আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বড়দিনের আয়োজন

নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, চকবাজার, গুলশান এলাকার বেশ কয়েকটি মার্কেটেও কেনাকাটার ধুম পড়েছে। বসুন্ধরা সিটি, রাপা প্লাজা, মেট্রো শপিং মল, ধানমন্ডির গিফট শপগুলোও বড়দিন উপলক্ষে জমে উঠেছে।
নিউমার্কেটের আরচিজ গিফট শপের বিক্রয়কর্মী শাহনেওয়াজ রশিদ বলেন, “শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়ার জন্য কার্ড আর চকলেটই বেশি পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, পুতুল, ডেকোরেশন পিস, ঘণ্টা, ছোট বল, মগ, ছবির ফ্রেম, চাবির রিং, ম্যাজিক বক্স, পার্টি স্প্রে, বেলুন বেশ চলে। ”
চকবাজারেও জমেছে বড়দিনের কেনাকাটা।

দোকানগুলোতে কৃত্রিম ফুল, তারা, পাটের দড়ি, ঘণ্টা ইত্যাদি নানান রকম ঘর এবং গাছ সাজানোর সামগ্রী খুচরা ও পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। বড়দিন জমকালো করতে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন আকার, রং ও আকৃতির মোমবাতি। কোনো কোনো দোকানে সুগন্ধি মোমবাতিও পাওয়া যাচ্ছে।

পাওয়া যাবে বিশেষ ধরনের কার্ড। এই কার্ডগুলোতে ইচ্ছে মতো নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা ভরে উপহার দেওয়া যায়।


চকবাজারে ক্রিসমাস-ট্রি’র সমাহার চোখে পড়ার মতো। এখানের দোকানগুলোতে পাওয়া যাবে ২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দামের ক্রিসমাস-ট্রি।
ছোট আকারের ক্রিসমাস-ট্রি ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। মাঝারি আকারের ক্রিসমাস-ট্রি ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। বড় আকারের ক্রিসমাস-ট্রি ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।


নিউমার্কেটের নিচতলার কৃত্রিম ফুলের দোকানগুলো থেকেও নিতে পারেন ক্রিসমাস-ট্রি। চকবাজার ও নিউমার্কেটে অর্ডার দিয়ে মনের মতো ক্রিসমাস-ট্রি বানিয়ে নিতে পারবেন।
ফার্মগেইটের ফার্মভিউ মার্কেটের দোকানগুলোতে পাওয়া যাবে গোশালা। এগুলোর দাম পড়বে ৬’শ থেকে ২ হাজার টাকা।


ক্রিসমাসে বুটিকগুলোর আয়োজন
দেশীয় বুটিক অঞ্জন’স বড়দিন উপলক্ষে লাল-সাদায় উপহার সামগ্রী তৈরি করেছে।

স্যান্টাক্লজ টুপি, গিফট বক্স, ব্যাগ, বড়দিনের মোমবাতিসহ শিশুকিশোরদের পোশাক, ক্রিসমাস র‌্যাপিং সবই থাকছে এ আয়োজনে। পাশাপাশি বড়দিনের অনুষ্ঠানে শিশুদের উপযোগী স্যান্টাক্লজ পোশাকও থাকছে। বর্ণিল এসব উপহার সামগ্রী পাওয়া যাবে ৫০ থেকে ১৫শ’ টাকার মধ্যে।
কে-ক্রাফট বড়দিন উপলক্ষে নতুন পোশাকের পসরা সাজিয়েছে। রয়েছে থ্রিপিস, শাড়ি, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, টপ্‌স ইত্যাদি।

এসব পোশাকের কাট্‌ ও স্টিচে রয়েছে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিক।
কাপড়েও থাকছে বৈচিত্র্য। কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে খাদি, সুতি এবং সিল্ক। খাদি কাপড়ের সঙ্গে সিল্ক কাপড়ের মিশ্রণ এনেছে ভিন্নতা। পোশাকগুলোর অলংকরণে ব্যবহৃত হয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, মেশিন এমব্রয়ডারি, হাতের কাজ, টাই এন্ড ডাই, কারচুপির কাজ ইত্যাদি।


ছেলেদের ফতুয়ার দাম ৪০০ থেকে ৬৭৫ টাকা। পাঞ্জাবি ৬৫০ থেকে ১,৪০০ টাকা। মেয়েদের টপ্স ৪৫০ থেকে ১,১৫০ টাকা। শাড়ি ১,২০০ থেকে ২,৭৭৫ টাকা। মেয়েদের পাঞ্জাবি ৪৫০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা।

সুতি শার্ট ৪০০ থেকে ৬৭৫ টাকা।
বড়দিনে চার্চগুলো
ক্রিসমাস সামনে রেখে রাজধানির গির্জাগুলোতেও যোগ হয়েছে উত্সবের নতুন মাত্রা। ঢাকার  লক্ষীবাজার, কাকরাইল, তেজগাঁওয়ের চার্চ নতুন সাজে সাজতে শুরু করেছে। রং-বেরংয়ের বাতিতে সজানোর কাজ চলছে এই চার্চগুলোতে।


দেশীয় কৃষ্টিতে বড়দিন
বড়দিন নিয়ে উইল’স লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা কুমকুম ডি ক্রুজ বলেন, “এই দিনটি তাত্পর্যপূর্ণ এই কারণে যে, শুধু মানুষকে পাপের বোঝা থেকে মুক্তি দিতে যীশুখ্রিস্ট মহামানব হয়েও জন্ম নিয়েছিলেন জীর্ণ গোশালায়।


তিনি আরও বলেন, “এই দিনটি উদযাপনের প্রায় ৪ সপ্তাহ আগ থেকে আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক ও পারিবারিকভাবেও নানান রকম প্রস্তুতি শুরু হয়। ১ সপ্তাহ আগ থেকেই মেয়েরা ঘরদোর ধোয়া-মোছা, আলপনা আঁকার সঙ্গে সঙ্গে কেক, পিঠা বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ”
কুমকুম আরও জানান, সবাই বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়স্বজনকে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠায়। প্রতিটি ঘর রঙিন বেলুন, ঝালর ও কাগজ দিয়ে সাজানো হয়। ঘরের কোণে স্থাপন করা হয় সুদৃশ্য বল, তারা, জরি দিয়ে সাজানো ক্রিসমাস-ট্রি।

অন্যকোণে রাখা হয় কৃত্রিম গোশালা।
কুমকুম বলেন, “গ্রামে দেখেছি ক্রিসমাসের আগ থেকেই ঝুড়িভর্তি চুড়ি নিয়ে বেদেনিরা ঘুরে বেড়ায়। মেয়েরা সেসব কিনে বড়দিনে পরার জন্য। ”
বড়দিনের আগের দিনকে বলা হয় প্রাক বড়দিন।
ক্রিসমাসে সবাই গির্জায় সমবেত হয়।

ফাদার এই মহান দিবসটির তাত্পর্য সবাইকে বুঝিয়ে বলেন।
বাড়ি ফিরে সবাই পাড়া প্রতিবেশির সঙ্গে হাত মেলায়। ছোটরা বড়দের সালাম করে, বড়রাও ছোটদের স্নেহ-চুম্বনে বুকে টেনে নেয়। তারপর শুরু হয় অতিথি আপ্যায়ন। এভাবেই শেষ হয় বড়দিনের উত্সব।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।