এক সময় বই ছিল আমার নিত্য সঙ্গী , অনেক রাত জেগে বালিশ নিয়ে উপুর হয়ে বই পড়তে পড়তে বুক ব্যাথা হয়ে যেত । পড়া শেষ হতো না । আজো বইয়ের কথা মনে হলে আমার বুকে ব্যাথা হয়, তাদের মলাটে ধুলোর আস্তর জমেছে বলে । বইয়ের পোকা থেকে এখন আমি ইন্টারনেটের পোকা ।
বাংলার ভূ-স্বর্গ পার্বত্য জেলা বান্দরবান।
এর ভেতরের ছোট্ট এক টুকরো স্বর্গের নাম হানজরাই পাড়া। বান্দরবানের গহীনে পাহাড়ি অরণ্য ঘেরা ছোট্ট একটা গ্রাম। গ্রামটা খুব একটা গোছানো তেমন বলা যাবে না। তবে খরস্রোতা রেমাক্রি খালের পাশে এ গ্রামটিকে স্বর্গ বললে যেনো একটু কমই বলা হয়। এখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ত্রিপুরাদের বসবাস।
দুই দিকেই উঁচু পাহাড় দ্বারা পরিবেষ্টিত। আর সামনে রেমাক্রি খাল, রেমাক্রি খালটাকে আমি নদী বলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। খালের উপারে আবারো উঁচু পাহাড়। আমি সঠিক বলতে পারছি না এই গ্রামের উচ্চতা, তবে অনুমান করি ১২০০ থেকে ১৫০০ ফুট উঁচুতে এই গ্রামটি। উচ্চতা কম হলে কি হবে, এই গ্রামে পৌছতে হলে আপনাকে টপকাতে হবে অনেক উঁচু উঁচু পাহাড়, মানে অনেকগুলো উঁচু পাহাড়ের মধ্যিখানে নীচু একটা গ্রাম।
এই গ্রামটিতে পৌছতে বান্দরবান থেকে তিন দিনের পথ। বগালেকের কাছাকাছি পর্যন্ত চান্দের গাড়িতে করে যাওয়া যাবে তারপর পুরোটাই পাহাড়ের চড়াই উৎরাই পেরিয়ে যেতে হবে এই গ্রামটিতে। এখান থেকে মাথা উঁচু করলে দেখা যায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চুড়া সাকা হাফং। আসুন আমার ক্যামেরায় দেখি এই সুন্দর গ্রামটিকে।
(২) নয়াচরণ পার হয়ে আমাদের টিম ক্রমান্বয়ে অনেক নিচের হানজরাই পাড়ার দিকে নেমে যাচ্ছে।
(৩) ওই তো রেমাক্রির ওপারের দেখা যায় কাঠ বাঁশের স্বর্গীয় কুড়েগুলো।
(৪) এক সময় আমরা নেমে এলাম রেমাক্রির বুকে, অসম্ভব পিচ্ছিল এই পাথর সঙ্কুল খরস্রোতা রেমাক্রিতে একটু অসতর্ক হলেই মহা বিপদ। তাই খুব সাবধানে এই খাল পারি দিতে হয়।
(৫) আমাদেরকে প্রথম যিনি স্বাগতম জানিয়েছেন, একজন ত্রিপুরা শিশু।
(৬/৭) আমাদের আগমনে গ্রামের লোকজন সবাই বেড়িয়ে আসতে থাকে।
(৮) একটি বাড়ির সামনে অনেকগুলো ত্রিপুরা শিশু আগুন পোহাচ্ছিল।
(৯) এই গ্রামে দাড়িয়ে খুব কাছেই দেখা যায় আকাশ ছোয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চুড়া সাকা হাফং, যদিও ওখানে চড়তে হলে আর প্রায় ২০০০ফিট পাহাড় আমাদেরকে ডিঙ্গাতে হবে।
(১০/১১) এক সময় আমরা হানজরাই পাড়াকে পিছনে ফেলে রেমাক্রি ধরে আরো এগিয়ে চললাম।
(১২) পেছন ফিরে হানজরাই পাড়ার আরো একটা ছবি..........
(১৩) খুবই ঝুঁকিপূর্ণ পথ ধরে আমরা এগিয়ে গেলাম।
(১৪) কখনো বা বিশাল বিশাল পাথরের মাধ্যিখান দিয়ে এগিয়ে চললাম, যেখানে আমরা ব্যগ নিয়ে আটকে পড়ছিলাম।
(১৫) এক সময় আমরা পথ ভুল করে হানজরাই পাড়া সংলগ্ল রেমাক্রি খালের এমন একটা পয়েন্টে এসে উপস্থিত হয়েছি যে আমরা সবাই বাকরুদ্ধ প্রায়।
(১৬) পথ যে ভুল করেছি সেটা আমরা ভুলে গেলাম, ঝাপ দিলাম এক স্বর্গের শীতল জলে, নিমেষে আমাদের তিন দিনের পথ ক্লান্তি রেমাক্রির জলের স্রোতের সাথে মিশে পাহাড়ের কোন বাঁকে হারালো কে জানে?
পরিশেষে পাহাড়ি সুন্দরী রেমাক্রির কানে কানে আমি শুধু একটা কথাই বলেছিলাম, আই লাভ ইউ রেমাক্রি। জবাবে সে খলবলিয়ে হেসে হেসে ছুটে চললো পাহাড়ের ঐ অজানে কোন বাঁকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।