আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভূতের অস্তিত্ব ( সপ্তম খণ্ড )।

প্রদীপ হালদার,জাতিস্মর। জড় বস্তু কাজ করতে পারে না। কারণ জড় বস্তু সাম্য অবস্থায় বা ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটে থাকে। প্রতিটি জড় বস্তুর মধ্যে শক্তি বা এনার্জি আছে, তবু জড় বস্তু কাজ করতে পারে না। মানুষ কাজ করতে পারে কারণ মানুষ অসাম্য অবস্থায় বা নন ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটে থেকে।

জড় বস্তুর মধ্যে শক্তি আছে,কিন্তু শক্তির আদান প্রদান হয় না। বিশেষ করে তাপ শক্তির আদান প্রদান হয় না। অর্থাৎ জড় বস্তু এবং পরিবেশের মধ্যে একই তাপ থাকে, সেজন্য তাপ শক্তির আদান প্রদান হয় না। জড় বস্তু এবং পরিবেশের মধ্যে প্রেসার বা চাপের তফাৎ থাকে না, সেজন্য জড় বস্তু কাজ করতে পারে না। আবার জড় বস্তু এবং পরিবেশের মধ্যে কনসেনট্রেশান গ্রেডিয়েন্ট থাকে না বলে কোন ভরের আদান প্রদান হয় না।

মানুষ কাজ করতে পারে। তার কারণ মানুষ অসাম্য অবস্থায় বা নন ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটে থাকে। মানুষ থার্মাল নন ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটে থাকে বলে মানুষ এবং পরিবেশের মধ্যে তাপ শক্তির আদান প্রদান ঘটে। আসলে মানুষ এবং পরিবেশের মধ্যে তাপের তফাৎ থাকে। যখন মানুষ এবং পরিবেশের মধ্যে তাপের কোন তফাৎ থাকবে না,তখন মানুষ আর পরিবেশের মধ্যে তাপ শক্তির আদান প্রদান ঘটবে না।

মানুষ এবং পরিবেশের মধ্যে প্রেসার বা চাপের তফাৎ থাকে অর্থাৎ মানুষ মেকানিক্যাল নন ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটে থাকে,ফলে মানুষ কাজ করতে পারে। পরিবেশের চেয়ে মানুষের শরীরে চাপ বেশি থাকে। সেজন্য মানুষ কাজ করতে পারে। মানুষ এবং পরিবেশের মধ্যে কনসেনট্রেশান গ্রেডিয়েন্ট থাকে বলে মানুষ ভরের আদান প্রদান করতে পারে। অর্থাৎ মানুষ অক্সিজেন গ্যাস গ্রহণ করতে পারে, খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।

তেমনি মানুষ কার্বনডাইঅক্সাইড গ্যাস এবং অন্যান্য দ্রব্য ত্যাগ করতে পারে। মানুষের শরীরে চাপ কমে গেলে বাতাস বা অক্সিজেন গ্যাস মানুষের শরীরে ঢোকে। আবার মানুষের শরীরে চাপ বেশী হলে বাতাস বা কার্বনডাইঅক্সাইড গ্যাস মানুষের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। মানুষের শরীরে বেগ কম হলে অর্থাৎ গতিবেগ কম হলে শরীরের মধ্যে চাপ বাড়ে। আবার মানুষের শরীরে বেগ বেশী হলে অর্থাৎ গতিবেগ বেশী হলে শরীরের মধ্যে চাপ কমে।

মানুষের শরীরে চাপ,তাপ এবং আয়তন এর যে কোন একটির পরিবর্তন ঘটলে মানুষের মৃত্যু ঘটে। শরীরের চাপ এবং পরিবেশের চাপ এক হলে মানুষ আর কাজ করতে পারবে না। শরীরের চাপ কম হলে অক্সিজেন গ্যাস শরীরে ঢোকে, আর মানুষের শরীরে চাপ বেশী হলে শরীরে তখন অক্সিজেন গ্যাস ঢোকে না,বরং কার্বনডাইঅক্সাইডগ্যাস শরীর থেকে বের হয়। কেমিক্যাল নন ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটের জন্য মানুষ এবং পরিবেশের মধ্যে ভরের আদান প্রদান ঘটে। কেমিক্যাল ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেট হলে কনসেনট্রেশান গ্রেডিয়েন্ট থাকে না, ফলে ভরের আদান প্রদান ঘটে না।

মানুষের মৃত্যুর সাথে সাথে ভরের আদান প্রদান বন্ধ হলো। মৃত্যু হলে শ্বাস প্রশ্বাস আর ঘটে না। তাহলে বুঝতে হবে শরীরের মধ্যে চাপ কম থাকলে অক্সিজেন গ্যাস শরীরে ঢুকতো। কিন্তু শরীরে যখন অক্সিজেন গ্যাস আর ঢুকছে না,তখন শরীরের মধ্যে চাপ এবং পরিবেশের মধ্যে চাপ সমান হয়ে যায় বলে হাত পা আর কাজ করতে পারে না। কিন্তু মানুষের মাথায় রক্তের গতিবেগ কমে যায় এবং চাপ বেশী হয়।

সেজন্য মাথা তখন কাজ করতে পারে। চাপ বেশী অর্থাৎ বলপ্রয়োগ বেশী হয়। ভরের আদান প্রদান বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে শক্তির আদান প্রদান বন্ধ হয়। তাহলে শরীরে চাপ পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর তাপের পরিবর্তন হয়।

আয়তনের পরিবর্তন হয়। শরীর স্থিতিস্থাপকতার জন্য এবং আয়তন বিকৃতির জন্য শরীরের মধ্যে পীড়ন বলের উদ্ধভ ঘটে। এই পীড়ন বলের জন্য মৃত মানুষ বাতাসের মধ্যে পূর্বের আকার এবং আয়তন ফিরে পায়। এটাই ভূত। ভূতের শরীরে চাপ স্থির থাকে।

শরীরে ভর নির্দিষ্ট থাকে। শরীরের আয়তনের পরিবর্তন ঘটতে পারে। এইজন্য ভূত তার হাত পা বড় করতে পারে কিংবা ছোট করতে পারে। ভূতের শরীর মেকানিক্যাল নন ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটে থাকে। সেজন্য ভূত কাজ করতে পারে।

ভূতের শরীরে চাপ বেশী। ভূতের শরীর এবং পরিবেশের মধ্যে চাপের তফাৎ থাকে। ভূতের শরীরে ভরের আদান প্রদান ঘটেনা। যেহেতু ভূতের শরীর কেমিক্যাল ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটে থাকে। ভূতের শরীরে চাপ স্থির থাকে।

ভূতের শরীরে চাপের পরিবর্তন ঘটলে ভূতের শরীরে অক্সিজেন গ্যাস ঢুকতো। কিন্তু অক্সিজেন গ্যাস ঢোকে না। কারণ ভূতের শরীরে চাপের কোন পরিবর্তন ঘটে না। ভূতের শরীরে আয়তন এবং তাপের পরিবর্তন ঘটে। ভূতের শরীর ক্লোজড্‌ সিস্টেম।

তাপ শক্তির আদান প্রদান ঘটে। তাহলে ভূতের শরীর থার্মাল নন ইকুলিব্রিয়াম ষ্টেটে থাকে এবং মেকানিক্যাল নন ইকুইলিব্রিয়াম ষ্টেটে থাকে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।