শিশু হোসেন (রাঃ) তাঁর নানার কোলে বসে খেলছিলেন। তাঁর নানা শিশুদের অত্যন্ত পছন্দ করতেন। তিনি তাদের বলতেন, "বেহেস্তের ফুল!"
খেলতে খেলতেই হঠাৎ হোসেন (রাঃ) নানাকে বললেন, "নানা, আমি তোমার চেয়ে বড়। "
নানা নাতির কথা শুনে হেসে বললেন, "তাই নাকি? কিভাবে?"
হোসেন (রাঃ) নিজের যুক্তি দাঁড়া করাতে বললেন, "তোমার পিতার নাম কী? আব্দুল্লাহ! কে ছিলেন তিনি? কেউ চেনে তাঁকে? কিন্তু আমার বাবার নাম হযরত আলী ইবন আবু তালিব! বালকদের মধ্যে প্রথম মুসলিম। ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বীর।
যাকে আল্লাহর সিংহ বলা হয়ে থাকে। তাহলে কী আমি তোমার চেয়ে বড় হলাম কিনা বল?"
নানা নাতির কথা শুনে মজা পেলেন।
"তোমার মা কে ছিলেন? আমিনা! কেউ চেনে তাঁকে? আমার মায়ের নাম ফাতিমা (রাঃ)! জান্নাতি নারীগণের নেত্রী। তাহলে বল, কে বড় হলো?"
নানা এবারেও হেসে দিলেন।
"তোমার নানা কে? ওয়াহব ইবন আব্দ মানাফ! কে ছিলেন উনি? কেউ চিনবে না।
আর আমার নানা কে তুমি জানো? যার উদ্দেশে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন স্বয়ং তাঁর পবিত্র কোরআনে বলেছেন, "আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমতরূপে প্রেরণ করেছি;" যার জন্য আসমান-জমিন সৃষ্টি হয়েছে, বেহেস্ত দোযখ সৃষ্টি হয়েছে, কেয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে আসা প্রতিটা মানুষের যিনি মুক্তির দিশারী, যুগে যুগে আসা লাখো নবী রাসূলগণের মাঝে সর্বশেষ নবী যিনি, তিনি হচ্ছেন হযরত মুহাম্মদ(সঃ)! এখন তুমিই বলো, আমি তোমার চেয়ে বড় হলাম তো?"
অনেক বছর আগে, এইরকমই এক বারই রবিউল আউয়াল তারিখে, আমি একদিন আমাদের সিলেটের পাড়ার মসজিদে বসে ছিলাম, যখন আমাদের ঈমাম সাহেব উপরের গল্পটি বলছিলেন। গল্পটি শুনতে শুনতে আমি যেন চোখের সামনে দেখতে পেলাম প্রিয় নবীজি হযরত মুহাম্মদ(সঃ) শিশু হযরত হোসেনের সাথে খেলছেন, এবং নাতির শিশুতোষ কথাবার্তায় মজা পেয়ে হাসছেন। পুরো শরীর জুড়ে একটা শিহরণ বয়ে গেল। একজন মানুষ, কতটা মহান হলে একটি বর্বর জাতিকে মাত্রই তেইশ বছরের ব্যবধানে বদলে দিতে পারেন! একজন মানুষ, কতটা মহান হলে, কোটি কোটি মানুষের আদর্শ মানব হতে পারেন! আমরা সিনেমায়, গল্পে সুপার হিরোদের কীর্তিকলাপ দেখে বাহ বাহ দেই। বাস্তব জীবনে তাঁর চেয়ে বড় সুপার হিরো আর কে আছেন?
কোথাও কোন ভাল গল্প শুনলে আমার ইচ্ছে করে গল্পাকারে লিখে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে।
আমি একা একাই কেন আনন্দ পাবো? এইবারও ইচ্ছে হলো তাঁর জীবনী লেখার। কিন্তু তাঁর জীবনী লেখা কী এতই সোজা? এতই জ্ঞানী হয়ে গেলাম আমি?
সেই থেকে এখনও সুযোগ পেলেই তাঁর জীবনী পড়তে বসি। তাঁর জীবনীর উপর আধারিত বিভিন্ন ডকুমেন্টারি দেখতে থাকি। ইচ্ছে আছে, জীবনে একবার তাঁর জীবনী লিখতে বসবো। সবাই তাঁর জীবনী লেখার মতন সৌভাগ্যবান হন না।
আমার ইচ্ছে আছে, সেই সৌভাগ্যবানদের অন্তর্গত হবার। বাকি আল্লাহর রহমতের উপর নির্ভর করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।