হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে দেখা করে এইচ এম এরশাদ তাঁর দোয়া নয়, বরং বদদোয়াই নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী। এখন তিনিই এরশাদকে সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ শনিবার জুনায়েদ বাবুনগরী এক বিবৃতিতে এরশাদের প্রতি এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বাবুনগরী বলেন, বর্তমান গভীর রাজনৈতিক সংকটময় সময়ে এরশাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আগের অবস্থান থেকে ফিরে এসে সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা দেশের জনসাধারণের প্রত্যাশাকে পূরণ করেছে এবং এটা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
কারণ, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিরপেক্ষ নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
বাবুনগরী বলেন, দেশ ও জাতি বর্তমানে এক গভীর সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে পুরো জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। অথচ সরকার গণমানুষের এই দাবির প্রতি কোনো রূপ তোয়াক্কা না করে দেশ ও জাতিকে গভীর অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা চান, প্রধানমন্ত্রীর পদ চান না।
অথচ ক্ষমতার মোহে সরকার এতটা অন্ধ হয়ে পড়েছে যে জনসাধারণের মতামতের প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপই করছে না, এমনকি তাদের জান-মাল এবং দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতেও কুণ্ঠা বোধ করছে না।
এ দেশের ইসলামপ্রিয় তৌহিদি জনতার ইমানি ভিতকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য আমাদের প্রতিবেশী বৃহত্ রাষ্ট্রটি গভীর চক্রান্তে লিপ্ত। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীরা ক্ষমতায় আসুক, তারা এটা কোনোভাবেই চাচ্ছে না। তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে একমাত্র বাধা হচ্ছে এ দেশের আলেম সমাজ ও তৌহিদি জনতা। হেফাজত মহাসচিব আরও বলেন, সময় এসেছে ছোটখাটো মতভেদ ভুলে গিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী গণমানুষকে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর।
অন্যথায় দেশ ও জাতি গভীর অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
এদিকে অপর এক বিবৃতিতে চট্টগ্রামের ৫৫০ জন আলেম এরশাদকে সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিদাতারা হলেন, মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, হাফেজ শামসুল আলম, তাজুল ইসলাম, মাওলানা সালাহ উদ্দীন, মুফতি শিব্বির আহমদ, মাওলানা মনসুর হক খান প্রমুখ।
গত ১৭ নভেম্বর এরশাদ হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাত্ করেন। এরপর এরশাদ নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিলে ২৩ নভেম্বর বাবুনগরী বলেন, মাঠে-ময়দানে যাঁরা ইসলামের পক্ষে কাজ করছেন, হেফাজতের আমির তাঁদের সাফল্য কামনা করে দোয়া করেছিলেন।
কিন্তু জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বর্তমান রাজনৈতিক যে অবস্থান, তাতে এটা কখনোই তাঁর জন্য দোয়া বলা যায় না, বরং বদদোয়াই বলতে হয়।
ওই সময় বাবুনগরী বলেছিলেন, আমির যে শর্তে এরশাদ সাহেবকে দোয়া করেছিলেন, তাতে এরশাদ সাহেবের বর্তমান রাজনৈতিক ভূমিকা ও তত্পরতায় এটা তাঁর জন্য বদদোয়া হিসেবেই সাব্যস্ত হচ্ছে। এরশাদ ইসলাম ও মুসলমানদের পক্ষে নানা মুখরোচক বুলি আওড়ালেও কার্যক্ষেত্রে বর্তমানে তাঁর ইসলামবিরোধী ভূমিকাই জাতির কাছে স্পষ্ট হয়েছে।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।