আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

English Diary of a jobless boy who does not know English

শুরুর আগে একটা গ্রামার বই কিনলাম। সাথে গোটা তিনেক ডিকশোনারী। বাংলা - English , English - বাংলা, English- English। ইংরেজী শিখতে হবে। না হলে চাকরী জুটবে না।

বইগুলো একেবারে তুলোধুনো করে ফেলবো ঠিক করেছি। সিংহের মতো। Like a lion. বাসায় ফিরছি আর ইংরেজীর কথা ভাবছি। English ব্যাপারটা খালি ভাষা না, এটা একটা class। আমাকে সেই ইংরেজী জানা ক্লাসে টেনে তুলতে হবে।

কার্ল মার্কসের ক্লাস স্ট্রাগলের ব্যাপার। নিজেকে তাতিয়ে তুলি। ভাবি কেতাদুরস্ত ই্ংরেজী বেরোচ্ছে আমার মুখ দিয়ে। আমার হাসি পায়। হাসিটা আসলে ঠিক হাসি নয়।

একটা খচখচানি। নিজেকে ছোট মনে হয়। নিজের ওজন বাড়ানোর জন্য ভাষাটা শিখছি এটা ভাবতে ভাল লাগে না। আমি একটা ভাল যুক্তি খুজি। একজন বারবনিতাও নিজের কাজের ব্যাপারে একটা যুক্তি তৈরী করে।

সে মানুষের একটা মৌল চাহিদা পূরন করছে। সে সামাজিকভাবে কাজে লাগছে। আমার ইংরেজীটা কোন কাজে লাগছে? ভাবনাটা শুয়োপোকার মত। চিন্তার মধ্যে খালি হুল ফোটায়। আমি অন্যভাবে দেখার চেষ্টা করি।

ভাষা একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমি ভাবি। আমার মায়ের ভাষাটা এমনি জানি। এটা জানার ব্যাপারটা অনেকটা প্রকৃতিগত। এটা আমি পারি বটে কিন্তু কিন্তু ভাষার ব্যাপারটা আমার জানা হয় নি।

বিদেশী একটা ভাষা শিখতে গেলে এটা আমাকে শিখতে হবে। শিখতে গেলে ভাষার ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারবো। এর বিভিন্ন ছোট ছোট দিক, বৈশিষ্ট্য, চরিত্র- ব্যাপারগুলো জানা যাবে। । বেশ হবে।

... আমি খুশি হয়ে উঠি। বেশ যুতসই যুক্তি মনে হয় আমার কাছে। ফুরফুরে লাগে। রিকশা দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় আশেপাশে দেখি। একটা ফেরিওয়ালা অনেকগুলো রঙবেরঙের গ্যাসবেলুন এর সুতো হাতে বাধিয়ে গাড়ির জানালায় জানালায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আমি মাথা উচিয়ে দেখি। আকাশে বেলুনগুলোর রঙগুলো দুলছে। স্বপ্নের মতন। রঙধনুর চেয়েও উজ্জ্বল মনে হয় ওদের। সাথে সাথে চাকরীটার কথা মনে হয়।

ইংরেজী না জানলে চাকরী জুটবে না। ইংরেজীটা শিখতেই হবে। এই বয়সে একটা ভাষা শেখাটা খুব কঠিন একটা ব্যাপার। আবার ইংরেজী শিখতে যে কোথাও যাবো সেটাও খুব লজ্জ্বার ব্যাপার। সারা জীবন ইংরেজীকে গালি দিয়ে এসেছি।

সেই্ আমি ইংরেজী শেখার জন্য B-A-T BAT, C-A-T CAT করছি কেউ জানতে পারলে - এর চেয়ে রিকশা চালানোও ভালো। তাহলে ? তখনই চিন্তাটা মাথায় আসলো। কেউ জানবে না। শিশুর মত আবোল তাবোল হলেও, কোন লজ্জ্বা নেই। বেশ দেখে একটা ডায়েরী কিনে আনলাম।

ইংরেজীতে ডায়েরী লিখতে লিখতে ইংরেজী ভাষাটা শিখবো। এবার আমি determined. উধু ০১ Day 01 The beginning Eighteen years two hundreds & thirty-three days later from the day & Ten years at least from that day I have started writing simply -a diary. ডায়েরীতে লিখি। গ্রামারটা ঠিক আছে তো? লাইনটার দিকে তাকিয়ে ভাবি। দেখতেতো ঠিকই লাগছে। have এর ব্যাপারটা অনেক চিন্তা করে বসিয়েছি।

