কয়েদি নম্বর ৮২৭১/এ। জল্লাদ কামরুজ্জামান ওরফে ফারুক। স্ত্রীকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত হলে আদালত তাকে ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। ২০০১ সালের জানুয়ারি থেকে কারাভোগ করছেন ফারুক। কামরুজ্জামান তার স্বজনদের কাছে দাবি করেন, 'খুন না করেও খুনি আমি।
আমি এতটা পাষাণ ছিলাম না। তা-ই এখন হয়ে গেছি। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আমি আমার মনের জ্বালা মেটাচ্ছি। ' ইতোমধ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আবদুল কাদের মোল্লাকে সহকারী জল্লাদ হিসেবে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন।
জল্লাদ কামরুজ্জামানের বাবার নাম মৃত. শেখ নাদের হোসেন।
তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানির কুসুমদিয়ায়।
কামরুজ্জামান ফারুকের নিকটাত্দীয়রা জানিয়েছেন, তিন বছর প্রেম করে ১৯৯৩ সালের শুরুর দিকে একই গ্রামের ধলু শেখের মেয়ে লীলা বেগমকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন ফারুক। তখন তিনি জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার ছিলেন। আট-দশটি দম্পতির মতো আনন্দেই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন।
তারা আরও জানান, বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় লীলা বেগম তার বড় ভাই ফরিদ আহমেদ ওরফে সাদা সেন্টুকে সাড়ে আট লাখ টাকা ধার হিসেবে দিয়েছিলেন।
তবে কয়েক দফা তারিখ দিয়েও টাকা পরিশোধ করছিলেন না সাদা সেন্টু। ওই টাকা নিয়ে লীলা ও ফারুকের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এক রাতে লীলা সবার অগোচরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্দহত্যা করেন। ওই ঘটনায় ফরিদ আহমেদ বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গ্রেফতার হন ফারুক।
ফারুক-লীলা দম্পতির একমাত্র সন্তান স্বপ্নীল আহমেদ এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। কারা সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সহকারী জল্লাদ হিসেবে ফাঁসির রশিতে ঝোলানোর পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০ সালে বাকি সাজা মওকুফের জন্য রাষ্ট্রপতি বরবার আবেদন করেছিলেন জল্লাদ কামরুজ্জামান ফারুক। সূত্র আরও জানায়, প্রিয়তমা স্ত্রীর কথা মনে হলে মাঝেমধ্যেই ডুঁকরে কেঁদে উঠেন জল্লাদ কামরুজ্জামান ফারুক। চিৎকার করে বলতে থাকেন, 'খুন না করেও আমি খুনি'।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।