কথা পছন্দ না হইলে করা ভাষায় সমালোচনা করুন, কৃতজ্ঞ থাকব.। .। .। .। ।
আমি বাংলাদেশের একটা প্রথম শ্রেণির স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। নাম টা বললাম না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার জন্য নিজের কাছে কিছু কিছু সময় খারাপ লাগত। তবু ও মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতাম। সাদা মাটা বেশভূষার আমি যখন ভার্সিটিতে যেতাম, তখন সেখানকার শিক্ষার্থীদের ফ্যাশনেবল চুলের স্টাইল এবং বেশভূষা দেখে বেশ ভরকে যেতাম।
ভার্সিটির ছেলে মেয়ে দের চলা ফেরা দেখে আমার হলিউড এর মুভির কোন রাস্তা ঘাটের কথা মনে হত। যদি ও তাদের বাংলা দেশের কোন উৎসব পালনে যেমন বসন্ত উৎসব, বৈশাখী উৎসব, বিজয় দিবস এ সাড়ি, পাঞ্জাবি পড়ে আনন্দ করতে দেখেছি। ছেলে মেয়ের বৈষম্য হিন বন্ধুত্ব পূর্ণ মেলামেশা দেখেছি। আমার ভাল লেগেছে এ বৈষম্যহীনটায়। কিন্তু পরবর্তী দিনেই দেখতাম তাদের আগের সেই হলিউডই রুপ।
ভাবতাম হয়ত প্রগতির উন্নতির ধারায় তাদের কথা বাত্রা, মানসিকতা, বেশভূষা পরিবর্তিত হচ্ছে। আমি প্রগতির বিপক্ষের বা প্রাচীন ধারণা পোষণ কারী কোন মানুষ নই। ভার্সিটি এর প্রথম প্রথম আমি নিজে ও বেশ সেজে গুজে, চুল স্পাইক করে ভার্সিটি তে যাওয়া শুরু করলাম। ভেবেছিলাম তাদের সাথে টিকে থাকতে হলে আমাকে ও পরিবর্তিত হতে হবে। তাদের সাথে মিশতে গিয়ে আমি দেখেছি তারা অনেক প্রানবন্ত, পড়াশোনায় ও অনেক ভাল।
কিন্তু আমার মনে হত কোথাও যেন কিছু ভুল আছে। অধিকাংশ দের আলোচনার বিষয় বস্তু পড়াশোনা, ভালবাসা, মোবাইল ফোন, ফ্যাশন অনুসঙ্গ সহ বিভিন্ন অভিজাত পার্টি নিয়ে। আমি মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। ভাবতাম এসব ব্যাপার হয়ত স্বাভাবিক। কিন্তু ধীরে ধীরে মনে হতে লাগলো আমি নিজে কে হারিয়ে ফেলছি, আমার বাঙ্গালিয়ানা হারিয়ে যাচ্ছে।
আমি আমার বন্ধু মহল এর যারা বেসরকারি ভার্সিটি তে পড়ে, তাদের মাঝে পড়াশোনায় ভাল করতে দেখেছি অনেক কে। কিন্তু সাথে দেখেছি, ফ্যাশন নামের এক নেশার উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা। তাতে ও আমার আপত্তি ছিল না। কিন্তু তাদের সাথে আমি দেশের কথা, মানবিকতার কথা নিয়ে কথা আলোচনা করতে গেলে দেশ সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক কথা শুনেছি। আমি বিশ্বাস করি, তারা আমাদের দুর্নীতি গ্রস্থ রাজনীতিবিদদের প্রতাপে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মনে এ ধারণা জন্মেছে।
কিন্তু একটা দুঃখ তারা কেন বুঝতে পারছে না, যে ভার্সিটি লাইফ যেমন মজার সময়, তেমনি এ সময় মুক্ত আলোচনার, দেশের কথা ভাবার, মানুষের কথা ভাবার। এর জন্য কোন রাজনিতি তে যুক্ত হয়ে মিছিল, মিটিং, মারামারি করতে হবে না। আমাদের মুক্ত আলোচনা থেকেই হয় ত বেরিয়ে আসবে কোন দিন আমাদের জাতির সেই কাঙ্খিত কর্ণধার, যে আমাদের বাংলা কে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবে।
দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে যখন ভাবতাম, পাবলিক ভার্সিটি তে পড়লে ভাল করতাম। তখন অবস্থা আরও ভয়াবহ।
হলের সিটের জন্য রাজনিতি, টিকে থাকার জন্য রাজনিতি, সর্বোপরি ভার্সিটি লাইফ তাড়াতাড়ি শেষ করে একটা ভাল চাকরি নিয়ে নিজের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য নিজের সাথে প্রতিযোগিতা।
পাঠক রা হয়ত বলবেন যে, সব জায়গায় ই ভাল খারাপ দুইটাই থাকবে। তাইত আমি নিজে ও মেনে নিয়েছি। চলছি নিজের মত, আমি আর চুল স্পাইক করি না, ফ্যাশন এর উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ধার ধারি না। নিজের সত্ত্বা নিয়ে চলছি নিজের মত।
হয়ত অনেকে বলতে পারেন, না পাইলে আঙ্গুর ফল টকই হয়। সে যে যা বলুক, আমি আমার সত্ত্বা কে কলুষিত হতে দিতে পারি না। সামু তে এসে খুব ভাল লাগছে যে নিজের চিন্তা ধারা গুলো বলার সুযোগ পাচ্ছি। সামুতে অনেক অনেক জ্ঞানী গুনি ব্লগার আছেন, তাদের সাথে মুক্ত আলচনায় হয়ত বেরিয়ে আসবে আমার চিন্তা ধারার অনেক ভুল। তবু ও ভাল লাগবে, শিখতে পারব অন্তত কিছু সচেতন মানুষের কাছে ত্থেকে।
আমার বেক্তিগত এ চিন্তা ভাবনা গুলো উদ্দেশ্য প্রনদিত নয়। তবু ও মনের অজান্তে কাউ কে কষ্ট দিয়ে থাকলে আমি আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থী। আমার জন্য দোয়া করবেন। ভাল থাকবেন সবাই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।