আমার কিছু বলার ছিল
নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছি। নতুন কলেজ স্টুডেন্ট মানেই সবকিছুতে একটু বেশিই মাতামাতি। কলেজে উঠে বড় ডিগ্রি নেওয়ার চাইতে বড় বিষয় প্রেম। কলেজ জীবন শুরু মানে স্বাধীনতার সিঁড়িতে পদাঘাত। এখন হতে ব্যক্তি স্বাধীনতা বজায় থাকবে।
শাসনের কড়াকড়িটাও কম থাকবে। আর থাকবে নিজস্ব মতামত দেবার ক্ষমতা। যাইহোক,
তো কলেজ জীবনে নেমেই প্রেমিকা খোঁজার কাজ অনতিবিলম্বে শুরু করলাম। নবীনবরণের দিনই নিশানা তথা প্রাথমিক বাছাই করে ফেললাম কাকে কাকে ট্রাই মারবো।
প্রথমজন বৃষ্টি:
রূপের বর্ণনাতে গেলাম না কারণ, দেখা মাত্রই ভালো লাগলো বলেইতো চেষ্টা।
কিন্তু ফলাফল আশানুরূপ নয়। যে কয়দিন তাকে বাগে আনতে ব্যয় করলাম তার পুরোটাই বৃথা। এই সময় কাজে লাগালে অন্তত একটা সাবজেক্ট শেষ করা যেতো। মেয়ে বিরাট ধরিবাজ। স্কুল লাইফ হতেই পাক্কা খেলুড়ে।
আমার মত হাজার জেলে তাকে ধরতে জাল পেতে আছে। কিন্তু, কারো জালেই সে ধরা দেবার নয়। হাল ছেড়ে সেকেন্ড প্রজেক্টে নজর দিলাম।
সেকেন্ড প্রজেক্ট নীলা:
এর পেছনে খুব বেশি একটা লেবার দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি কেননা জাল ফেলতেই জেনে গেলাম এটি কলেজের এক বড় ভাইয়ের সংরক্ষিত সম্পত্তি।
থার্ড প্রজেক্ট নুসরাত:
যেদিন এই প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করবো সেদিনই কলেজে গিয়ে শুনি এক অশানিসংকেত।
কে বা কারা আমাদের ক্লাসমেট রানাকে বেদম পিটিয়েছে। ঘটনার উৎস নুসরাতকে প্রপোজ!!! এক দৌড়ে কলেজ টু বাসা। প্রজেক্ট ক্যনসেল।
ফোর্থ চৈতী:
এই মেয়েটা অনেক শান্ত স্বভাবের। কোনপ্রকার হৈচৈ বা কোলাহলে নেই।
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। দেখা হলে নরমাল কুশলাদি হয়। এর বেশি কিছুনা। বেশি হলেই কেটে পরে। পরে জানলাম, সে বিরাট টার্গেট নিয়ে নেমেছে।
ভালো রেজাল্ট করে ভালো ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে ক্যরিয়ার গড়বে। এছাড়া মাথায় আপাতত আর কিছু নেই। সো, এই প্রজেক্টও ক্যন্সেল।
এবারে পঞ্চম। মানে কলি:
প্রথমে দু-চারদিন চোখাচোখি হলো।
তবে এরমাঝে যে ৩য় নয়ন কাজ করছে সে আর কেও না। আমার বন্ধু শাহীন। ধরা পরে গেলাম তার চোখে। এরপর যা শুনলাম তাতেই তিনবার ধাক্কা এলাকার অনুমোদিত রংবাজ ফেমিলির মাইয়া। প্রেম পাবার আগে প্রাণ দিতে হইবো।
না না না!!! প্রেম থেইকা নিজের প্রাণরে আমি অতিশয় বেশি ভালবাসি। তাই এই প্রজেক্টও বাদ। ধুৎ! এতো পেইন নেই কেমনে???
ষষ্ঠ জ্যোতি:
সে অবশ্য নিজেই ধরা দিয়েছিলো। বাড়িয়ে দিয়েছিল বন্ধুত্বের হাত। দিতো অজস্র সময়।
মন খুলে করতো গল্প। কিন্তু কালপরিক্রমায় জানতে পারলাম পারিবারিক মর্যাদা দরুণ আমার পরিবার কখনই একে মেনে নেবেনা। সো, বরাবরের মতো এবারো ক্যন্সেল।
সাত ক্যমেলিয়া:
লাকি সেভেন ভেবে একে ধরতে জাল নামিয়েছি। কিন্তু পরক্ষনেই জানলাম এ আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের বুকিং।
আবারো ক্যন্সেল।
আট, নয়, দশ করে পর্যাক্রমিকভাবে সব মিসন বিফল। কেউ এনগেজ্ড, কারো সাথেবা স্বপ্ন জোড়া হয়না, কেউ বন্ধুর বুকিং, কেউ বড়লোকের ললনা, কোথাও জানের ভয়, কোথাও আবার পারিবারিক মর্যাদার। এসব সাত পাঁচ নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে পরীক্ষা এসে গেছে। এখন কি করি!!! রেজাল্ট খারাপ হলে বাড়ি থেকে বের করে দেবে।
পাগল হবার উপক্রম। এরমাঝে এক স্বপ্ন দেখলাম। অস্পষ্ট এক ছায়ামানবী। কিন্তু আমার সাথে তারর অসাধারণ সব মনের মিল। ঠিক যেমনটি চেয়েছিলাম।
এ নয় কোনো ধনীর দুলালি, নয় কোনো বুকড, এযেনো কেবলি এসেছে আমার স্বপ্নের ফাঁকা স্থানগুলো পুরণ করতে।
সে আর কেউ নয়। আমার স্বপ্নে পাওয়া স্বপ্না। সেই হতে তাকে নিয়ে স্বপ্ন গড়ছি ও তার অপেক্ষায় দিন গুণছি......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।