধা নেই।
আমি তৈরি হচ্ছি। ’
‘ঠিক আছে। তোমাকে আরো কিছু সময় দিলাম। আমার নিজেরও কিছু কাজ আছে। এর মধ্যে সেগুলো সমাধা করে ফেলি।
’
জনের মাথায় তড়িৎ একটা বুদ্ধি খেলে যায়। হ্যা এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। এটাই একমাত্র উপায়। তা ভিন্ন অন্য কোনো পথ তার সামনে খোলা নেই। জন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।
সে তার কর্ম পরিকল্পনাও সেট করে ফেলেছে। না বিফল হবার সম্ভাবনা খুবই কম। তক্ষুণি সে ফাদারের কামরায় যায়।
‘ফাদার, আমি দুঃখিত যে আপনার সাথে যেতে পারছিনা। ’
‘কেন বাছা! শরীর খারাপ লাগছে বুঝি!’
‘সেটা নয়।
ভুলেই গিয়েছিলাম নোরাকে কথা দেওয়া। তার সাথে একটা কাজে বেরুতে হবে। ’
‘বৎস, তুমি সংকোচ বোধ করো না। তুমি তোমার প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করো। তোমার কাজ সেরে আসো।
আমার যেতে কোনো সমস্যা হবে না। ’
‘ফাদার, সত্যিই আপনি মহানুভব। ’
জন গির্জা থেকে বেরিয়ে যায়। প্রথমে আসে স্থানীয় একটা মার্কেটে। ওখানকার কাজ সেরে ভাড়া করা একটা ঘোড়ার গাড়িতে চেপে রওনা দেয় তার অনির্দিষ্ট গন্তব্যে।
পথিমধ্যে এক স্থানে সে গাড়োয়ানকে থামতে বলে। হ্যা, এ জায়গাটিই উপযুক্ত মনে হচ্ছে। পাওনা মিটিয়ে গাড়োয়ানকে বখশিস দিয়ে তাকে বিদায় করে দেয়। অপেক্ষা করতে থাকে কারো আগমনের। এভাবে অনেকটা সময় পার হয়ে যায়।
জন ধৈর্য ধরে আছে। মনে হচ্ছে তার অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে। দূর থেকে একটা ঘোড়ার গাড়িকে আসতে দেখা যাচ্ছে। নাহ আশপাশে আর কেউ নেই। জন প্রস্তুত হয়।
পজিসন নেয়।
ফাদার প্রচন্ড ভয় পেয়েছেন। তার গাড়ির গতি রোধ করেছে এক যুবক। কোত্থেকে যেন ঝড়ের গতিতে তার আবির্ভাব। মুখে মুখোশ, হাতে ধারালো ছুরি।
ফাদার ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন এ বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য। গির্জার ডলারগুলো রক্ষার জন্য। যা তার কাছে আমানত হিসেবে আছে।
যুবকটি ছুরি হাতে ঝাপিয়ে পড়ে। ফাদার আতঙ্কে চোখ বন্ধ করে ফেলেন।
সেই সময়টায় তিনি প্রবল দমকা হাওয়া অনুভব করেন। চোখ খুলে দেখেন আশেপাশে কেউ নেই। কোথায় সেই যুবক! তিনি দেখতে পান দমকা হাওয়ায় তার মাথার টুপিটা দূরে উড়ে গেছে। তবে কি তিনি এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলেন! একটু তন্দ্রামত অবশ্য তার এসেছিলো। তাই হবে।
কারণ যুবকটি কোনো কালে এখানে ছিলো বলে মনে হচ্ছে না। তার ভুল ভাঙে তখনিই। সামনে যুবকটির পরিহিত মুখোশ আর ছুরিটি দেখা যাচ্ছে। তবে যুবকটি কি হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো! সে যাই হোক এমন ভ’তুড়ে পরিবেশে তিনি আর থাকতে চাইলেন না। গাড়োয়ানকে দ্রুত সে স্থান ত্যাগ করতে বললেন।
ঈশ্বরের নাম জপতে জপতে তিনি সামনে এগিয়ে যান।
নোরা গতকাল রাতে অদ্ভ’ত একটি স্বপ্ন দেখেছে। জন তাকে বলছে, তুমি কি জানো- ঈশ্বর তার প্রেরিত দেবদূতকে দিয়ে পৃথিবীতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হতে দিতে পারে না। যদিও সেসময় পৃথিবীতে সে মানুষ হিসেবেই ছিলো এবং তার উপর ছিলো শয়তানের প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা। তারপরও সে ছিলো দেবদূত, অসীম থেকে প্রেরিত।
শয়তানের দ্বারা প্ররোচিত হবার কারণে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হয়েছে।
ঘুম থেকে উঠে নোরা এ স্বপ্নের শানে নুযুল কিছুই বুঝতে পারে না। তার চোখ ভিজে যায়। স্বপ্নে হলেও জনকে সে দেখতে পেয়েছে। যদিও জনের সন্ধান কেউ দিতে পারে না তারপরও নোরা ভেবে রেখেছে তার মৃত্যুর পূর্বক্ষণ পর্যন্ত সে জনের জন্য অপেক্ষা করবে।
১২/০৮/২০১৩ - ১৪/০৮/২০১৩
for part ১
View this link
for part ২
View this link
tanim zubair
all rights reserved
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।