শ্বেতি, চিকিৎসা পরিভাষায় ভিটিলোগো (vitiligo) নামে পরিচিত। এটি ত্বকের বিবর্ণজনিত একটি রোগ, যা ছোঁয়াচে কিংবা মারাত্দক নয়। সাধারণত যারা গাঢ় বর্ণের তাদেরই বেশি দেখা দেয়। শিশু, নারী, পুরুষ সবাই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। শরীরের যে কোনো স্থান আক্রান্ত হতে পারে, এমন কি চোখের ভ্রূসহ সারা শরীর বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ রোগ না হলেও, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা কম হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি মানসিকভাবে হীনম্মন্যতায় ভুগে থাকেন।
কিভাবে বুঝবেন : এ রোগে ত্বকের এক বা একাধিক স্থানে রং হালকা থেকে দুগ্ধসাদা হয়ে যেতে পারে। রং পরিবর্তন ছাড়া সাধারণ অন্য কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না। এটি খুব ধীরগতিতে বিস্তার লাভ করলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে খুব দ্রুত বিস্তার ঘটতে পারে। শরীরের যে কোনো স্থানেই এটি আক্রান্ত হতে পারে।
তবে মুখ, কনুই, হাঁটু, হাত, পা এবং কোমরে বেশি দেখা যায়।
কিভাবে শ্বেতি হয় : ত্বকে মেলানিন (melanin) নামে এক ধরনের পিগমেন্ট-রঞ্জক থাকে-যার কারণে রং গাঢ় বা ফর্সা হয়। যাদের ত্বকে মেলানিন বেশি তারা কালো এবং যাদের কম তারা ফর্সা হয়ে থাকেন।
সারা শরীরে একই অনুপাত বা ঘনত্বে মেলানিন থাকে যা, বর্ণ হিসেবে প্রকাশ পায়। কোনো কারণে মেলানিন নষ্ট বা তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটলে উক্ত স্থান সাদা হয়ে থাকে।
আক্রান্ত স্থানে, ত্বকের অন্য স্থানের চেয়ে মেলানিন কম বা থাকে না।
কি কারণে হয় : শ্বেতির নিশ্চিত কোনো কারণ অদ্যাবধি জানা যায়নি। তবে প্রধান দুটি কারণ হলো বংশগত (১০-১৫ ভাগ) এবং শরীরে এক ধরনের স্বপ্রণোদিত প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়ায় স্থানভেদে মেলানিন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্য যে সব কারণে প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা হলো-
রোগ : থাইরয়েড গ্রন্থির রোগ, ডায়াবেটিস এবং বিশেষ ধরনের রক্তশূন্যতা। পুষ্টিজনিত ঘাটতি যা কোনো রোগ অথবা খাদ্যজনিত কারণে হতে পারে।
ত্বকে ইনফেকশন বা আঘাতজনিত, কিছু ওষুধ ও রাসায়নিক পদার্থ।
জটিলতা : সাধারণভাবে এটি কোনো জটিলতা তৈরি করে না, তবে রোদে পোড়া-সান বার্ন এবং ত্বকের ক্যান্সারের সম্ভাবনা খুবই কম।
চিকিৎসা : এ রোগের কোনো নিশ্চিত চিকিৎসা এখন পর্যন্ত নির্ণিত হয়নি। তবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি আপনা-আপনি ভালো হয়ে যায়।
নানা উপায়ে এটি চিকিৎসা করা যায়। তবে ফলাফল আশাব্যঞ্জক নয়। মুখে খাবার ওষুধ এবং ত্বকে ব্যবহার করার ওষুধের মাধ্যমে। আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির মাধ্যমে। যেমন পুষ্টিজনিত ঘাটতি।
সার্জারির মাধ্যমে মেলানো সাইট গ্রাফট বা সম্পূর্ণ স্কিন গ্রাফট। মনে রাখবেন কুষ্ঠ রোগের সঙ্গে শ্বেতির কোনো সম্পর্ক নেই এবং এটি ছোঁয়াচে রোগ নয়।
লেখক : সিনিয়র কনসালটেন্ট, চর্ম, এলার্জি ও কসমেটিকজনিত রোগ, এশিয়ান জেনারেল হসপিটাল লিমি.
ঢাকা। ফোন : ০১৭১৬২৮৯৮৮৭
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।