www.facebook.com/dx.taj
মহিলারা ঘরে নামায পড়া উত্তম না মাসজিদে নামায পড়া উত্তম?
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
পূর্বেই যেনেছি যে মহিলাদের জন্য জামাতে উপস্থিত হওয়া দায়িত্ব নয় । মহিলারা মসজিদের জামাতে উপস্থিত না হলে কোন গুনাহ্ নেই । বরং নবী(সঃ) তাদেরকে মাসজিদে নববী ছেড়ে নিজের অন্দরমহলের ভিতরে নামায আদায় করতে বলেছেন। আসুন নিচের হাদিসগুলো কি বলে দেখি।
১ নং হাদিস
~~~~~~~~
হযরত উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : মহিলাদের উত্তম মসজিদ হলো তাদের অন্দর মহলের গোপন স্থান ।
[ মুসনাদে আহমদ, খ.১৮, পৃ.২৫৫, হাদিস নং- ২৬৪২১ ]
২ নং হাদিস
~~~~~~~~
হযরত উম্মে সালামা রা. থেকে বর্নিত , রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : মহিলাদের অন্দর মহলের নামায বাহির ঘরের নামাযের চাইতে উত্তম, বাহির ঘরের নামায আঙ্গিনার নামাযের চাইতে উত্তম এবং আঙ্গিনার নামায মহল্লার মসজিদের নামাযের চাইতে উত্তম। [ আল- মুজামুল আওছান , খ.১৯, পৃ.৪৩৪, হাদিস নং- ১১১৫৫ ]
৩নং হাদিস
~~~~~~~~
আবূ হুমাইদ সায়িদী রা. এর স্ত্রী উম্মে হুমাইদ রা. থেকে বর্নিত ,রসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেছেনঃ অবশ্যই আমি জানি যে, তুমি আমার সাথে নামায আদায় করতে পছন্দ কর। অথচ তোমার অন্দর মহলের নামায বাহির ঘরের নামাযের চাইতে উত্তম। বাহির ঘরের নামায আঙ্গিনার নামাযের চাইতে উত্তম। আঙ্গিনার নামায মহল্লার মসজিদের নামাজের চাইতে উত্তম।
[ সহীহ ইবনে খুজাইমা, খ.২ , পৃ. ৮১৫, হাদিস নং- ১৬৮৯]
সুতরাং ১ , ২ , ৩ নং হাদীস দ্বারা রসূলুল্লাহ (সঃ) এর এরশাদ মোবারক প্রতিয়মান হয় যে , মহিলাদের অন্দর মহলের নামায বাহির ঘরের নামাযের চাইতে উত্তম, বাহির ঘরের নামায আঙ্গিনার নামাযের চাইতে উত্তম, আঙ্গিনার নামায মহল্লার মসজিদের নামাযের চাইতে উত্তম , মহল্লার মসজিদের নামায মাসজিদে নববী (সঃ) এর নামাযের চাইতে উত্তম। সুতরাং এর মধ্যে কোন প্রকার সংশয় বাকি থাকে না যে, মহিলাদের জামাতে এবং মাসজিদে নববীতে উপস্হিতি মোস্তাহাব ও ফযীলতের কারনে ছিলনা বরং শুধুমাত্র জায়েজ ও বৈধতার ভিত্তিতে ছিল।
৪নং হাদিস
~~~~~~~~
আল্লামা হাইসামী র. হাদিসটিকে " মাজমাউয যাওয়ায়েদ " এ উদৃত করেছেন , সেখানে এ টুকু অতিরিক্ত আছে যে, উম্মে হুমাইদ রা. রসূলুল্লাহ (সঃ) এর থেকে এ কথা শুনে পরিবারের লোকদের আদেশ দিয়ে তার জন্য ঘরের অন্দর মহলের অন্ধকারাচ্ছন্ন নিরিবিলি কামরায় নামাযের স্থান বানিয়ে নিলেন। অতঃপর তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সেখানেই নামায পড়তে থাকেন ।
হাফিজ আল্লামা হাইসামী র. বলেন : এ হাদিসের বর্ননাকারীগন প্রত্যেকেই সহীহ বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনাকারী , আব্দুল্লাহ বিন সুয়াইদ আনছারী ব্যাতিত।
তবে ইবনে হিব্বান তাকে " নির্ভরযোগ্য " বলেছেন। [ সহীহ ইবনে খুজাইমা, খ.২ , পৃ.৮১৫, হাদিস নং- ১৬৮৯ ]
