আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !!
আমাদের দেশের মানুষ বাংলা সিনেমা দেখতে চায় না ! অন্য কে বলতেছি কেন আমি নিজেও বেছে বেছে ছাড়া খুব একটা দেখি না ! সবার একটাই অভিযোগ হল বাংলা সিনেমায় কোন কাহিনী নাই । প্রথমটা দেখলে শেষটা বলে দেওয়া যায় !
আসলে দুনিয়ার মোটামুটি সব সিনেমার কাহিনীই একই রকম ! প্রথম ভিলেন নায়কের বাবা কে মেরে ফেলে তারপর নায়ক বড় হয়ে সেই ভিলেন কে মেরে ফেলে ! সব সিনেমাই এই ভিত্তি করে তৈরি হয় !
তো সবার কাঙ্খিত সেই বিখ্যাত ছবি ধুম থ্রীও মোটামুটি একই কাহিনী !
ছবির শুরুতে নায়ক মানে আমির খানের বাপ মারা যায় ! বড় হয়ে আমির খান সেইটার প্রতিশোধ নেয় !
আরেকটু ভাল করে বললে বলতে হয় আমিরের বাবা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে একটা সারকাস চালাইতো কিন্তু সারকার খুব ভাল চলতেছিল না ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে পারে নাই ! তাই ব্যাংক সারকাসের সব কিছু নিয়ে নিছে ! এই দুঃখে আমির বাবা বন্দুকের গুলি করছে নিজের মাথায় !
দুষ কার ব্যাংকের !
এখন আমির বড় হইয়া এর প্রতিশোধ নিবে !
কি করবে ?
ওয়েস্টার্ন ব্যাংক অব সিকাগো ধ্বংশ করিবে !
এই হল কাহিনীর সারমর্ম ! আর কিছু নাই !
যাক এবার আরো কিছু কথা বলা যাক ! ছবির শুরুর দিকে দেখা যায় এক লোক রাস্তার পাশে বইসা ভিক্ষা করতাছে ! কেউ তারে ভিক্ষা দেয় না ! হঠাৎই দেখা যায় তার পাত্রে একটা ১০০ ডলারের নোট !
কে দিলো ?
ফকির অবাক সাথে আমিও !
হায় হায় এ যুগে ১০০ ডলার আবার কে দিল ফকির কে ?
আরেকটু পরে দেখা গেল আসলে একটা নোট না আরও অনেক নোট বাতাসে উড়তাছে ! কোন এমুন চোর আছে যে টাকা চুরি করে কিন্তু সেই টাকা না নিয়া উড়ায়া দেয় ?
আছে ! ইন্ডিয়ান পার্ফেকশনিষ্ট মিষ্টার আমির খান !
টেকাটুকা বাতাসে উড়তাছে ! মানুষজন টেকা কুড়াইতে ! আর তখনই আমির খান কে দেখা গেল বিল্ডিং বাইয়া দৌড়ায়ে নামতেছে !
না না ! ভুল বুঝবেন না ! সিড়ি দিয়ে না ! তিনি নামতেছেন দেয়াল দিয়ে দৌড়ায়ে !
রাস্তায় নাইমায় সে দৌড় দিল একটা ভ্যানের ভিতর ! আমি ভাবলাম বেটা বেকুব নাকি ? দৌড়ায় কেউ ভ্যানের ভিতর যায় নাকি ?
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে ভ্যান ভাইঙ্গা মোটরসাইকেল নিয়ে বের হইল ! আরে মোটরসাইকেই যদি চড়বি তা সেইটা ভ্যানের ভিতর রাখার কি দরকার ? রাস্তার উপর রাখলেই তো ভাল হইতো ! তাড়াতাড়ি পালাইতে পারতি !
যাই হোক নায়ক পালায়া গেল !
লেডি অফিসার ভিক্টরিয়া হাজির ! চোর ব্যাংকের ভল্টের গায়ে হিন্দিতে কিছু লিখেছে তাই আর কারো কাছে না যাইয়া ডাক পড়লো মুম্বাইয়ের পুলিশ জ্যায়ের !
আচ্ছা বুঝলাম চোর হিন্দিতে কিছু লিখছে তাই বলে দুনিয়ার তামাম অফিসার থাকতে হিন্দি জানাওয়ালা পুলিশ কেন লাগবে ? আম্রিকার পুলিশ কি হিন্দি চোর ধরতে পারে না ?
