অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানতেই হল সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার বানিয়াগাতীতে পিকেটারের দেওয়া আগুনে অগ্নিদগ্ধ ট্রাকচালক শাহিন ও সহকারী মাজেদুল ইসলামকে। নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার বাঘাছড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে চালক শাহিন (৩০) বুধবার রাতে এবং একই জেলার দশ উল্লাসপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে সহকারী মাজেদুল ইসলাম (৩২) মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে মারা যান।
জানা গেছে, গত শনিবার অবরোধ চলাকালে তাদের চলন্ত ট্রাকে পেট্রোলবোমা ছোড়ে পিকেটাররা। জ্বলন্ত ট্রাক থেকে তারা কোন রকমে বের হতে পারলেও ছাড় দেয়নি অবরোধকারীরা। তারা শাহীন ও মাজেদুলকে ধরে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এতে চালক শাহিনের শরীরের ৭০ ভাগ ও মাজেদুলের ৯০ ভাগ পুড়ে যায়।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সবজি বোঝাই ট্রাক নিয়ে নওগাঁ থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে মহাসড়কের নলকা ব্রিজের পশ্চিম এলাকায় পৌঁছলে পিকেটাররা প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ট্রাকের সামনের গ্লাস ভেঙ্গে দেয়। এ অবস্থায় ব্রীজ অতিক্রম করার পর আবারও পিকেটাররা ট্রাকের কেবিনে পেট্টোল বোমা ছুড়ে মারে। এ সময় ট্রাকে দুই চালক আতাউর, শাহিন ও সহযোগী মাজেদুল ছিল। পেট্টোল বোমায় ট্রাকের কেবিনে আগুন ধরে যাওয়ায় চালক আতাউর রহমান অগ্নিদগ্ধ হয়।
এ অবস্থায় দ্রুতগামী ট্রাকটি বানিয়াগাঁতী এলাকায় গিয়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। এ সময় ট্রাকে থাকা তিনজনের মধ্যে চালক আতাউর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এবং শাহিন ও সহযোগী মাজেদুল অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসে। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। পিকেটাররা তিনজনকে ঘিরে ধরে অগ্নিদগ্ধ চালক আতাউরের কাথে থাকা ১১'শ টাকা ছিনিয়ে নেয়। দৌড়ে পালানোর সময় শাহিন ও মাজেদুলকে ধরে পিকেটাররা তাদের গায়ে পেট্টোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রথমে তাদের সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে তিনদিন পর মাজেদুল ও চারদিন পর শাহিন মারা যায়। আরেক চালক আতাউর রহমান সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুরে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ী চলে যায়।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আমিনুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর রবিবার সকালে ট্রাক মালিক মাসুদ রানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৭০/৮০জনকে আসামী করে একটি মামলা করেছেন।
মামলাটি এখন মার্ডার হিসেবে রূপান্তরিত হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।