আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রকৃত আলেম এবং ভণ্ড আলেম ও ধর্মব্যবসার ইতিকথা

জানি না কেন লিখি! তবু লিখি মনের খেয়ালে, পরিবর্তন করার মানসে, পরিবর্তিত হওয়ার মানসে। যদিও জানি সব ব্যর্থ হচ্ছে। তবুও আমি আছি সেদিনের সেই আলোকময় প্রত্যুষার আগমনের অপেক্ষায়

ধর্মব্যবসায়ীদের পরিচয়: আমাদের সমাজে লম্বা দাড়ি, টুপিওয়ালাদের আলেম হিসেবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও যারা মাদ্রাসায় দাখেল আলেম কিঙবা কামেল পাশ করে বের হয় তাহলে তাদেরকে আলেম কিঙবা কামেল বলে অভিহিত করা হয়। কিন্তু সত্যিকার অর্থে কি তারা আলেম? এই হিসেবে রসুলাল্লাহ এবং সাহাবাদের কে কোথায় কোন মাদ্রাসায় পড়ে আলেম হয়েছেন? তারা কোন মাদ্রাসায় না পড়লেও আল্লাহ তাদেরকে আলেম করে দিয়েছেন।

রসুলাল্লাহ বোলেছেন, আমার আসহাবগণ এক একজন উজ্জল তারার ন্যায়। তাদের যে কাউকে অনুসরণ করলে সুপথ পাওয়া যাবে। এখন যদি আল্লাহ আবার কাউকে এলেম দান করেন তাহলে তাতে অবাক হওয়া কিছু থাকে কি? না আলেম হতে গেলে মাদ্রাসায় পড়তেই হবে? কিন্তু আমরা এও জানি যে, এই উপমহাদেশে মাদ্রাসা তৈরি করেছে বৃটিশ খ্রিস্টানরা। তারা ১৭৬ বছর মাদ্রাসায় যে মাসলা মাসায়েল ও কুটতর্ক-বিতর্ক সমৃদ্ধ ইসলাম শিখিয়েছে বর্তমান নামধারী, টাইটেলওয়ালা, লম্বা দাড়ি, বড় বড় জোব্বার অধিকারীরা এদেরই বর্তমান প্রজন্ম। ইসলাম এই তথাকথিত টাইটেলধারী আলেমদের কপিরাইটসর্বস্ব পণ্য হয়ে যাওয়ায় মুসলিম জাতি আজ প্রকৃত ইসলাম বহু দূরে চলে গেছে।

এসময় সম্বন্ধে শেষ রসুলের একটি হাদিস নিম্নরূপ:

এমন সময় আসবে যখন- (১) ইসলাম শুধু নাম থাকবে, (২) কোর’আন শুধু অক্ষর থাকবে, (৩) মসজিদসমূহ জাঁকজমকপূর্ণ ও লোকে লোকারণ্য হবে কিন্তু সেখানে হেদায়াত থাকবে না, (৪) আমার উম্মাহর আলেমরা হবে আসমানের নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব, (৫) তাদের তৈরী ফেতনা তাদের ওপর পতিত হবে। [হযরত আলী (রা: থেকে বায়হাকী, মেশকাত]

يوشك أن يأتي على الناس زمان لا يبقى من الإسلام إلا اسمه ولا يبقى من القرآن إلا رسمه، مساجدهم عامرة وهي خراب من الهدى، علماؤهم شر من تحت أديم السماء، من عندهم تخرج الفتنة وفيهم تعود

Ali (ra) narrated that the Messenger of Allah (peace be upon him) said: ‘A time will come in the near future when there will be nothing left of Islam except its name. And there will be nothing left of the Qur’an except its words. Their mosques will be splendidly furnished and will apparently be full of people, but will be destitute of guidance. Their ulema (scholars) will be the worst creatures under the sky. Discord will rise from them and will come right back to them." [(Al-Bayhaqi, Meskat, The Last Day and Its Portents]

