প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, ‘ক্যায় হামাক এখ্যান কম্বল ড্যিবে। মুই এখ্যান কম্বলের জন্য কয়দিন চেয়ারম্যানের বাড়ীত গ্যাছনু। তাও মোক দ্যায় নাই। এল্যা পৌষ মাসী জারত থাকপার পাং না। ’ কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের সোনালুরকুটি গ্রামে জনসাধারনের জীবনদশা দেখতে গেলে আকালী ময়ী (৭২) উপরোক্ত কথাগুলো আক্ষেপের সাথে বলেন।
শুধু আকালী ময়ী নয় উপজেলার সর্বত্র একই চিত্র। অনেকের অভিযোগ সরকারী ভাবে যেসব কম্বল আসে তার বেশীর ভাগই বিতরন হয় মেম্বার- চেয়ারম্যানের আত্মীয়দের। গত ১০দিন ধরে তীব্র শৈত্য প্রবাহ ও হিমেল হাওয়ায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছে। হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতে শিশু ও বৃদ্ধ সহ সব বয়সের মানুষ কাবু হয়ে পড়েছে। গত ৩দিন থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত সূর্য্যরে মুখ দেখা যায়নি।
শীতের তীব্রতা এত বেশী যে ঘর থেকে মানুষের বের হওয়া দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা হিমশীতের কারণে স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। তিস্তা বাঁধ ও চরাঞ্চলের মানুষ খড়কুটো জড়ো করে আগুন লাগিয়ে দিয়ে ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেকে এক চিলতে গরম কাপড়ের জন্য ছুটছেন হাট- বাজারে। আগাম শৈত প্রবাহের খবর পেয়ে পুরাতন গরমের কাপড় ব্যবসায়ীরা বাজার কিংবা রাস্তার মোড়ে দোকান বসিয়েছে।
তবে এবারে দাম কিছুটা হাতের নাগালের বাইরে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। ব্যবসায়ীরাও স্বীকার করে বলেন দফায় দফায় হরতাল অবরোধের কারনে যানবাহন চলাচল না করতে পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া বেশ কয়েকজন কৃষক তাদের বোরো বীজতলায় ও আলুর ক্ষেতে কোল্ড ইনজুরির হাত থেকে রক্ষা পেতে শীত নিবারন ওষুধ ¯েপ্র করছেন। শৈত্য প্রবাহের ফলে গত ১০দিনে কমপক্ষে ৩ শতাধিক শিশু- বৃদ্ধ শীত জনিত শিশু ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি সহ নানান প্রকার রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র কর্মকর্তা ডাক্তার কৃষ্ণ কুমার পাল জানান। তবে কাউকে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
ঠান্ডায় মানুষ পশু সবাই জড়োসড়ো। হাড় কাঁপানো শীতে একটু উষ্ণতা পেতে মানুষ যেমন মরিয়া হয়ে উঠে তেমনি গবাদী পশু থেকে শুরু করে কুকুর-বিড়াল গুলো খুজছে উষ্ণতা। তাই গবাদী পশুর গায়ে উঠেছে চটের বস্তা। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী এমনকি পাখিগুলোও শীতে আক্রান্ত হয়ে ঝিমিয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশায় বোরা বীজতলা ও আলু কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
আলু,সরিষার সহ শীতকালীন শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। তবে উপজেলা কুষি কর্মকর্তা ষষ্টি চন্দ্র রায় জানান, এটি সাময়িক সমস্যা। দু’একদিনের মধ্যে শৈত প্রবাহ কেটে যেতে পারে। #
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।