গুন্ডে ছবির কাহিনি হল- ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে ভারত জয়ী হয়। ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে! ভারত এই যুদ্ধে জয়ী হয় এবং ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয় !
অর্থাৎ, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটা মিথ্যাচার দিয়ে শুরু হয় মুভিটা, সোজা কথা বাংলাদেশ হচ্ছে ইন্ডিয়ার সৃষ্টি। বাংলাদেশের জন্ম নিয়ে এই জঘন্য মিথ্যাচার ওদের সেন্সরবোর্ড আটকে দেয়নি। তার মানে ভারতীয় সরকারের এতে কোন প্রবলেম নেই। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধাকে এমন অপমান আর কেউ করেনি।
পুরোটা দেখলে বুঝবেন আমাদের কি সূক্ষ্মভাবেই না অপমান করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষ অস্ত্র চোরাচালানসহ নানামুখী অপরাধে মেতে উঠেছিল! এই দেশের মানুষ কয়লা চোর! শেষ অবধি এই দেশের মানুষ নিজেদের ভারতীয় মনে করে এবং নাগরিকত্ব পেতে সবকিছুই করতে পারে। এর প্রতিবাদ চাই। তীব্র প্রতিবাদ।
যশ রাজ ফিল্মস নাকি চেয়েছিল ‘গুণ্ডে’ মুভিটা বাংলাদেশের হলগুলোতে মুক্তি দিতে।
সেজন্য মুভিটা বাংলায় ডাবিংও করা হয়েছে। আর এমনটা যদি হতো তাহলে বাংলাদেশের যে হল ঐ ছবি প্রদর্শন করবে ঐ হলে আগুন দিতাম আমি সবার আগে ।
এই ইস্যুতে আপোষ করতে জানি না, করবো না কোনদিন । আর সেই কারণেই এই বিষয়ে দাবি করছি সরকারি শক্ত বক্তব্য। এই ইস্যুতে দেখতে চাই তাদেরই প্রতিবাদ, যারা বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন।
আশা করি, কোনো দলীয় সীমারেখার মধ্যে নয়, সবাই সোচ্চার হবেন। একই সাথে যারা এই ইস্যুটিকেও ক্যাশ করে চেষ্টা করবেন ভারত বিরোধী রাজনীতির ধুয়া তুলে পানি ঘোলা করার, তাদের প্রতিও নজর রাখতে হবে। কারণ দেশের প্রতি অসম্মানের প্রতিবাদে আমরা সোচ্চার হতে দ্বিধান্বিত নই, কিন্তু আমরা তাদেরও চিনি যারা এই ইস্যুগুলোকে নিয়ে নষ্ট খেলা খেলেন- যারা আমাদের আবেগের পিঠে সওয়ার হয়ে নিজেদের আখের গোছান।
একটা প্রশ্ন- ভারতীয় সরকারের অনুমতিতে মুভিটি প্রদর্শিত হচ্ছে, তাহলে বাংলাদেশ সরকার কি আনুষ্ঠানিকভাবে এর ব্যাখ্যা চাইবে না? সরকারের কাছ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ চাই। মুভির ওই সিকোয়েন্সটি বাদ দেয়ার দাবি জানানো হোক।
এর জন্যে দরকার হলে একলা ব্যানার নিয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়াব। মানুষে পাগল বলে বলুক।
তারা কি মনে করে সেটার চেয়ে আমাদের দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধকে কতটুকু সন্মান করে সেটা ভেবে দেখার বিষয়। এখনও রাজাকারদের রক্ষার জন্য বা ক্ষমতায় থাকার জন্য আমরা পাকিস্তান বা ভারতের পা চাটি। আমাদের আগে নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হতে হবে, সেটা হলে অন্যরা ঠিক ইতিহাসের যোগ্য সন্মান দিতে শিখবে।
জানি আমার মতো সামান্য ব্লগ ব্যবহারকারীর প্রতিবাদে হয়তো তেমন কিছুই হবে না, তবুও বলছি আমি এই ভুলের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। পরিশেষে যারা হিন্দি ও ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র দেখে লাফালাফি করেন তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে বলছি, প্লিজ ভারত চলে যান তারাই আপনাদের মাতা-পিতা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।