এই শ্রেণীটি জীবিকার জন্য ধর্ম বিক্রির উপর নির্ভরশীল। এরা মানুষের সম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ করে। নামাজ পড়িয়ে, কোরান খতম দিয়ে, মুর্দা দাফন করিয়ে, সুর করে ওয়াজ করে অর্থাত দীনের কাজ করে বিনিময় গ্রহণ করে।
এ ব্যাপারে কোরআন সতর্ক করছে:

১ নূহের (আ) এর ঘোষণা: হে আমার সম্প্রদায়! এর পরিবর্তে আমি তোমাদের নিকট ধন সম্পদ চাই না।

আমার পারিশ্রমিক আল্লাহর নিকট। [সুরা হুদ-২৯, সুরা শুআরা - ১০৯, সুরা ইউনুস - ৭২]

২ হুদের (আ) ঘোষণা: হে আমার সম্প্রদায়! আমি এর পরিবর্তে তোমাদের নিকট কোনো মজুরি চাই না। আমার পারিশ্রমিক তাঁরই নিকট যিনি আমাকে সৃষ্টি কোরেছেন। তোমরা কি তবুও বুঝতে চেষ্টা কোরবে না? [হুদ-৫১, সুরা শুআরা - ১২৭]

৩ সালেহ (আ) এর ঘোষণা: আমি তোমাদের নিকট এর জন্য কোনো পারিশ্রমিক চাই না। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রোয়েছে।

[শুয়ারা-১৪৫]

৪ লুতের (আ) ঘোষণা: এর জন্য আমি কোনো মজুরি চাইনা। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে। [শুয়ারা-১৬৪]

৫ শোয়েবের (আ) ঘোষণা: আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোনো মূল্য চাই না। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে। [শুয়ারা-১৮০]

৬ মোহাম্মদ (দ) এর প্রতি আল্লাহর হুকুম:

ক. এবং তুমি তাদের নিকট কোনো মজুরি দাবি কোর না।

এই বাণী তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ মাত্র। [ইউসুফ - ১০৪]

খ. বল! আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোনো পারিশ্রমিক চাই না। এবং যারা মিথ্যা দাবি করে আমি তাদের দলভুক্ত নই। [সাদ - ৮৬]

গ. তাদেরকেই (নবীদেরকেই) আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত কোরেছেন। সুতরাং তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর; বল! এর জন্য আমি তোমাদের কাছে কোনো মজুরি চাই না।

[আনআম - ৯০]

ঘ. বল! আমি এর বিনিময়ে তোমাদের কাছ থেকে প্রেম-ভালোবাসা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার ব্যতীত অন্য কোনো মজুরি চাই না। [শুরা - ২৩]

ঙ. আমি তাদেরকে দিয়েছি উপদেশ, কিন্তু তারা উপদেশে থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। অথবা তুমি কি তাদের নিকট কোনো প্রতিদান চাও? তোমার প্রতিপালকের প্রতিদানই তো শ্রেষ্ঠ এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রেযেকদাতা। [২৩: সুরা মো’মেনুন: ৭১-৭২]

চ. তবে কি তুমি উহাদের নিকট পারিশ্রমিক চাচ্ছো যা ওরা একটি দুর্বহ বোঝা মনে করে? [৫২: সুরা তুর: ৪০]

সুতরাং কোর’আনের ভাষ্যমতে দীনের, ধর্মের কোনো কাজ কোরে নবী ও রসুলরা যেমন পারিশ্রমিক গ্রহণ কোরতেন না, তেমনি তাঁদের উম্মাহর জন্যও পারিশ্রমিক গ্রহণ করা বৈধ নয়।

কিন্তু তারা কি আল্লাহকে ভয় করে সাবধান হবে? যাদের অস্থিমজ্জাসহ আগুন খেয়ে জাহান্নামের উপযুক্ত হয়ে গেছে তাদের কাছে কি ইসলাম শিক্ষা করবো আমরা? তাদের পোশাক আশাক দেখে? আল্লাহ বলেছেন, আমি মানুষের লেবাস দেখি না- দেখি তাদের অন্তর।

অতএব...


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।