আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাঈদীর পক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। গতকাল প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে ২৫তম দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ দিন আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান শুনানিতে অংশ নেন। এই পক্ষে আরও ছিলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সাইফুর রহমান, তারিকুল ইসলাম প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান।

শুনানি আজ আবার অনুষ্ঠিত হবে। আসামি পক্ষে যুক্তিতর্ক শুরুর দিনে গতকাল অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান বলেন, সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ২০টি অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ট্রাইব্যুনালের রায়ে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, যার দুটিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অ্যাডভোকেট শাহজাহান ষষ্ঠ অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এ অভিযোগে বলা হয়েছে ১৯৭১ সালের ৭ মে পিরোজপুরের পাড়েরহাট বাজারে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আসে এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী শান্তি কমিটির অন্য নেতাদের নিয়ে সেনাবাহিনীকে অভ্যর্থনা জানান। পরে সাঈদীর দেখানো মতে পাড়েরহাট বাজারে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও হিন্দুদের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে তারা আগুন দেয়।

এ বিষয়ে প্রসিকিউশনের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম, নবম, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। আইনজীবী শাহজাহান বলেন, প্রসিকিউশনের প্রথম সাক্ষী ওই অভিযোগের বিষয়ে বলেন- 'মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানি সেনারা পিরোজপুরে আসে। ৭ মে সকাল বেলা আমি নিজ বাড়িতেই ছিলাম এবং লোকমুখে শুনতে পাকিস্তানি সেনারা পাড়েরহাট আসছে এবং পাড়েরহাটের শান্তি কমিটির লোকেরা পাড়েরহাট রিকশাস্ট্যান্ডে তাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছে। আমি পাড়েরহাটে গিয়ে রিকশাস্ট্যান্ডের আড়ালে থেকে গোপনে লক্ষ্য করছি, পাড়েরহাটের শান্তি কমিটির লোকেরা দাঁড়িয়ে আছে। কিছু পরে একেকটি রিকশা করে ২৬টি রিকশায় ৫২ জন পাকিস্তানি সেনা রিকশাস্ট্যান্ডে নামে।

শান্তি কমিটির লোকেরা তাদের অভ্যর্থনা জানায়। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী উর্দু ভাষা ভালো জানতেন বলে ক্যাপ্টেন ইজাজের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বাজারের দিকে পাকিস্তানি সেনারা যেতে থাকে। শান্তি কমিটির লোকেরা বাজারের ভেতরের দিকে যায়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আওয়ামী লীগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের দোকানঘর, বসতঘর ক্যাপ্টেন ইজাজকে দেখিয়ে দেয়।

ক্যাপ্টেন ইজাজ লুটের নির্দেশ দেয়। লুটপাট শুরু হয়ে যায়। আমি অকুস্থল থেকে কিছু দূরে সরে যাই। পরে জানতে পারি ৩০ থেকে ৩১টি দোকান ঘরের মামামাল, বসতবাড়ি লুটপাট করে সাঈদী সাহেবের নেতৃত্বে ভাগবাটোয়ারা করে দেয়। '

আসামি পক্ষের আইনজীবী শাহজাহান বলেন, সাধারণত পাকিস্তানি সেনারা এলে সে এলাকায় একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো।

মানুষ জীবন নিয়ে পালাত। কিন্তু এই সাক্ষী বলছেন তিনি গুনেছেন তারা ২৬টি রিকশাযোগে এসেছে এবং প্রতি রিকশায় দুজন করে মোট ৫২ জন সেনা ছিল। ২৬টি রিকশা এবং ৫২ জন সেনা গণনা করা কি সম্ভব? এই সাক্ষীর এসএসসি রেজিস্ট্রেশন ফরমে জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ২০.০৩.১৯৫৯। এ হিসেবে ১৯৭১ সালের ২০ মার্চ তার বয়স ছিল ১২ বছর। এ বয়সের একটি ছেলের পক্ষে সেখানে অবস্থান করে ওই ঘটনা দেখা, রিকশা ও সেনাসংখ্যা গণনা করা কি সম্ভব?

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.