আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভূতের ইশকুল

লেবু মামা বাসায় এলেই রিংকুর আনন্দ আর ধরে না। খুশিতে লাফিয়ে ওঠে। প্রতিবারই লেবু মামার কাছে রিংকুর একটাই বায়না থাকে। তা হলো- ভূতের গল্প শোনার। রিংকুর লেবু মামা গ্রামে থাকে।

মাঝেমধ্যে রিংকুদের শহরের বাড়িতে বেড়াতে আসে। লেবু মামা অনেক ভূতের গল্প জানেন। গল্প শুনতে শুনতে রিংকু মাঝেমধ্যে ভাবে মামার সঙ্গে নিশ্চয় অনেক ভূতের পরিচয় আছে। রিংকু সানডে স্কুলে ক্লাস টুতে পড়ে। তিন ভাইবোনের মধ্যে রিংকুই সবার ছোট।

ছোট হিসেবে ওর অনেক বায়না থাকার কথা। কিন্তু ওর বায়না একটাই, আর তা হলো ভূতের গল্প শোনাতে হবে। তাই লেবু মামা যেদিনই বেড়াতে আসে রিংকু বায়না থাকে- ভূতের গল্প শোনাবে। আজ মজার মজার ভূতের গল্প শুনতে পারবে। কিন্তু মামার ওপর একটু রাগও হয় রিংকুর।

কারণ সন্ধ্যা না হলে মামা ভূতের গল্প বলতে চায় না। সন্ধ্যার আগে নাকি ভূতের গল্প জমে না। মামার যত ঢং! রিংকু ভাবে। অনেক অসহ্য অপেক্ষার পর সন্ধ্যা নামে। রিংকু দৌড়ে ড্রইং রুমে চলে যায়।

বড় বোন রিয়া এবং ভাই টিংকুও এসে বসে। রিংকু ওর বড় আপুর পাশে বসে। মামা গল্প শুরু করে। 'এক যে ছিল ভূত। নাম তার হামদো।

হামদো ভূত হলো ভূতদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ভূত। সবাই তন্ময় হয়ে গল্প শুনছে। আর ওদিকে, রিংকু ঘুমিয়ে পড়েছে। লেবু মামার গল্প চলতে থাকে।

২.

রিংকু ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে।

ভূতের দেশে চলে

এসেছে। ভূতের দেশে এসে অবাক হয় রিংকু। গাছপালা সব নীল রঙের আর আকাশ সবুজ রঙের। হাঁটতে হাঁটতে রিংকু এক বনের কাছে এসে দাঁড়ায়। এমন সময় জঙ্গল ফুঁড়ে এক ভূত হাজির হয়।

সাদা রঙের ভূত। প্রথমে একটু ভয় পেলেও ভূতের নরম হাসিতে ওর ভয় দূর হয়ে যায়। অভয় দিয়ে ভূত বলে, 'রিংকু ভয় পেও না, আমি হামদো ভূত। আমি একটা ভূতের ইশকুল খুলেছি। চলো, তোমাকে নিয়ে যাই সেখানে।

দেখবে আমার স্কুল কেমন?' বলেই হামদো ভূত রিংকুর মাথায় হাত রাখে। কেমন যেন অনুভব হয় রিংকুর। নিজেকে খুব হালকা লাগছে। হামদো ভূতের পেছন পেছন বাতাসে উড়ে উড়ে বনের ভেতর যেতে থাকে। বনের মাঝামাঝি এসে অবাক হয় রিংকু।

বনের ঠিক মধ্যে ডিম্বাকৃতির বিশাল মাঠ। মাঝখানে সারি সারি কালো কালো খুঁটি পোতা। প্রতিটি খুঁটির ওপর একটা করে ভূতের বাচ্চা বসে আছে। হামদো ভূত বলল, রিংকু, এটিই হলো ভূতের ইশকুল। মানুষরা যেমন স্কুলে পড়াশোনা করে অনেক বড় হয়, মানুষের মতো মানুষ হয়; তেমনি ভূতের বাচ্চাগুলোও অনেক বড় হয়ে ভূতের মতো ভূত হবে।

রিংকু এবার সাহস করে বলল, আচ্ছা হামদো ভূত, ওদের টিচার কে? মানে ওদের পড়ায় কে? হামদো ভূত মুচকি হাসতে লাগল। বলল, আরে বোকা, আমিই তো ওদের টিচার। এবার হামদো ভূতের বাচ্চাগুলোকে কাছে ডাকল। ওরা সব বাতাসে উড়তে উড়তে রিংকু আর হামদো ভূতকে ঘিরে ধরল। রিংকু একটু ভয় পেল মনে হলো।

কিন্তু হামদো ভূত রিংকুকে অভয় দিয়ে বলল, আরে ভয় পেও না। ওরা আমার ভূতের ইশকুলের ক্লাস টুর ছাত্র। রিংকু বলল, আমিও তো ক্লাস টু-তে পড়ি। হামদো ভূত এবার হেসে ফেলল। তাহলে তো ভালোই হলো।

ওরা তা হলে তোমার ক্লাসমেট মানে সহপাঠী হয়ে গেল। তুমি ওদের সঙ্গে খেল আমি একটু ও দিকটা ঘুরে আসি।

 

৩.

হামদো ভূত চলে যায়। এবার রিংকুর নতুন ক্লাসমেট ভূতের বাচ্চাগুলো রিংকুকে ঘিরে ধরে। ওরা রিংকুকে ওদের সঙ্গে খেলতে বলে।

খেলার নাম হলো মাটিতে ছোঁয়া। একটা বড় সাতরঙা বল আকাশ থেকে ছুটে আসবে। বলটাকে ধরে মাটিতে ছোঁয়াতে হবে। তাতে এক পয়েন্ট হবে। যতবার ছোঁয়ানো যাবে তত পয়েন্ট হবে।

কিন্তু কাজটি অত সহজ নয়। কারণ বলটি হাত থেকে ফসকে বের হলে এদিক ওদিক চলে যাবে। খেলা শুরু হলো, হঠাৎ কোথা থেকে একটা বড় সাইজের সাতরঙা বল ছুটে এলো। মামা, বড় আপু, আর ভাইয়া তখন মুচকি মুচকি হাসছে।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।