আগামী ২৯ ডিসেম্বর রোববার লাল- সবুজের জাতীয়
পতাকা হাতে রাজধানী ঢাকা অভিমুখে ডাক দিয়েছেন
বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া।
এ কর্মসূচিকে তিনি ‘মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসি’ আখ্যা দিয়ে ৫ জানুয়ারির
নির্বাচনী প্রহসনকে ‘না’ বলে দিতে ‘ঐতিহাসিক’ এই অভিযাত্রায় দল-মত-শ্রেণী-পেশা- ধর্ম-বর্ণ
নির্বিশেষে সবাইকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এ আহ্বান জানান। ঘোষিত এই কর্মসূচিতে বাধা দিলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। নির্দলীয় সরকারের
দাবিতে পঞ্চম দফায় টানা অবরোধ পালন শেষে ১৮ দলীয় জোটের অবস্থান তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন
বিএনপি চেয়ারপারসন।
জোটনেতাদের উপস্থিতিতে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি চলমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিরোধী দলকে বাদ
দিয়ে প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের কারণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গন
থেকে বাংলাদেশকে একঘরে করে ফেলা দলীয় জোটের সামনের দিনের আন্দোলন কর্মসূচির
বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য রাখেন।
২৯ ডিসেম্বরের
কর্মসূচি ঘোষণা করে খালেদা জিয়া ব ‘এই বিজয়ের মাসে লাল
পতাকা নিয়ে সবাই রাজধানী ঢাকায় আসুন। ঢাকায় এসেই সবাই নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমবেত হবেন। ’ ব্যবসায়ীসমাজ, সিভিলসমাজ, মা- বোন, ছাত্র-যুবক, কৃষক, আলেমসহ সবাইকে দলে দলে ঢাকায় আসার আহ্বান
জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘যে যেভাবে পারেন বাসে- লঞ্চে অন্যান্য
যানবাহনে ঢাকা আসুন। রাজধানী অভিমুখে জনস্রোতে শামি হোন।
’
জনতার অভিযাত্রায় বাধা না দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘যানবাহন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট বন্ধ করবেন না, গ্রেফতার-হয়রানি করবেন না। ’
কর্মসূচি পালনে সহায়তা করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
প্রতি আহ্বান জানান বিরোধীদলীয় নেতা।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহতের আহ্বান
জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রভিত্তিক সংগ্রাম কমিটিগুলোর পাশাপাশি দেশ ও গণতন্ত্র রার আন্দোলনরত সব পকে নিয়ে অবিলম্বে জেলা, উপজেলা ও শহরে সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রা সংগ্রাম কমিটি গঠন করে ৫
জানুয়ারি নির্বাচনী তামাশা প্রতি করুন। ’
দীর্ঘ বক্তব্যে আওয়ামী লীগের দেশ পরিচালনার
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনাও করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। বিরোধী দলবিহীন নির্বাচনকে ‘নির্লজ্জ সিলেকশন’ বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের অবসানে সমঝোতা না হওয়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘দুঃখের বিষয়, তিন
দফা আলোচনা সত্ত্বেও সরকারের অনড় মনোভাবের
কারণে কোনো সমঝোতায়
পৌঁছা সম্ভব হয়নি।
তারা সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপে নির্বাচন চায়নি। ’ দেশজুড়ে বিরোধী মতের সবার ওপর দমন-পীড়ন চলছে অভিযোগ করার পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া। বিরোধী দলের
আন্দোলনকে বিভ্রান্ত
করতে সরকারের মদদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চলছে অভিযোগ
করে তা প্রতিরোধে ‘গণপাহারা’ দেয়ার কথা বলেন
বিএনপি চেয়ারপারসন।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড
নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের প্রতিক্রিয়ায় তিনি মর্মাহত।
তবে এই
বিষয়টিকে কূটনীতিকভাবে পুঁজি ক নোংরা রাজনীতি করার
চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন বিরোধীদলীয় নেতা।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে সরকারের প্রতারণা জাতির ইতিহাসে কলঙ্ক হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, এ দেশের
প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে, ফলে আমরা বারবার সংলাপের কথা বলেছি। আমরা সমঝোতার উদ্যোগ নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকেও বলেছি। সরকারের অনড় মনোভাবের কারণে সংলাপ সফল হয়নি।
স্বৈরাচারী সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে উল্লেখ
করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ভয়ঙ্কর রাষ্ট্রীয়-সন্ত্রাসকবলিত দেশ। প্রতিদিন রক্ত ঝরছে। বিনাবিচারে নাগরিকদের জীবন কেড়ে নেয়া হচ্ছে। ঘরে ঘরে কান্নার রোল। শহরের
সীমানা ছাড়িয়ে নিভৃত পল্লীতেও ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।
সবার চোখে অনিশ্চয়তার ছায়া। নির্বিকার শুধু সরকার। তাদের লক্ষ্য একটাই, যেকোনো মূল্যে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখা। তাই
তারা ভিনদেশী হানাদারদের মতো ‘পোড়ামাটি নীতি’ অবলম্বন করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীকে ‘জেদ ও একগুঁয়েমি’ পরিহার করার আহ্বান
জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, এই নির্বাচনী তামাশা কোনো ইলেকশন নয়, এটা নির্লজ্জ সিলেকশন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।