আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Total Cost of Ownership (TCO) - মালিকানার পুরো দায়

জোর হোক শুধু গলার আওয়াজ, গায়ের জোরটা তোলাই থাকুক টোটাল কস্ট অফ ওনারশিপ বা সংক্ষেপে টিসিও। টিসিও মানে মালিকানার পুরো খরচ। উদ্যোক্তাদের ভাষায় এটাকে মালিকানার পুরো দায় বলছি। এই টার্মটির চল এদেশে শুরু হচ্ছে। এই হিসেবটা উদ্যোক্তাদের জন্য অত্যন্ত কাজের।

তাই নতুনদের জন্য একটু সহজ করে দেবার চেষ্টা করলাম। শুধু পেশাজীবী বা উদ্যোক্তা হিসেবেই না - আজকের চলনসই মানুষ হিসেবে, এই ধারনাটা পরিষ্কার থাকা দরকার। সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার প্রয়োজনে এর বিকল্প নেই। নিজে বোঝার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মকর্তাকে এভাবে সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহ দিতে হবে। কোন পণ্য/সেবা কিনে, বা ভাড়া নিয়ে, একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিজের আওতায় (মালিকানায়) রাখার পুরো খরচকে একসাথে বলে টিসিও।

যেকোনো খাতে মোট খরচ একসাথে দেখার জন্যই এই পদ্ধতি। মালিকানা মানে কোন একটি পণ্য বা সেবাকে ভোগের উপযোগী করা। সেটাকে নিজের আওতায় নিয়ে আসা এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেই নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা। মালিকানার ধরনে হতে পারে একক বা অংশীদারি। হতে পারে কেনা বা ভাড়া নেয়া।

তার জন্য খরচের ধরন হতে পারে- টাকা, জনশক্তি, সময়, জায়গা, ইত্যাদি। সেই খরচ হতে পারে- এক কালীন বা রিকারিং। আমরা এককালীন টাকা খরচের হিসেবটা সহজে করতে পারি। বাঁকিগুলো ঠিকমতো করা হয়ে ওঠে না । যে কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতি হয়।

একটি সামান্য কম্পিউটার হোক বা বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র হোক - যেকোনো বিষয় অধিকার করার আগে তার পুরো খরচ সম্পর্কে সঠিক হিসাব দরকার। ধরুন আমি ইন্টারনেট স্টোরেজের ব্যবসার পরিকল্পন করছি। ইন্টারনেটে ১০০টি কোম্পানির কাছে ১০ টেরাবাইট স্টোরেজ বিক্রি করতে চাই। এখানে আমার মূলত মালিকানা নেয়া দরকার ১০ টেরা বাইট পরিমাণ হার্ড ডিস্কের। সেখানে খরচের হিসেবটা কিভাবে হবে? যে খরচগুলো সহজে মাথায় আসবে তা হল, এককালীন ১০ টেরা হার্ড ডিস্ক কেনার খরচ + চ্যাসিজ + ইউপিএস।

হার্ডওয়ারের তিন বছরের ওয়ারেন্টি তো আছেই। মাসে মাসের বিদ্যুৎ বিল। এই তো ??? আসলে কি তা হয়?ওই খরচটুকু খরচ করলে স্টোরেজ কোন হবে ঠিকই। তবে ভোগ-উপযোগী হবে না। ভোগ-উপযোগী করার জন্য ন্যূনতম নিচের খরচগুলো করতে হবে।

- ওই জিনসগুলো রাখার জায়গার ভাড়া। - ওই জিনসগুলো সঠিকভাবে ইন্সটল-করার খরচ। - রেইজ ফ্লোরসহ ওই মেশিনটি সংরক্ষণ করার মত পরিবেশ তৈরির খরচ। - অতিরিক্ত বিদ্যুৎ অবকাঠামোর তৈরির খরচ। - অতিরিক্ত অগ্নি নির্বাপণ অবকাঠামোর খরচ।

- বাড়তি অবকাঠামো ও স্টোরেজ যে বাড়তি তাপ তৈরি করবে - তা ঠাণ্ডা করার খরচ। ইংরেজিতে যাকে বলে "কুলিং কষ্ট"। - এই হার্ডওয়ারকে ব্যাবহার করার জন্য - স্যান সুইচসহ অন্যান্য হার্ডওয়ারের খরচ, বিভিন্ন ধরনের সফটওয়ারের লাইসেন্স। - ওই জিনসগুলো সঠিকভাবে ইন্সটল হয়েছে - সেটা চেক করার খরচ। অডিট খরচ।

এছাড়া ওই স্টোরেজ যতদিন আমার আওতায় ভোগ যোগ্য রাখতে চাই, ততদিন নিচের খরচগুলোও লাগবে: - হার্ড ডিস্ক, চ্যাসিস, সংযুক্ত অবকাঠামোর বাৎসরিক রক্ষণাবেক্ষণ খরচ। - এর জন্য তৈরি প্রতিটি অবকাঠামোর বাড়তি রক্ষণাবেক্ষণ খরচ। - বীমা খরচের ইন্সটলমেন্ট। - এগুলো রক্ষণাবেক্ষণে আপনার নিজস্ব বাড়তি জনশক্তির খরচ। - পরের দুবছরের জন্য ইউপিএস এর ব্যাটারি বদলের খরচ।

কারণ ব্যাটারির এক বছরের বেশি ওয়ারেন্টি হবে না। পরবর্তী দু বছরে দুবারও কেনা লাগতে পারে। এই সবগুলো খরচ মিলিয়ে হবে ওই ১০ টেরাবাইট স্টোরেজের ৩ বছরের মালিকানার পুরো দায় (টিসিও)। বিনিয়োগের সময় এরকম পূর্ণ চিত্র না দেখতে পারলে বিনিয়োগ বিফল হবার সম্ভাবনাই বেশি। এ পর্যন্ত জানা বোঝা পরিষ্কার হলে গুগল এ টোটাল কস্ট অফ ওনারশিপ লিখে সার্চ দিন।

হিসেব করার নানা রকম থিওরি পাওয়া যাবে। কিছুটা পড়লে আপনি আপনার মত হিসেবে তৈরি করতে পারবেন আপনার উদ্যোক্তা জীবনের শুভ কামনায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.