আমার চোখে কোন ভুল ধরতে পারছি না। কয়েকবার পড়ে দেখলাম। যা বলতে চাইছি মাথার মধ্যে সেটা বলা গেছে বলে মনে হচ্ছে। the day আর that day দিয়ে দুটো বিশেষ দিন বোঝাতে চাইছি। সেটা ঠিক আছে তো? মানুষ কি সেটা বুঝবে? কিন্তু কেউ কি আসলে কখনই কারো কথা বুঝতে পারে? পারে না।

কখনই না। সারা জীবন আমি যা বোঝাতে চেয়েছি আর অন্যরা যা বুঝেছে তা এক নয়। নিজের ভাষায় কথা বললেও। ওখানেতো আর grammarটা ভূল ছিল না। grammarটা ঠিক থাকলেও বোঝা আর বোঝানোর মধ্যে সন্ধ্যার একটা আবছায়া থেকেই যায়।

একটা দূরত্ব। প্রেমের মত। So। আমি বুঝলেই হলো। নিজের কাছে এই দুটো দিন মাথার মধ্যে রিনরিনে একটা ভাললাগার অনুভুতি জাগায়।

দাদু বলতো তুমি যেই ভাষায় চিন্তা করো সেটাই তোমার ভাষা। আমি যে ভাষায় চিন্তা করি সেটা বাংলা ভাষা। আমার ইংরেজী ভাষাটা পড়তে হতো। কারন স্কুলে আমাকে পরীক্ষা দিতে হতো। দাদু আমাকে বলতেন তুমি যদি ইংরেজীতে চিন্তা করতে পারো তবেই তুমি ইংরেজী ভাষাটা শিখতে পারবে।

কিন্তু সত্যি বলতে কি আমার ইংরেজী শিখতে এতটুকুও ভাল লাগতোনা। এর পেছনের কারণটা হলো - আমি ইংরেজীকে ঘৃণা করতাম। এই ঘৃণার পেছনে পেছনে আমি দায়ী ছিলাম না। আমাদের পাশের বাসার খোকা ভাই - আমাদের দেশটাকে কিভাবে দু’শ বছর মেরে পিটে লুটপাট করে দিয়ে এখন রাজা বাদশার দেশ হয়ে আনন্দ ফুকছে আর আমরা না খেয়ে টপাটপ মরে যাচ্ছি এসব গল্প করে ইংরেজরা যে কত খারাপ এরকম একটা ধারণা মনের মধ্যে তৈরী করে দিয়েছিলেন। ‘এই যে দেখনা -ইংরেজরা কিরকম শয়তান, ওরা চলে গেছে কিন্তু মগজের মধ্যে ওরা ঠিকই দাসত্বের বীজ মনের মধ্যে রেখে গেছে।

যে ইংরেজী জানে না আমরা তাকে ঠিক মানুষ বলেই মনে করি না। ইংরেজী জানলে - আমরা তাকে মনে মনে রাজার মতো দেখি। ’ - খোকা ভাই বলতেন। দাদু আমাকে ইংরেজী নিয়ে বসতে বললেই না শেখার ছল তৈরী হতো। পরীক্ষার পাসের বাইরে ইংরেজীটা তাই শেখাই হলো না।

আজকে আমি ইংরেজীতে ডায়েরী লিখতে বসেছি। দাদুর কাছে হম্বিতম্বি করে বলা কথাগুলো অসার মনে হয়। নিজকেই যে পাল্টে ফেলছি- কথাগুলো ঠিকই আছে আমি তা ভাবতেই চাই না। দাদুর উদ্দেশ্যে একটা চিঠি দিয়েই ইংরেজীতে ডায়েরী লেখাটা শুরু করি, ভাবি আমি। I have started writing the diary- not in our language Grandpa, it is in English. In a wrong English. wrong English এর আগে a হবে না an হবে? a, e, i, o, u এই পাঁচvowel letter দিয়ে শুরুর শব্দগুলোর আগেই শুধু সবসময় an বসে।

সেই হিসেবে wrong শব্দটার আগে বসছে বলে a ই হওয়ার কথা। কিন্তু English এর শুরুটা E। আমি যা বলতে চাইছি সেটা হলো ভূল ইংরেজী। জোর কোনটায়? ভাবি আমি। ভুলটার উপরে? নাকি ইংরেজীর উপরে।

ইংরেজীর উপরে জোর হলে an বসার কথা। প্রত্যেকটা শব্দের পর grammar বইটা দেখতে ইচ্ছে করছে না। কানের উপর জোর দেই। মনে মনে উচ্চারন করে পড়ি। In an wrong English. না কানে খট করে লাগছে।

a ই ভাল লাগছে। তাহলে a ই সই। হটাৎ মনে পড়ে। e এর উচ্চারন e এর মতো হলে an এর বদলে a বসবে। a English man নাকি an English man কোনটা ঠিক? দ্বিতীয়টা কানে ঠিক লাগছে।

wrong এর আগে বসবে বলে a টা হচ্ছে। আসলে কি তাই? কিন্তু ইংরেজের উপর জোরটা থাকলো না। ঠিক আছে আরেকটা শব্দ দিয়ে check করা যাক। একজন অভিমানী ইংরেজ। তাহলে এটা ইংরেজীতে কি হবে? অভিমানীর ইংরেজীটা জানি না।

