আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিটাগংয়ের তামিম আছে ঢাকার আশরাফুল আছে অথচ আমাদের খুলনার রানা নাই ।বন্ধু সবাই তোমাকে ভুলতে পারে আমি ভুলি নাই

uব্লগিং করলে নাকি জাতে উঠা যায় !জাতে ওঠার তীব্র আকুলতায় আমার নিকটজনরা খুব ভাল করেই জানে আমি ক্রিকেটের কতটা অন্তপ্রান !দিন নেই রাত নেই সারাদিন ব্যাট বলের লড়াই চালাতাম । এস এস সির টেষ্ট পরীক্ষা বিকেলে আর আমি সকালে ক্রিকেট খেলে বাসায় ফিরেছি দুপুর দেড়টায় । এইচ এস সিতে যুক্তিবিদ্যা পরীক্ষার আগের দিন খুলনার বাইরে খেলতে গিয়ে বাসায় ফিরতে রাত ১১ টা বেজে গিয়েছিল। পা ভেঙ্গে দুই ভাগ হয়ে গেছে কোমড় পর্যন্ত ব্যান্ডিজ ! বাথরুম করতে পারতাম না কিন্তু ক্রিকেট খেলে বেড়াতাম। দেীড়াতে পারতাম বলে উইকেটের পেছনে দাড়াতাম ।

খুলনায় বেড়ে ওঠা তাই স্বপ্ন দেখতাম বড় হয়ে সালাউদ্দিন কিংবা মন্জুর মতো ক্রিকেটার হব। তখনও বিহারী সেলিম জাতীয় দলে জায়গা পায়নি। একবার টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিলাম কাজদিয়া কলেজ মাঠে । তখন দু চারশ টাকায় ক্ষ্যাপ খেলে বেড়াতাম । সঙ্গী হল সেতু (মৃত),ওর ভাই মিতু,সজল,উপল,হিমেল,মানজারুল রানা (মৃত),আর ঠ্যাক বাবু (এই ভদ্রলোক ছিল চুইংগামের মতো আঠাল পিচ ছেড়ে উঠতে চায় না) তাই তাকে ঠ্যাক বাবু বলা হত ।

গ্রামন্চলে ক্ষ্যাপ খেলতে গেলে একটা ঝামেলা পোহাতে হয় । টিম যদি জিতে যায় তবে দুধ কলা দিয়ে আপ্যায়ন আর যদি হেরে যায় তাহলে ক্ষেপের টাকা আর জিবন দুইটাই হুমকীর মুখে পড়ে । তো যাই হোক উপর্যপুরী চেষ্টার পরও আমরা হেরে গেলাম। শনির দশা থাকলে আর কি হয় । বিপক্ষ দল তো বটেই নিজ দলের লোকজনই লাঠি সোটা নিয়ে তেড়ে আসল।

সব দোষ আমাদের। তাদের ধারনা আমরা শহুরে খেলোয়াররা বিপক্ষ দলের কাছ থেকে টাকা খেয়ে খেলেছি । আধুনিক কালে যাকে ফিক্সিং বলে । আমাদের তখন ছেড়ে দে মা কেদে বাচি । টাকার মায়া ত্যাগ করে যে যেদিকে পারলাম দেীড়াতে লাগলাম ।

আমার পালানোর সঙ্গী হল রানা । এক দেীড়ে রুপসা ফেরীঘাট । তখন রমজান মাস চলছিল। সন্ধায় এক মসজিদে ইফতার করলাম। নদী পাড় হয়ে হাটতে হাটতে টুকটাক কথা হল ।

অল্পক্ষনে বুজলাম ছেলেটি অত্যান্ত মিশুক এবং লাজুক প্রকৃতির । এরপর অনেকবার দেখা হইছে কথা হইছে । তবে প্রতিবারই খেলার মাঠে । কখনও নিজ দলে কখনও বিপক্ষ দলে । হটাত একদিন জাতীয় দলে ডাক পেল।

তারপরতো রানা ইতিহাস । বাংলাদেশের সর্বপ্রথম সিকৃত অলরাউন্ডার । আজ সেই রানার শহরে বাংলাদেশ টেষ্ট ম্যাচ খেলছে অথচ রানা নেই । সারা খুলনায় আজ আলো জ্বলছে অথচ আমাদের আসল আলো নেই । হাজারো তোরনে ছেয়ে আছে বাঘের শহরটি অথচ রানার নামে একটি তোরনও নেই ।

চিটাগংয়ের তামিম আছে ঢাকার আশরাফুল আছে কিন্তু খুলনার রানা নেই । যতদুর জানি আবু নাসের স্টেডিয়ামে রানার বাবারও কিছু জমি দান করা আছে। সেই মাঠে আজ বাংলাদেশ টেষ্ট খেলছে আবুল ইতিহাস গড়ছে । জানিনা রানার মা বাবা খেলা দেখেছে কি না । যদি দেখে থাকে নিশ্চয়ই দেখেছে তার এগারটি সন্তান ইতিহাসের অংশ হয়েছে ।

শারীরীক ভাবে হয়ত রানা নেই কিন্তু আবু নাসেরের প্রতিটি ঘাসের কনায় রানার স্পর্ষ আছে প্রতিটি খেলোয়ারের উপর রানার আশির্বাদ আছে । সবাই তোমাকে ভুলে গেছে রানা আমি তোমাকে ভুলি নাই । যেখানেই থাকে ভালো থেকো । সন্তানহারা মায়ের আহজারি রানার সাথে একই দুর্ঘটনায় নিহত আর এক উদিয়মান ক্রিকেটার সেতু ।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।