আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্প- শূন্যস্থান পূরণ

তোমাকে নিয়ে ভাবতে ভাল লাগে তাই আড়াল থেকেই দেখি তোমাকে

মধ্যবিত্ত নাকি নিম্ন মধ্যবিত্ত? নিজেকে মধ্যবিত্ত পরিবারের ভাবতেই ভাল লাগে। নিম্ন মধ্যবিত্ত শুনতে একটু যেন কেমন শোনায়। মধ্যবিত্ত পরিবারের ভাল ছেলে গেল ভার্সিটিতে। কোথাও সুযোগ হয়নি বলে প্রাইভেট ভার্সিটি ছিল ভরসা। কিভাবে কিভাবে টাকার যোগান দেয়া হচ্ছিল পরিবার থেকে।

ভাবার দরকার মনে হয়নি কখনো। নিজেকে বুঝিয়ে রাখতাম আমি এখনো অতটা বড় তো হইনি। এসব বাবা ভাববেন। গেলাম ভার্সিটিতে। রঙ্গের মেলা চারদিকে।

ভালই তো লাগে দেখি দুনিয়াটা। নিজেকে কি আর একটু স্মার্ট করা দরকার? করতে হবে। না হলে ক্লাসের মেয়েরা যে পাশে এসে বসবে না। এবার ভাবতে হচ্ছে। টাকার ভাবনা পেয়ে বসল আমাকে।

টাকা চাই। অনেক টাকা। বাবা আর কত দিবে? এবার শুরু হল টিউশনি করা। ছাত্রীদের দিকে নজর দিবি না- এই কথা মেনে চলতাম। বলেছিল ক্লাসমেট।

সেই ছেলে নিজেই ছাত্রীর সাথে চুটিয়ে প্রেম করে বেড়ায়। সে যাই করুক, আমার কি। আমি ধীরে ধীরে স্মার্ট হচ্ছি। পোশাকে, কথা-বার্তায় নিজেকে পালটে নিচ্ছি প্রতিনিয়ত। এখন যে কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে পারি।

তারাও অতি আগ্রহ না দেখালেও অনাগ্রহ দেখায় না। একসময় চাহিদা বেড়ে গেল আমার। এখন শুধু কথা বলে যে আমার চলে না। বন্ধুদের মত গার্ল ফ্রেন্ড নামের একজন চাই। তাকে নিয়ে সুন্দর পরিবেশে খেয়ে বিল দেবার ক্ষমতা আমার আছে।

পেয়েও গেলাম। প্রেম করব কি? সারাখন তার কথা শুনতাম। সে ভাবত আমি তার ভালবাসায় ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি অসহ্য হতাম মাঝে মাঝে। এত কথা শুনতে ভাল লাগে না।

বলেছিলাম একবার, ফ্রেন্ড ছিলে সেটাই ভাল ছিল। একসময় নিয়মমত ব্রেকআপ হয়ে গেল। কিছুদিন শেভ করলাম না। ক্লাস মিস করলাম। এরপর পরীক্ষা পাশের চিন্তায় আবার নিয়মিত হলাম।

বাসা থেকে জানানো হচ্ছিল, লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করতে হবে। চাকরির বাজারের খবর কানে আসছে তখন। ভাবতাম, হয়ে যাবে। লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে ফেললাম। এবার চাকরি করতে হবে।

১০/১২ টা ইন্টারভিও দিয়ে একটা চাকরিও পেয়ে গেলাম। এবার নামা দরকার বউ খোজার জন্য। কিন্তু যাদের ভাবা দরকার তারা বলে আরও সময় যাক বাবা। নিজের পায়ে দাড়াও। অগত্যা নিয়ম করে ৯টা-৫টার জীবন কাটাই।

এরই মাঝে এক মেয়ে কলিগ মাঝে মাঝে সন্ধ্যায় ফোন দেয়। সন্ধ্যার ফোন একসময় রাত পর্যন্ত চলত। মাঝ রাত পেরিয়ে যায় একদিন। বয়স কম হল না। মাকে গিয়ে বললাম।

মায়ের মুখ গম্ভীর হয়ে আসে। মেয়ের বয়স বেশি। এমন মেয়ে চলবে না। পাগলামি করতে মন চাইল। কিন্তু সেই বয়স নাই আর।

তাই মেয়েটাকে বলে দিলাম, হবে না। কারন শুনে শুধু ঘৃণায় মুখটা বাকিয়ে চলে গেল। আকর্ষণ ছিল, কিন্তু ছেরে দিয়ে স্বাভাবিক হতে সময় লাগল না বেশি। মা গ্রাম থেকে মেয়ে খুজে আনলেন। এইচএসসি পাশ মেয়ে।

বিয়ে হয়ে গেল হুট করে। বিয়ের পর এই মেয়ে নুপুর পরে সারা ঘর যখন ঘুরে বেরাতে শুরু করল তখন বুঝলাম বাধা পরেছি। এটা থেকে আর ব্রেক আপ হবার নয়। সব শূন্যস্থান এবার পূরণ হবে হয়ত। থাকল কিছু অপূর্ণ।

ক্ষতি কি?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.