আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Requiem for a dream ও Stranger than fiction সম্পূর্ণ ২ ঘরানার ২ অসাধারন ছবি

মুর্খদের সাথে তর্ক করতে ভাল্লাগেনা,মুর্খ দের এভয়েড করতে ভাল্লাগে সময়টা ছিল ২০১০ সালের অক্টোবার। আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়গুলোর একটা। মানসিকভাবে এত বিপর্যস্ত আমি আমার জীবনে খুব কম হয়েছি। আগ্রহীদের বলছি,না,আমি ছ্যাকা খাইনি । পড়ালখা সম্পর্কিত একটা ভেজাল।

যাই হোক এরকম এক সময় আমি বিকালে বসে Requiem for a dream(http://www.imdb.com/title/tt0180093/) দেখলাম। দেখে মনে এমন একটা বিশাল ধাক্কা খেলাম সেটা নিয়ে পরে আসছি। প্রথমেই বলি ছবিটা পেয়েছিলাম বুয়েট পড়ুয়া(বর্তমানে শিক্ষক)পাড়ার এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে। আমার সিনেমার কালেকশন এর একটা বড় অংশ ওই ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া। উনার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

তবে সিনেমাটা আমার কম্পিউটারে ঘুরছিল। কিন্তু দেখা হচ্ছিলো না। একদিন পেপারে দেখলাম। most depressive films শীর্ষক একটা লিস্ট। ওখানে মনে হয় ছবিটা প্রথমে ছিল।

দেখি লিংক পেলে দিয়ে দিব লিস্ট টা। ওখানে সেভেন(se7en) ছিল। সিনেমাটা বসার সাথে সাথে সাউন্ডট্র্যাকটা চমতকার একটা ধাক্কা দিল সারা মনে-শরীরে। অসাধারন সাউন্ডট্র্যাক। পরে জেনেছি এই সাউন্ডট্র্যাক এর রাইটস কিনে অনেকে ব্যবহার করছে।

সিনেমার ডিরেক্ট্রর Darren Aronofsky(http://www.imdb.com/name/nm0004716/)। সিনেমার মেকিং আমার মাথা খারাপ করে দিল আস্তে আস্তে। ক্যামেরার কাজ অসাধারন। ড্রাগস খাওয়ার মন্টাজ গুলো ছিল চমতকার। সিনেমাটার কাহিনী নিয়ে বেশি কিছু বলবোনা।

তবে এটা করা হয়েছে Hubert Shelby jr(en.wikipedia.org/wiki/Hubert_Selby,_Jr.) নামক আমেরিকান এক লেখকের একি নামের বই থেকে। আর সিনেমার মূল থিম ড্রাগস হলেও সেকেন্ডারী যে থিমটা ছিল সেটাও খুব শক্তিশালী। আর সেটা হল প্রচলিত পশ্চিমা পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থার অন্ধকার দিক। পশ্চিমাদের প্রেক্ষাপট থেকে খুবই স্বাভাবিক পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা মানুষকে কিরকম করে ফেলে তা দেখতে পাই নারী চরিত্রদের পরিণতি থেকে। jared leto(বর্তমানে 30seconds to mars(http://www.last.fm/music/30+Seconds+to+Mars) এর ভোকাল),elen Burstyn,Jennifer connely,Marlon L. Wayans সবারই অভিনয় চরিত্র চিত্রন অসাধারন।

জেনিফার কনেলি তো অসাধারন সব সময়ের মতই। আর ছবিটার প্রতিটা সিন দর্শকের মুখের উপর বেসিকালি এককথায় ছুড়ে মারা হয়েছে। বিশেষ করে শেষের দিকের দৃশ্য গুলো তো এক কথায় ভয়ানক। আপনি যদি নিজেকে মনে করেন খুব খারাপ আছেন তো এটা দেখে এক কথায় মেনে নিবেন ‘যা আছি ভালো আছি’। আমার মনে হয় মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোতে এটা দেখালে খারাপ হয়না।

আমার নিজস্ব মতামত। সবাই আশা করি দেখবেন। Stranger than fiction(http://www.imdb.com/title/tt0420223/) একটা ভিন্ন ধর্মী ছবি। অন্য রকম একটা অসাধারন ছবি। Marc Forster(http://www.imdb.com/name/nm0286975/) পরিচালিত সুন্দর ছবি।

কাহিনী নিয়ে কিছু বলবনা। কারন মজাটা এক মূহুর্তে নষ্ট হয়ে যাবে। চমকটা নষ্ট হলে দেখার কোন মানে থাকবেনা। খুবই ক্রিয়েটভ ভিন্ন ধারারকাক ন্যারাটিভস। ক্যামেরার কাজ স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে খুব স্পেশাল কিছু না।

সাউন্ডট্র্যাক অসাধারন। মন ভালো করে দেওয়ার মত। ছবির কাস্ট সিলেকশন ও পার্ফেক্ট। Will Farrel,Maggy Gyllenhal,Dustin Hoffman,Queen Latifah,Emma Thompson সবাই অসাধারন পার্ফরমেন্স দেয়। Will Farrel তার কমিক চরিত্রের বাইরে এসে ড্রামাটিকাল এক পার্ফরমেন্স দেন।

Irs অফিসার(সোজা বাংলায় ট্যাক্স কালেক্ট্রর) হিসেবে কাজ করে। আর Emma Thompson এক লেখিকা যিনি মূল চরিত্রের জীবন নিয়ে গল্প লিখছেন। সব সিনেমার শেষে টুইস্ট থাকে। এই সিনেমার শুরু ও শেষে ২ জায়গাতেই টুইস্ট। পুরোটাই একটা এঞ্জয়েবল ফ্যামিলি মুভি।

সবাই দেখুন। এখন আমি কেন লিখছিলাম সে পয়েন্টে আসি। সিনেম ২টা আমি পরপর দেখেছিলাম। প্রথমে requiem for a dream দেখে ভয় হতাশা জাপ্টে ধরেছিল। হ্যা,মনে হয়েছিল অনেক ভালো আছি।

কিন্ত আশা হারিয়ে ফেলার মত অবস্থা হয়েছিল। জীবন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল এমনভাবে যে আমি আর জীবনে মনে হয় মাদক/সিগারেট ও ধরবোনা। Requiem for a dream দেখে এধরনের ভয়/আতংক পেয়েছিলাম। আর Stranger than fiction হল হতাশাবাদীদের জন্য ছবি। জীবন ফুরিয়ে যায়না এত সহজে।

এটাই বুঝাতে চেয়েছে। এটা মনে হয় আমার ভাগ্য। আমি এধরনের ২টা ছবি পরপর দেখেছিলাম। আমার জীবন এক ধাক্কাতেই অনেক পরিবর্তিত হয়ে গেল। হতাশাটা অনেকাংশই কেটেছিল।

সবাইকেই রিকমেন্ড করবো আমি এই মুভি ২টা। সবাই দেখুন। ভালো থাকুন  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।