আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৪১১৫ কিলোমিটার এবং আরো কিছু-শেষ পর্ব: ঘরে ফেরার পথে

একজন নগর পরিকল্পনাবিদ যে কিনা পৃথিবীরর বাইরে থেকে পৃথিবীকে দেখতে, জানতে ভালোবাসে।

গত সপ্তাহটা খুব ব্যাস্ত কাটায় ব্লগে আসার সময় পাইনি। কিন্তু আজ সকাল থেকে ল্যাব সার্ভার ডাউন বিধায় এই ধারাবাহিকের শেষ পর্বটি লিখতে বসলাম। আজকের পর্বে থাকছে ৭ তারিখে ভিশাখাপট্টম থেকে রওয়ানা করে দিল্লী হয়ে ঘরে ফেরার পথের গল্প। পথ যেহেতু একই তাই নতুন যা কিছু দেখেছি তাই লিখছি এখানে।

সকাল সকাল হোটেল থেকে বের হয়ে স্টেশনে পৌছে গেলাম। এবার আর স্লিপার ক্লাস নয়, এসি ক্লাসেই যাত্রা করব এবং সাথে দুইজন পরিচিত মুখও আছেন। ট্রেনে উঠে সবকিছু গুছিয়ে বাইরে এলাম। ট্রেনটির একটি ছবি নিলাম। বেচারা এত পথ পাড়ি দিবে!! ট্রেনের এই ক্লাসে কিছু মজার বিষয় দেখলাম।

একটি হল গ্রীন টয়লেট আর একটি টয়লেট ইন্ডিকেটর। ইন্ডিকেটরের কাজ বুঝলেও গ্রীন টয়লেটটা কি বুঝতে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করলাম। রিজার্ভ ট্যাংক ছাড়া আর তেমন কোন পার্থক্য বুঝতে পারলামনা। ট্রেন ছেড়ে দিলে সিটে ফিরে এলাম। আরামদায়ক সিট এবং প্রাইভেসিও আছে যা এ ধরনের দূরের যাত্রায় খুবই দরকার।

তবে কাঁচের জানালা বাইরের প্রকৃতিকে শুধু দেখতেই দেয়, অনুভব করতে দেয়না। সময় হলে গেল সকালের নাস্তার। আলুর চপ আর ঝালমুড়ি দিয়ে একটু ব্যাতিক্রমী নাস্তা করলাম। দুটোতেই পেলাম বাংলাদেশী খাবারের পূর্ণ স্বাদ। নাস্তা শেষে শুরু হল আড্ডা সহযাত্রী ও পরিচিত মুখদের সাথে।

মাঝে মাঝে বাইরে তাকিয়ে প্রকৃতি দেখতে চেষ্টা করলাম কিন্তু এসি কেবিনের বদ্ধ পরিবেশে প্রকৃতি দেখে তেমন মজা পেলামনা। দুপুরে সবাই মিলে হইচই করে খাবার খেলাম ভাগাভাগি করে। সহযাত্রী তার সাথে করে বাসা থেকে চিংড়িমাছ ভুনা নিয়ে এসেছিলেন। প্রায় ৪ মাস পর চিংড়িমাছ খেয়ে খুব মজা পেলাম। আর আমার কাছে খাবারের সাথে পাওয়া পানি আর মিষ্টি দইটি দেখতে ভালো লেগেছিল বেশ।

খাবারের পর আড্ডা, ঘুম.....এইসব করেই ৭ তারিখ পার হয়ে গেল। ৮ তারিখ সকালে কোন এক স্টেশনে পেয়ে গেলাম আমুলের রিটেইল স্টোর। যেখান থেকে কিনলাম আমার কিছু প্রিয় আইটেম যা দেরাদুনে সবসময় পাওয়া যায়না। মটকা কুলফি আর দুই ফ্লেভারের আমুল কুল কিনে নিলাম দুপুরের খাবারের পর ডেজার্টে খাব বলে। ট্রেনে বসে এবার বাইরে নজর দিলাম।

দূর পাহাড়ে দেখলাম একজন বিখ্যাত হকি খেলোয়াড়ের স্ট্যাচু। চলতে চলতে দেখলাম কোন এক মফস্বলে সদ্য ক্রিকেট ম্যাচ জয়ী দলের জয়োল্লাস। দেখে মনে পড়ে গেল ছোট বেলার দিনগুলো। ট্রেন প্রায় দিল্লীতে পৌছে গেল। আগ্রা স্টেশনে দেখলাম মহারাজা এক্সপ্রেস নামের একটি লাক্সারী টুরিস্ট ট্রেন।

যতদুর জানি ট্রেনটি খুবই বিখ্যাত তার সার্ভিসের জন্য। ইচ্ছে আছে একবার এতে ভ্রমনের। সঠিক সময়ে দিল্লী পৌছে গেলাম। রাত ১১ টা পর্যন্ত স্টেশনে বিশ্রাম নিলাম এবং এদিক-ওদিক ঘুরলাম। অবশেষে রাতের ট্রেনে করে দেরাদুনে ফিরে এলাম।

সমাপ্ত হল এক দীর্ঘ ভ্রমন। ট্যুরটা অসাধারন ছিল আমার জন্য। আমার সেই অসাধারন স্মৃতিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতেই ধারাবাহিকটি লিখেছিলাম। এটাই ছিল শেষ পর্ব। তবে বোনাস হিসেবে একটি পর্ব পাবেন যাতে ভিশাখাপট্টমে দেখা সাবমেরিন মিউসিয়ামের ভেতরের বর্ননা থাকবে সাথে অনেক অনেক ছবি।

আশা করছি বোনাসটি খুব জলদি পেয়ে যাবেন। **সমাপ্ত। আগের পর্বগুলো: Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।