হাফিজ হাইসামী এই হাদীসটিতে যে অতিরিক্ত অংশটুকু বর্ননা করেছেন তার দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে , উম্মে হুমাইদ রা. রসূলুল্লাহ ( সঃ) এর তা'লীম ও তারগীবের উপর আমল করে মৃত্যু পর্যন্ত নিজের অন্দর মহলে নামায আদায় করেছেন । যা ছিল রসূলুল্লাহ (সঃ) এর এরশাদ মোবারকের সঠিক অনুসরন ও তার চাহিদা অনুযায়ী আমল।
৫নং হাদিস
~~~~~~~~
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত , রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন : মহিলাদের অন্দর মহলের নামায বাহির ঘরের নামায থেকে উত্তম এবং অন্দর মহলের ভেতরের গোপন বা নির্জন ঘরের নামায অন্দর মহলের নামায থেকে উত্তম । [ আবু দাউদ, খ.১ ,পৃ.৮৪, হাদীস নং- ৫৭০, সহীহ্ ইবনে খুজাইমা, খ.২ , পৃ.৮১৪, হাদীস নং- ১৬৮৮, ১৬৭০, মুস্তাদরাক হাকিম, খ.১ ,পৃ.৩৩৯, হাদীস নং- ৮৮৬ ]
৬নং হাদিস
~~~~~~~~
হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন :
মহিলাদের অন্দর মহলের নামায বাহির ঘরের নামায থেকে উত্তম।
বাহির ঘরের নামায আঙ্গিনার নামায থেকে উত্তম।
অতঃপর তিনি বলেন : মহিলারা যখনই বের হয় শয়তান তাদের উপর কুদৃষ্টি দেয়। আল্লামা তাবরানী হাদীসটিকে " আল-মু'জামুল কাবীরে " বর্ননা করেছেন এবং এর বর্ণনাকারী সহীহ বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনাকারী।
[ আল-মু'জামুল কাবীর, খ.৪ , পৃ. ৫৮৭, হাদীস নং- ৯৩৭০,৯৩৬৯, মাজউয যাওয়ায়েদ, খ.২ , পৃ.১৫৫, হাদীস নং- ২১০৯ ]
৭নং হাদীস
~~~~~~~~
ইবনে মাসউদ রাঃ থেকে বর্নিত, তিনি কসম খেতেন এবং দৃঢ় ভাবে কসম খেতেন যে , মহিলাদের জন্য তার অন্দর মহল থেকে উত্তম কোন নামাযের স্থান নেই। তবে দুই ধরনের মহিলা ব্যতিত : ১. হজ্ব এবং ওমরায় গমন কারিনী ।
২. ঐ মহিলা যে তার স্বামী থেকে নৈরাশ হয়ে গিয়েছে এবং নিজে এই পরিমান বৃদ্ধা হয়ে যাওয়া যে , অতিরিক্ত দূর্বলতার কারনে কাছে কাছে পা পড়ে । আল্লামা তাবরানী রহ. "আল-মু'জামুল কাবীরে " হাদীসটি বর্ননা করেছেন , এর প্রত্যেকটি বর্ননাকারী নির্ভরযোগ্য ।
[ আল-মু'জামুল কাবীর ,খ. ৪ , পৃ. ৫৮৬, হাদীস নং- ৯৩৬১,৯৩৬২ ]
৮ নং হাদীস
~~~~~~~~
ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্নিত যে, মহিলাদের কোনো নামায আল্লাহ তায়ালার নিকট ঐ নামাযের চাইতে বেশি পছন্দনীয় নয়, যে নামায সে তার অন্ধকার নির্জন কামরায় আদায় করে থাকে । হাদীসটির প্রত্যেকটি বর্ননাকারী নির্ভরযোগ্য।
[ আল-মু'জামুল কাবীর, খ.৪ ,পৃ.৫৮৬, হাদীস নং- ৯৩৬০]
৯ নং হাদীস
~~~~~~~~
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্নিত , রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ মহিলারা আপাদমস্তক পর্দায় থাকার বস্তু।
যখনই সে ( ঘর হতে) বের হয় শয়তান তার উপর কুদৃষ্টি দিতে থাকে। নিঃসন্দেহে তখন সে আল্লাহ পাকের অতি নিকটবর্তী থাকে যখন সে অন্দর মহলে থাকে । আল্লামা তাবরানী হাদীসটিকে নির্ভরযোগ্য বর্ননাকারী থেকে বর্ননা করেছেন ।
[ আল - মুজামুল কাবীর , খ.৪ , পৃ.৫৮৭, হাদীস নং- ৯৩৬৮]
এই হাদীস দ্বারা এ কথা স্পষ্ট প্রমানিত হয় যে , রসূলুল্লাহ (সঃ) মহিলাদের ঘর থেকে বের হওয়াকে তাদের জন্য ফিতনার সুযোগ আখ্যায়িত করেছেন । আর নিজ ঘরে থাকাকে আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জনের উসীলা বলেছেন ।
