বরং এ সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘দীর্ঘমেয়াদি’ সমর্থন হিসাবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার বাংলাদেশে ইইউর দূত উইলিয়াম হানা বলেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করেছেন এবং যখন দেখেছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে, তখন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ‘কোনো প্রয়োজন’ তারা দেখতে পাননি।
“আমরা শেষ পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করেছি যাতে মানুষ না বলতে পারে যে আমরা পক্ষ নিয়েছি,” বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন তিনি।
শুক্রবার ব্রাসেলস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায়, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো ‘স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য’ নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন স্থগিত করেছেন।
উইলিয়াম হানা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কারো পক্ষ নেয়নি।
“আমাদের অবস্থান পরিবর্তনকে কোনো দলকে সমর্থন হিসেবে দেখা হোক তা আমরা চাই না। আবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণকে আরেক দলকে সমর্থন হিসেবে দেখা হোক তাও আমাদের চাওয়া নয়। এটা আসলে তা নয়।
“আমরা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে সমর্থন করি যেখানে মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আগামী সরকার নির্ধারণে ভোট দেবে। ”
একে বাংলাদেশের প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উইলিয়াম হানা বলেন, তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং “পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন, আলোচনা, সম্মতি এবং তারপর পর্যবেক্ষণ পাঠানো হয় আমাদের রাজধানীতে, যেখানে নেতারা বসে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেন। ”
তফসিল অনুযায়ী, ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বর্জনের কারণে একক প্রার্থী থাকায় ১৫৪টি আসনের ফল আগেই নির্ধারিত হয়ে গেছে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখে ভোট হবে ১৪৬টি আসনে।
এদিকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা বিএনপি ও শরিকরা তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ছুটির দিনগুলো ছাড়া প্রতিদিন সারা দেশে অবরোধ চালিয়ে আসছে।
সহিংসতায় এর মধ্যেই আশি জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের যাদের বেশিরভাগই আগুনে পুড়ে বা বোমা বিস্ফোরণে মারা গেছেন।
হানা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতার আলোকে তারা বোঝেন ‘স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য’ নির্বাচন বলতে কী বোঝায়। ”
তাদের কাছে ‘অংশগ্রহণমূলক’ বলতে জনগণের ভোট দেয়ার সুযোগ এবং ‘বিশ্বাসযোগ্য’ বলতে গ্রহণযোগ্য ও টেকসই নির্বাচনকে বোঝায়।
তবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে কি না সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান উইলিয়াম হানা।
তিনি বলেন, “এটা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
কল্পনা করে কোনো কিছু বলা যাবে না।
“তখন ভিন্ন পরিস্থিতি হবে। বিষয়টি বসে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে হবে। এখনই তা বলা যাবে না। ”
রাজনৈতিক অস্থিরতার নিরসনে আবারো ‘সংলাপ, সমঝোতা ও নিঃশর্ত আলোচনার’ জন্য উভয় পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান ইইউ রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, “শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা যদি মনে করেন নির্বাচনের আগে ঐক্যমতে আসা দরকার বা তাদের মধ্যে মতৈক্য হয় যাতে যতো দ্রুত সম্ভব সামনের দিকে এগোনোর পথ তৈরি হয় এবং জনজীবনের দুর্ভোগ ও অর্থনৈতিক ক্ষতি বন্ধ হয় তাহলে দারুন একটা ব্যাপার হবে বলে আমি মনে করি। ”
‘রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও সংবিধানের সঙ্গে মানানসই’ সমাধান হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের আশাবাদ ব্যক্ত করে হানা বলেন, “যথাযথ পরিবেশ তৈরি হলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ব্যাপক কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা প্রস্তুত থাকব। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।