আপনাকে স্বাগতম!
সংবাদ মাধ্যম হলো আধুনিক গণতন্ত্রে জনগণের অধিকার আদায়ে অন্যতম শক্তি, দ্বিতীয় সংসদ। কিন্তু চিন্তা করে দেখুন, যারা এদেশের মানুষ নয়, একটি দেশের স্বার্থের সাথে যাদের সম্পর্ক নেই, যাদের সম্পর্ক নেই সে দেশের কৃষ্টি-কালচার ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের - সেরকমের একটি সংবাদ মাধ্যমের কী দায় আছে সেদেশের মানুষের জন্য সত্যিকার সংবাদ পরিবেশনের? গরম সংবাদ পরিবেশ করে বৈশ্বিক রাজনীতিতে ঘোলাজলের সৃষ্টি করা এবং তাতে কিছু মাছ ধরে নিতে পারলে, কী দরকার আছে একটি ভিন দেশের ইতিহাস আর স্বাধীনতার সংগ্রামকে গৌরবান্বিত করার?
বাংলাদেশের ইতিহাসে, পানি ঘোলাটে করে সবচেয়ে বেশি মাছ ধরার মোক্ষম সুযোগ হলো এখন। খবর বিক্রি করার উপযুক্ত বাজারও এখনই, কারণ এখন একটি পরাজিত পক্ষ মরিয়া হয়েছে তাদের অস্তিত্ত্ব টেকানোর জন্য, চামড়া বাঁচানোর জন্য। তারা কোন সময়ই দেশের মাটির পক্ষে ছিলো না, তারা চায় নি এদেশের স্বাধীনতা। পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলো যারা এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সুষ্পষ্টভাবে বিরোধীতা করেছে, সেসব দেশকে তারা সকল উপায়ে ক্ষেপিয়ে তুলছে এদেশের বিরুদ্ধে।
“It is often forgotten that the bloodshed in the spring was not all one-sided, and that the east Bengalis killed thousands of non-Bengalis.” (এটা প্রায়ই ভুলে যাওয়া হয় যে, মার্চের রক্তপাত কোনভাবেই একচেটিয়া ছিলো না। ভুলে যাওয়া হয় যে, বাঙালিরা হাজার হাজার অবাঙালিকে হত্যা করেছে। ) দ্য ইকোনোমিস্ট, ডিসে/১৯৭১।
৩০ লাখের চেয়ে দ্য ইকোনোমিস্ট-এর কাছে হাজারের গুরুত্ব অনেক বেশি!
শুধু বর্তমান সরকার নয় বিগত যে কোন সরকারের আমলে দ্য ইকোমিস্ট-এর পরিবেশিত সংবাদগুলোতে একটু নজর দিয়ে দেখুন, তারা কাদের জন্য সংবাদ পরিবেশ করে।
গবীবের বউ সকলেরই বাউজ।
বাংলাদেশের স্বার্থ ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক নিয়ে তাদের পেশাদারি বিশ্লেষণ দেখে যে কেউ বিভ্রান্ত হতে পারেন।
দেশের স্বার্বভৌমত্বের অন্যতম প্রতীক বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ধ্বংস করে দেবার জন্য দ্য ইকোনোমিস্ট বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছে। একাত্তরে দেশের মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য স্থাপিত আদালতের এক সম্মানীত বিচারকের ইমেল ও স্কাইপে আইডি হ্যাক করে তারা সেই বিচারপতিকে ব্লাকমেইল করছে। বিচারকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কোন মূল্য দ্য ইকোনোমিস্ট-এর কাছে নেই।
এদেশের মানুষকে সঠিক সংবাদ দেবার তাদের এতই দরকার? এদেশের প্রধান জাতীয় দৈনিক যেমন: প্রথম আলো, ইনকিলাব, ইত্তেফাক, ডেইলি স্টার, কালের কণ্ঠ প্রভৃতি পত্রিকার চেয়েও তারা এদেশের মানুষের প্রতি বেশি দরদী হয়ে পড়েছে।
এদের সংবাদ পরিবেশ করে পোস্টের আকার বৃদ্ধি করতে চাই না। দ্য ইকোমিস্ট-এর কয়েকটি শিরোনামের ভাষা দেখুন:
>বাংলাদেশ: আঁধারের চূড়ান্ত (নভে/২০১২)
>বাংলাশের বিষাক্ত রাজনীতি: হে দিল্লী কিছু করো! (মে/২০১২)
>বাংলাদেশ: এভাবে নয় (জুন/২০১০)
>বিডিআর বিদ্রোহের পর বাংলাদেশ: মন্দ নাকি উন্মত্ত? (মার্চ/২০০৯)
>বাংলাদেশ: মাইনাস টু সমাধান (সেপ/২০০৭)
>বাংলাদেশ: এক বেগমের পতন (খালেদার গ্রেপ্তারের পর) (মার্চ/২০০৭)
>বাংলাদেশের নির্বাচন ২০০১: বিন লাদেনের পক্ষে ভোট? (সেপ/২০০১)
অধিকাংশ সংবাদে কোন পাঠক মন্তব্য পাওয়া যায় নি।
সাংবাদিকেরা অবশ্যই সংবাদের পেছনে থাকবেন। তারা খবরের পেছনের খবরকে বের করে নিয়ে আসবেন পাঠকের জন্য। ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে তারা পাঠককের সামনে সত্যিকার চিত্রটি তুলে ধরবেন।
কিন্তু এর মানে এই নয় যে, তারা প্রতিনিয়ত একটি দেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, যোদ্ধাপরাধের বিচার - এসব বিষয় নিয়ে দায়িত্বহীন সংবাদ পরিবেশ করে যাবে। দেশের আইনের বাইরে থাকার সুযোগ নিয়ে তারা যাচ্ছে-তাই মতামত দিয়ে যাচ্ছে। বিভেদ সৃষ্টি করছে ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের।
দ্য ইকোনোমিস্ট আজকাল দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে মিঠা মিঠা কথা বলছে, তা কেবল বৃহত্তর সংবাদমাধ্যমগুলোর মতের সাথে সুর মেলানোর জন্য; এবং তাদের অন্যান্য ধ্বংসাত্মক সংবাদগুলো আমাদেরকে খাওয়ানোর জন্য। তারা কখনো এদেশের পক্ষে কথা বলে নি।
দেশের অবস্থান জানার জন্য দেশী সংবাদ মাধ্যমকে আমরা যদি বিশ্বাস না-ই করি, তবে ইকোনোমিস্ট ছাড়াও আরও বিদেশী মাধ্যম আছে, যাদের সততা শত বছর ধরে পরীক্ষীত। তাদের বিশ্লেষণে দৃষ্টি দিলে দ্য ইকোনোমিস্টকে বুঝা যায়। শুধু আওয়ামিলীগ নয়, বিগত যেকোন সরকারের সময়ের ইকোনোমিস্ট দেখুন। তারা সংবাদ বিক্রি করার জন্য সংবাদ লেখে। দেশের মানুষের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা, রাজনৈতিক মেরুকরণ জাগিয়ে রাখা, বিদেশ-নির্ভরতা বাড়িয়ে তোলা, দেশের রাজনীতিতে পাশ্চাত্য নেতৃত্বের স্থায়িকরণ আর হলুদ সাংবাদিকতা তাদের ব্যবসায়ের নীতি ও মাধ্যম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।