সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ভুজপুরে মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পরিবার ও স্বজনদের ‘আনন্দ যাত্রা’ মুহূর্তেই পরিণত হল শোকযাত্রায়।
পাঁচ বছর পর সোমবার দুবাই থেকে দেশে ফিরছিলেন ভুজপুরের হারবাংছড়ির মিয়া বাড়ি এলাকার মোহাম্মদ শফী। তাকে আনতেই বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন মা বুলবুলি বেগম (৬৫)। তার সঙ্গে ছিলেন পরিবারের সদস্যসহ আরো ১৫ জন।
শফীকে নিয়ে দুপুরে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাইক্রোবাসে করে ফেরার পথে উপজেলার ভুজপুর থানার সুয়াবিল এলাকায় মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন শফীর মা বুলবুলি বেগম, শ্বাশুড়ি হালিমা খাতুন ও ভাবি পারভিন আক্তার। আহত হয়েছেন শফীর মেয়ে প্রমি আক্তার (৭), লাভলী আক্তার (৯), শারমিন আক্তার (১১) এবং ভাতিজি সুমি আক্তার (১১) ও ভাইয়ের শাশুড়ি মরিয়ম বেগম (৫২)।
তবে গাড়ির সামনের দিকে থাকায় বেঁচে গেছেন বিদেশফেরত শফী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুর্ঘটনায় আমার মা, শাশুড়ি ও ভাবী মারা গেছেন। তারা গাড়ির একবারে পেছনে বসেছিলেন।
”
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন শারমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “যাওয়ার সময় মাইক্রোবাসে আমরা ১৬জন ছিলাম। ফেরার সময় বাবাসহ ১৭ জন ছিলাম। হঠাৎ দেখি গাড়ির পেছনে আগুন। ”
পরিবারের আহত চার শিশুর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছুটোছুটি করছিলেন শফীর বড়ভাই আবদুস সাত্তার। ছুটি না পাওয়ায় নগরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সাত্তার অন্যদের সঙ্গে বিমানবন্দরে যেতে পারেননি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অফিসে বসে টেলিভিশনে খবরটা পাই। কিন্তু আমার পরিবারেই যে এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেছে তখন বুঝতে পারিনি। ”
কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন সাত্তার। তিনি বলেন, “বাড়ির সবাই খুব খুশি ছিল ভাই আসবে বলে। আমার বউ দেবরকে আনতে গেল, আর ফিরল লাশ হয়ে।
“বাড়িতে আজ সবারই আনন্দে থাকার কথা ছিল। বাড়ির মাত্র কয়েক মাইল আগে দুর্ঘটনা কেড়ে নিল আমাদের জীবনের সব আনন্দ। ’’
শফীর তিন মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট প্রমির শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের মেডিকেল অফিসার মিশমা ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রমীর শরীরের বাইরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেলেও শ্বাসনালী বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সুমির শরীরের ১৭ শতাংশ পুড়েছে।
অন্য দুজনের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভাল। ”
ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা কৃতি রঞ্জন বড়ুয়া বলেন, গাড়ির পেছনের অংশে থাকা ব্যাটারির স্ফুলিঙ্গ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।