এ কারনেই ৭ ,৮ নং হাদিসে হযরত ইবনে মাসউদ রা. অতিশয়োক্তির সাথে কসম খেয়ে বলেছেনঃ মহিলাদের প্রত্যেক নামাযই তাদের ঘরের অন্দর মহলে পড়া উত্তম ।
১০ নং হাদীস
~~~~~~~~
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্নিত , তিনি বলেনঃ মহিলারা আপাদমস্তক পর্দায় থাকার বস্তু। নিঃসন্দেহে মহিলারা নির্দোষ অবস্থায় ঘর থেকে বের হয়, অতঃপর শয়তান তার প্রতি কুদৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলেঃ তুমি যার সামনে দিয়েই অতিক্রম করবে তার কাছেই তুমি পছন্দনীয় হবে। অথচ মহিলারা যখন (ঘর থেকে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে) কাপড় পরিধান করে তখন পরিবারের লোকজন জিঙ্গাসা করেঃ কোথায় যেতে চাইছ? তখন সে বলে : কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাচ্ছি, অথবা মাইয়্যেতের (মৃত ব্যক্তির) জানাযায় যাচ্ছি , অথবা মাসজিদে নামায পড়তে যাচ্ছি। বস্তুতঃ মহিলাদের অন্দর মহলের ইবাদতের চাইতে কোন ইবাদতই উত্তম নয়।
আল্লামা তাবরানী হাদীসটিকে নির্ভরযোগ্য বর্ননাকারী দ্বারা বর্ননা করেছেন।
[ আল-মুজামুল কাবীর, খ.৪ ,পৃ.৫৮৭, হাদীস নং- ৯৩৬৭ ]
চরম আফসোস ঐ সকল লোকদের প্রতি যারা মহিলাদেরকে মসজিদের দিকে আহব্বান করে এবং জামাতে উপস্হিতর উৎসাহ প্রদান করে, রসূলুল্লাহ (সঃ) এর তা'লীম ও চাহিদার বিপরীত শিক্ষা দেয়। আশ্চর্যের বিষয় হল তারা এটাকে আবার সুন্নাত মনে করে এবং নিজেদের এ কাজকে " সুন্নাতের জীবন দান " বলে থাকে।
যদি মহিলাদের উপস্হিত হওয়া সুন্নাতই হতো, তবে কেন রসূলুল্লাহ ( সঃ) নিজের মসজিদের নামাযের চাইতে মহল্লার মসজিদের নামাযকে এবং মহল্লার মসজিদের নামাযের চাইতে ঘরের নামাযকে উত্তম বলেছেন। তা না হলে তো এ অবস্থায় মহিলাদের একাকি ঘরে নামায পড়াটা তরকে সুন্নাতের ( সুন্নাত ছেড়ে দেয়ার) শামিল হতো।
তবে কি সুন্নাতের উপর আমল করার তুলনায় সুন্নাত ছেড়ে দেয়ার মধ্যে সাওয়াব বেশী ??? রসূলুল্লাহ (সঃ) ঘরে নামায পড়ার প্রতি উৎসাহ দিয়ে কি স্বয়ং সুন্নাত ছেড়ে দেওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করলেন ???
তাই প্রশ্ন জাগে এই সকল লোকেরা কি নিজেদেরকে রসূলুল্লাহ (সঃ) এর চেয়েও বেশি সন্মানীত এবং নিজেদের মসজিদ সমূহকে রসূলুল্লাহ (সঃ) এর মসজিদ থেকে উত্তম মনে করে ???
উল্লেখ্য যে , হযরত আনাস রা. এর বর্ননা অনুযায়ী পাওয়া যায় " মাসজিদে নববী ( সঃ) এর এক নামাযে ৫০ হাজার নামাযের সওয়াব পাওয়া যায়। "
[ বুখারী, খ.১ , পৃ. ১৫৯, হাদীস নং- ১১৯০ , মুসলিম, খ.১ , পৃ.৪৪৬ , হাদীস নং- ৮২৭ এ ১০০০ ( এক হাজার) নামাযের সওয়াব পাওয়া যায় বলে উল্লেখ আছে। ]
সামনে আসছে → মহিলাদের জামাতে উপস্থিত হওয়ার অনুমিত এখনো বাকী আছে কি ???
-------- মীর মোশারফ হুসাইন
আল্লাহ তায়ালা সকলকে হেদায়েত দান করুন । বিতর্ক নয় আল্লাহ তায়ালাকে সন্তষ্ট করার নিয়তে পড়ার তৌফিক দান করুন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।