আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আফসোসটা থেকেই গেল

টি-২০ সিরিজ শুরুর আগে থেকেই পিছু হাঁটছিল বিতর্ক। তামিম ইকবালের সহ অধিনায়কের পদ ছেড়ে দেওয়ায় যে বিতর্কের জন্ম, সেটাকে ধামাচাপা দিতে নানামুখী প্রচেষ্টা ছিল বিসিবির। তামিমকে খেলিয়ে কোনোরকমে সামাল দিয়েছে সেটা। কিন্তু একাদশে তিন পেসার রেখে আবারও চাঙ্গা করেছে বিতর্ক। শ্রীলঙ্কা যে ৭ উইকেট হারিয়েছে, তার চারটিই দুই বাঁ হাতি স্পিনারের এবং বাকি দুটি অভিষিক্ত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে ৭ রান দিলেও তিলকারত্নে দিলশানকে বোল্ড করেন মাশরাফি। প্রথম ওভারের শেষ বলে উইকেট হারানোর পর কৌশল্য সিলভা ও অধিনায়ক দিনেশ চন্ডিমল চড়াও হন স্বাগতিক বোলারদের উপর। এর মধ্যে ইনিংসের চতুর্থ ও সোহাগ গাজীর দ্বিতীয় ওভারে টানা চার চারে ১৮ রান তুলে নেন কুশল পেরেরা। এতে প্রথম পাঁচ ওভারে শ্রীলঙ্কার স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৫৬ রান। সপ্তম ওভারে সাকিব এবং অষ্টম ওভারে রুবেল হোসেন আসার পর রানের গতিতে ভাটা পড়ে দ্বীপরাষ্ট্রের।

'ক্রৌড়পতি' সাকিব প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ফেরান ক্রমশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠা চন্ডিমলকে। সাকিবকে লং অন দিয়ে সীমানার বাইরে ফেলতে যেয়ে ফরহাদ রেজার দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন চন্ডিমল। চন্ডিমলের বিদায়ের পরপরই সাঙ্গাকারাকে রান আউটের সুযোগ পেয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু মাশরাফির থ্রো উইকেটে না লেগে বাউন্ডারির দড়ি পার হয়। অবশ্য নিজের দ্বিতীয় ওভারেই নাসির হোসেনের শুন্যে ভাসানো ক্যাচে 'রেকর্ডম্যান' সাঙ্গাকারাকে সাজঘরে ফেরান সাকিব।

তার এই ক্যাচ সঙ্গে সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেয় বিশ্বসেরা ফিল্ডার জন্টি রোডসকে। ১৯৮৭ সালে নেহেরু কাপের সেমিফাইনালে রোডস এমনই ক্যাচ ধরেছিলেন ডেসমন্ড হাইন্সের। ক্যাচটির পর বেশ কিছু সময় উইকেটে দাঁড়িয়েছিলেন বিস্মিত সাঙ্গাকারা। দশম ওভারে বোলিংয়ে আসেন আরাফাত। ১৫ বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফর্ম করা আরাফাত নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন লঙ্কান শিবিরে।

ওয়াইডিস মিড উইকেটে স্লগ শটস খেলেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান প্রসন্ন সিলভা। নাসির হোসেন মিড উইকেট থেকে স্কয়ার লেগে দৌড়ে ক্যাচ নেন নাসির। প্রসন্নকে সাজঘরে ফেরানোর পরই মাশরাফিবাহিনী চেপে বসে লঙ্কানদের উপর। নিজের তৃতীয় ওভারে আবারও আঘাত হানেন আরাফাত। এবার দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন এনামুল হক বিজয়।

প্রথম স্পেলে তিন ওভারে ১৭ রানে নেন ২ উইকেট। অভিষেক ম্যাচে এর চেয়ে ভালো বোলিং ছিল আরেক বাঁ হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক রাজের। ২০০৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪ ওভারে ১৭ রানে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। এক ওভার থাকার পরও আরাফাতের স্পেল শেষ না করায় বিস্ময়ের জন্ম দেন মাশরাফি। ১০.৭৫ ইকোনোমি রেট থাকার পরও তিনি বোলিং করেছেন পুরো চার ওভার।

বাকি দুই পেসারের মধ্যে রুবেল হোসেন ৪ ওভারে ২৭ এবং ফরহাদ রেজা ২ ওভারে দেন ১৮ রান। দুই স্পিনার সাকিব ও আরাফাত দুজনে ৭ ওভারে রান দেন ৪৪ রান। তবে আরেক স্পিনার সোহাগ হাজী ছিলেন খরুচে। ৩ ওভারে রান দিয়েছেন ২৭। এর মধ্যে এক ওভারেই দিয়েছেন ১৮।

স্পিনারদের আলো ছড়ানো দিনে নাসির, ফরহাদ ও এনামুলের চার চারটি ক্যাচ সাইনবোর্ড হয়েই চিরস্থায়ী হয়ে থাকল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। যা নিয়ে আলোচনা চলবে বহুদিন। তবু আফসোস একটাই ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখানোর পরও বিজয়ের হাসি হাসতে পারল না টাইগাররা। শেষ বলে নাটকীয় জয় পেয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।