সব সংযোগে ১০ সেকেন্ড পালস, মোবাইল ফোন অপারেটরদের 'না'।
মোবাইল ফোন অপারেটররা সব প্যাকেজে ঢালাওভাবে ১০ সেকেন্ড পালসের সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছে। তারা বিটিআরসিকে বলেছে, এ নির্দেশনা অবাস্তব, অযৌক্তিক। গতকাল সোমবার বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা এ দ্বিমতের কথা জানান।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, বৈঠকটি ছিল মোবাইল ফোন অপারেটরদের সঙ্গে বিটিআরসির চেয়ারম্যানের নিয়মিত মাসিক বৈঠকের অংশ।
বৈঠকে ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা বাস্তবায়নের বিষয়টি ছাড়াও অপারেটরদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়।
বিটিআরসি গত ২ আগস্ট দেশের ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, এয়ারটেল, সিটিসেল এবং টেলিটক কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের প্যাকেজে ১০ সেকেন্ড পালসে কলের সুবিধা দিতে নির্দেশ দেয়। এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে।
জানা যায়, গতকাল বৈঠকে মোবাইল ফোন অপারেটরদের পক্ষ থেকে বলা হয়, 'বিভিন্ন সেবার প্রস্তাব বিটিআরসির অনুমোদন পেতে অনেক দেরি হচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে না।
অনুমোদন দিতে এত দেরি করা হচ্ছে যে প্রস্তাবিত সেবা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়টি পার হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক সময় সেবা শুরুর আগেই অনুমোদনের বিষয়টি বিটিআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টিতে প্রয়োজনীয় গোপনীয়তা রক্ষা হচ্ছে না। আমরা চাই সেবা চালু হওয়ার পরই বিষয়টি গ্রাহকদের স্বার্থে প্রকাশ করা হোক। '
১০ সেকেন্ড পালস সুবিধার বিষয়ে অপারেটরদের পক্ষে আরো বলা হয়, কয়েক মাস আগে বিটিআরসির পরামর্শে মোবাইল অপারেটররা বিভিন্ন প্যাকেজে এক মিনিটের নিচে পালস সুবিধা চালু করেছে।
৩০, ১০ ও এক সেকেন্ড পালস সুবিধার মধ্যে যেকোনো একটি সুবিধা গ্রাহকদের বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যাঁরা বেশিক্ষণ কথা বলেন, তাঁদের জন্য বিশেষ প্যাকেজে বিশেষ সুবিধা চালু রয়েছে। এ অবস্থায় ঢালাওভাবে ১০ সেকেন্ড পালস চালু করলে গ্রাহকদের পছন্দ করা সুযোগ সীমিত হয়ে পড়বে। এ ছাড়া কল ড্রপ হচ্ছে- এই অভিযোগে ঢালাওভাবে এভাবে পালস সুবিধা দেওয়ার কোনো নজির অন্য কোনো দেশে নেই। গ্রাহকদের প্রতি কলেই যে কল ড্রপের ঘটনা ঘটে, তা নয়।
আবার সব অপারেটরের কলড্রপের ধরনটাও এক রকম নয়। এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে বিটিআরসির বিশেষ নীতিমালা করা উচিত। কিন্তু এর বদলে ঢালাওভাবে ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা চালু করলে নানামুখী সমস্যা দেখা দেবে। নতুন সেবা উদ্ভাবন এবং বাজার প্রতিযোগিতা ব্যাহত হবে। নতুন নতুন সেবা উদ্ভাবনের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন।
সব অপারেটরের এবং সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মোবাইল ফোন অপারেটরদের পক্ষ থেকে ১০ মিনিট পালসের বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল আমার সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। এ ধরনের ভিন্নমত থাকতেই পারে। বিটিআরসির পক্ষ থেকে তাদের বিষয়টি লিখিতভাবে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।
'
বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, 'মোবাইল ফোন গ্রাহকদের জন্য ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি একটি জনপ্রিয় দাবি। আমাদের এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা ইতিমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। '
এ বিষয়ে বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের পরিচালকের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, 'মোবাইল ফোনের গ্রাহকরা কল করার পর নেটওয়ার্কের ত্রুটি বা অন্য কোনো কারিগরি কারণে কল ড্রপ হয় এবং পুনঃসংযোগে প্রতিবারই এক মিনিট বা পূর্ণ পালসের অর্থ পরিশোধ করতে হয়। অর্থাৎ অনেক সময় গ্রাহকদের একটি কলের জন্য একাধিক সংযোগ পেতে চেষ্টা করতে হয় এবং প্রতিবারই নির্ধারিত এক মিনিটের কিংবা পূর্ণ পালসের ফি দিতে হয়। এর ফলে গ্রাহকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ ছাড়া অনেকে সংক্ষিপ্ত কথোপকথনে অভ্যস্ত। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময়ের ফি নেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। '
এদিকে বিটিআরসি-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করার পর গতকাল অফিস বন্ধ হওয়া পর্যন্ত '১০ সেকেন্ড পালস'-সংক্রান্ত নির্দেশনায় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
ফেবু থেকে সংগৃহীত: ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।