আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্ধুত্ব ও কুমিরের লেজ বিসর্জন

একজন শব্দ শিকারি

এমন স্বার্থত্যাগী বন্ধুত্বের নজির বিশ্বের ইতিহাসে খুব বেশী নেই।

বলছিলাম বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বের কথা। বলছিলাম আমাদের টেষ্ট খেলার অধিকার হরণের অপচেষ্টার কথা।

তার আগে আমরা একটি গল্প পড়ি। গল্পটি আপনার আগেও পড়েছেন, তবুও আরেকবার পড়ুন।


-----------------
এক বনে ছিল এক কুমির ও এক শিয়াল। তাদের গলায় গলায় ভাব। বনের সবাই তাদের ভেতর এত দরহম মরহম দেখে আড় চোখে তাকায়।

একবার কুমির আর শিয়াল ভাবল চাষাবাদ করবে। কিসের চাষ করবে? আলুর চাষ।

আলু হয় মাটির নীচে। তার গাছ থাকে মাটির উপরে, তা দিয়ে কোনো কাজ হয় না। বোকা কুমির সে কথা জানতো না। সে ভাবলে বুঝি আলু তার গাছের ফল।

তাই সে শিয়ালকে ঠকাবার জন্য বললে, ‘গাছের আগার দিক কিন্ত আমার, আর গোড়ার দিক তোমার।



শুনে শিয়াল হেসে বললে, ‘আচ্ছা তাই হবে। ’

তারপর যখন আলু হল, কুমির তখন সব গাছের আগা কেটে তার বাড়িতে নিয়ে এল। এনে দেখে, তাতে একটিও আলু নেই। তখন সে মাঠে গিয়ে দেখল, শিয়াল মাটি খুঁড়ে সব আলু তুলে নিয়ে গেছে। কুমির ভাবলে, ‘তাই তো।

এবার বড্ড ঠকে গিয়েছি। আচ্ছা, আসছে বার দেখব!’

তার পরের বার হল ধানের চাষ। এবার কুমির মনে ভেবেছে, আর কিছুতেই ঠকতে যাবে না। তাই সে আগে থাকতেই শিয়ালকে বললে, ‘ভাই, এবারে কিন্ত আমি আগার দিক নেব না, এবার আমাকে গোড়ার দিক দিতে হবে। ’

শুনে শিয়াল হেসে বললে, ‘আচ্ছা তাই হবে!’

তারপর যখন ধান হল, শিয়াল ধানসুদ্ধ গাছের আগা কেটে নিয়ে গেল।

কুমির তো এবারে ভারি খুশি হয়ে আছে। ভেবেছে, মাটি খুঁড়ে সব ধান তুলে নেবে। ও কপাল! মাটি খুঁড়ে দেখে সেখানে কিছুই নেই। লাভের মধ্যে খড়গুলো পেলো।

তখন কুমির তো বড্ড চটেছে, আর বলছে, ‘দাঁড়াও শিয়ালের বাছা, তোমাকে দেখাচ্ছি; এবারে আর আমি তোমাকে আগা নিতে দেব না।

সব আগা আমি নিয়ে আসব। ’

সেবার হল আখের চাষ।

কুমির তো আগেই বলেছে, এবার আর সে

আগা না নিয়ে ছাড়বে না। কাজেই শিয়াল তাকে আগাগুলো দিয়ে নিজে আখগুলো নিয়ে ঘরে বসে মজা করে খেতে লাগল।

কুমির আখের আগা ঘরে এনে চিবিয়ে দেখলে, খালি নোন্তা, তাতে একটুও মিষ্টি নেই।

তখন সে রাগ করে আগাগুলো সব ফেলে দিয়ে শিয়ালকে বললে, ‘না ভাই, তোমার সঙ্গে আর আমি চাষ করতে যাব না, তুমি বড্ড ঠকাও!’

গল্পের কুমির শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল বুঝতে পারে এবং শিয়ালের সাথে সম্পর্কের ইস্তফা দেয়।
------------------------

চলে আসুন বাস্তবে। বাস্তবের শিয়াল অতি ধুরন্ধর। সে কুমিরের সাথে বন্ধুত্ব করেই ক্ষ্যান্ত দেয় নি বরঞ্চ সে কুমিরে মাথা কিনে নিয়েছে। মাথা কিনে নিয়েছে না বলে আমরা বলতে পারি ব্রেন ওয়াশ করে দিয়েছে।

গল্পের কুমির বুঝতে পারে যে শিয়াল তাকে ঠকাচ্ছে কিন্তু বাস্তবের কুমির ধরতেই পারেনা শিয়াল তাকে কেবল ঠকাচ্ছেই না বরঞ্চ তার ভবিষ্যৎকেও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

শিয়াল যা করে কুমিরের কাছে তাই সেরা সিদ্ধান্ত হিসেবে মনে হয় এবং মুখ বুঁজে তাতে সে সায় দিয়ে দেয়।

আচ্ছা বাস্তবের কুমিরের কি চোখ আছে? চোখ থাকলে সে নিশ্চয় দেখতো শিয়াল এসে তার লেজ কেটে নিচ্ছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।