বাংলা - English Dictionary নিয়ে বসি। অভিমানীকে ধরতে গেলে অভিমানকে খুঁজে বের করতে হবে। ঢাউস বইটার পাতা উল্টে উল্টে আমি অভিমান খুঁজে বের করি। অভিমান n – 1 Offended state of mind; pique; sensitiveness; mental perturbation (caused by undesirable conduct of a near and dear one) 2 pride; conceit; egoism 3 sense of self respect ~ be in a huff; take a pique at sb. অভিমানী adj sensitive; proud; haughty. অভিমানিনী fem কোনটিই ঠিক অভিমানীর ঠিক meaning টার মত মনে হয় না। sensitive; proud কোনটাতো অভিমানীর ধাওে কাছেও যায় না।

haughty শব্দটাও কানে যুৎসই লাগে না। গোলমাল পেকে যাচ্ছে। মাথাটা জ্যাম হয়ে থাকে। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দি। এটা একটা journey. Long long journey. খানা খন্দগুলো আপাতত পাশ কাটিয়ে গেলেও চলবে।

সামনে আবার নিশ্চিত ফিরে আসবে। তখন ঠিক করে নিলেই চলবে। শুরু থেকেই সব মেরামত করে নিয়ে এগুতে গেলে অচিরেই শ্রমিকের ঘাম চিকচিক করে উঠবে। সেটা ঠিক হবে না। ফুরফুরে বাতাসে এগিয়ে যাওয়াই হলো আসল কথা।

ঝাকি খেতে খেতে হলেও গায়ে লাগবে না। আমরাতো এভাবেই ভাষা শিখি, না? তবু বুড়ো বয়স। খানা খন্দ এড়ানো যায় না। ঠিকই গোলকধাধায় আটকে পড়ে থাকি। in a wrong English. in টা ঠিক আছে তো? Preposition গুলো মহা গোলমেলে।

মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কের মতই। গোলমেলে। with দিয়ে লিখলে কি হয়? মনে মনে পড়ি with a wrong English হতে পারে। তাহলে sense টা কি দাড়ায়? আমি ভুল ইংরেজীর সাথে চলতে শুরু করেছি। in মানে মধ্যে।

মানেটা তাহলে দাড়াচ্ছে আমি ভুল ইংরেজীর মধ্যে ডুবে যাচ্ছি। আমিতো ভাষার মধ্যেই ডুবে যেতে চাইছি। ভাষার সাথে চলতে চাইছি না। in টাই ঠিক আছে। আমি আপাতত ভাষারটার মধ্যে এক লম্বা ঝাপ দেবো।

ভুল ঠিক বুঝি না। মনে হলো দাদুর সাথে কথা বলা যাক। এই যে ইংরেজী নিয়ে লেগে পড়েছি তার কাছে একটা confess করা দরকার। আমি যা মনে আসে দাদুকে উদ্দেশ্য করে লিখতে শুরু করি। Cause I have grown up. Perhaps it seems funny to you. May be it makes you angry. What wastage of time! May be the old memories have awaken. Many many times you asked the me to read English . But the poor boy simply denied, shouted & denied. `No & no. I never learn English. Does mother know any English word? No. So? Why do you force me to learn such type of language that my mother doesn’t know?’ Then you made yourself a full stop. Yes, I did it a very wrong way. I played a emotional game. You couldn’t say anything to a motherless boy. But reaching at the age of 28 I need a job to survive. But in our society, you know very well Grandpa- one has no need to know his own language to get a good job in the market. But knowing English is vital. That I need. So I’ve decided to learn English. & this effort for writing a diary in English is the first step for that. `English is not a far-off language, it is an international language’ – I said to myself. I try to forget its colonial history for that I hate English from my soul. But now, I try to adapt myself. Sorry grandpa. For what that I’m going to do today. For what that I said to you before. I know my every fault makes a lot of pain to you. But I know much more than that - at the end; always - you pardon me. I love you Grandpa, I love you & I know always - YOUR grace belongs to me all over the life. লেখাটা শেষ করে ভাল লাগে।

যদিও দাদুর কাছে সবকিছু ঠিক খোলাসা করে বলা হলো না। কিন্তু আমি জানি দাদু ঠিকঠাক বুঝে নেবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।