তো হিন্দি জানাওয়ালা পুলিশ চলে এল ! সাথে হাজির হল জোকার আলী ! পুলিশ ব্যাংকের মালিককে বলল এবার কেবল একবার চোর চুরি করতে আসুক ! তার খবর আছে !
টিভিতে ইন্টারভিউও দিল যে এবার চোরের খবর আছে !
আবার চোর সেই ইন্টারভিউ দেখে পুলিশের সাথে গিয়ে দেখা করলো ! বলল সে চোর কে চিনে ! সে চোর কে ধরতে স্যাহায্য করতে পারবে !
চোর চুরি করতে এল !
এবং চুরি করে চলেও গেল !
ইন্ডিয়ান পুলিশ কিছুই করতে পারলো না । তবে হ্যা ! একটা গুলি লাগালো চোরের গায়ে !
পুলিশ তো বিরাট বুদ্ধিমান ! সে বুঝে গেল আসলে সাহায্য করতে আসা সেই লোকই চোর ! সোজা চলে গেল তার সারকাসে !
ও হ্যা বলতে ভুলে গেছি নায়ক তার বাপের মত সারকাস দেখায় !
পুলিশ তো জানে চোরের গায়ে গুলি লেগেছে ! সুতরাং জামা খুললেই চোর ধরা খাবে !
আমির খান জামা খুলল ! কিন্তু গুলির কোন চিহ্ন নাই ! পুলিশ অবাক সাথে আমিও ! কেবল হাত দিয়ে না স্ক্যানার দিয়েও খুজেও কোন গুলির চিহ্ন পাওয়া গেল না !
রহস্য একটু পরেই ধরা পরলো ! আসলে আমরা যে চোর কে একজন মনে করছিলাম এই চোর একজন না ! দুই জন ! জমজ ভাই ! দুইজন আমীর খান !
একজন সাহেল খান আরেকজন সামার খান !
সাহেল একটু বেশি বুদ্ধিমান আর সামার একটু বোকাসোকা ! কিন্তু এই রহস্য আর কেউ জানে না ! দুনিয়ার চোখে তারা একই জন !
এই হল কাহিনী ! একবারের শেষের দিকে যখন দুই আমীর এক সাথে পুলিশের কাছ থেকে ভাগতেছে তখন আলিয়া এসে হাজির !
ও ! এর ভিতর আবার আলিয়া আইলো কোথা থেকে ?
আসলে এই মুভিতে আলিয়া মানে ক্যাটরিনার কোন দরকার ছিল বলে আমার মনে হয় নাই ! আলিয়া কে দেখা যায় কেবল তিনটা গানের সময় ! আর সামারের সাথে একবার একটু ডেটে যায় আর একটা চুম খায় !
ব্যাস ! এই হল আলিয়ার ভুমিকা !
তো যাক ! শেষের দিকে ভিনেল যেমন নায়িকা ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে এখানেই সেই রকম একটু চেষ্টা আরকি ! নায়ক পালাইতাছে পুলিশ আলিয়া নিয়ে নিয়ে হাজির !
আলিয়া চিৎকার করে বলল
সামাআআআআরররররর !! সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে !
সামার কনফিউজ ! নায়িকার চোখে পানি ! কেমনে পালায়া যায় !
আসলে এই জন্য নায়ক গুলা ধরা খায় ! যাক শেষ টুকু আর নাই বললাম !
এই হল প্রতীক্ষিত সেই ধুম থ্রী !
তবে পুরা মুভির ভিতরে নতুনত্ব ছিল আমীরের বাইক খানা ! এই বাইক একই সাথে মাটি এবং পানিতে চলতে সক্ষম ! শেষের দিকে আমি তো ভাবছিলাম বাইকটা উড়তেও পারবে ! যদিও একটু উড়ালও দিছিল !
আর নতুন কিছু পেলাম না !
গান গুলো মোটামুটি ভাল ছিল !
আমি ঠিক বুঝলাম না এই ছবি নাকি প্রথম দিনে ৩৬ কুটি রুমি আয় করেছে । এই কাহিনী নিয়ে একদিনে ৩৬ কুটি ?
যেমনি চেন্নাই এক্সপ্রেসের বেলাও ঠিক বুঝতে পারি নাই !
২০১৩ সালে সব মুভি গুলো দেখে এমুন হতাশ কেন হইতাছি !!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।