অসীমের পথে হেঁটে বড় ক্লান্ত... মনে হয় চারিদিকে সবই ভ্রান্ত... বড় কঠিন থাকা টিকে জ্যান্ত... তবু দেবোনা এই রণে ক্ষান্ত... আমি পথিক এক ক্লান্ত শ্রান্ত... দিবই পাড়ি পথ অসীম অনন্ত...
somewhereinblog এ সেফ হয়েছি বেশ কিছুদিন হল। তবে সেফ হওয়ার পর এটাই আমার প্রথম পোস্ট। যদিও মুভি রিভিউ বাদে অন্য কিছু নিয়ে লেখার খুব ইচ্ছা ছিল, কিন্তু আপাতত কিছু না পেয়ে অসাধারন একটি মুভির রিভিউ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি। ( বি.দ্রঃ এটি অবশ্য অনেক আগে আমরা ɯoʌıǝ পাগল™ বোইন qɹoʇɥǝɹ গ্রুপে শেয়ার করেছিলাম। )
“ …that death... is a gateway. Death doesn't mean the end, but leaving the present, heading for the next stage. Truly a gateway.”
মানুষ মাত্রই মরণশীল।
আর একটি মানুষের মৃত্যুর পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয় সেই মৃতদেহের সৎকার এর ব্যবস্থা করা। আপনি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন এই নিয়মের ব্যতিক্রম হবে না। আর অঞ্চল ও ধর্ম ভেদে সৎকার কিংবা দাফন-কাফন করার নিয়মও আলাদা। তবে সবনিয়মের মাঝে সাধারন মিল হচ্ছে সবাই যার যার রীতি অনুযায়ী মৃতকে যথাপোযুক্ত সম্মানের সহিত আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায় জানায়।
জাপানের মানুষদের সব ব্যাপারেই নিজস্ব কিছু রীতি-নীতি আছে।
আর মৃত্যুর পড়ে শেষ বিদায়েরও কিছু নিয়ম প্রচলিত আছে। তাদের কেউ মারা গেলে “Encoffineer” নামক একজন এসে মৃতের পরিবারের সামনে বসে যথাযথ সম্মান, মর্যাদা ও যত্নের সহিত মৃত দেহকে পরিস্কার পরিছন্ন করে সাজিয়ে গুজিয়ে সুন্দর করে কফিনে শুইয়ে শান্তিময় বিদায়ের জন্য প্রস্তুত করে দেয়।
জি ঠিকই ধরেছেন এই মুভি মৃত মানুশ ও তার সৎকার এবং সৎকারের জন্য মৃতদেহকে প্রস্তুতকারী এক “Encoffineer” এর জীবন নিয়ে। তবে এর বাইরেও জীবন মৃত্যু আর এর মাঝেই বিদ্যমান বহু উপাদান রয়েছে মুভিটিতে। মুভি দেখতে দেখতে চিন্তা করতে এবং মুভি দেখা শেষ করে যারা ভাবনার রাজ্যে ভাসতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এতি অতি আবশ্যিক এক মুভি।
“Departures” (original title: Okuribito)
২০০৮ সালে মুক্তি প্রাপ্ত Yōjirō Takita পরিচালিত জাপানিজ ভাষার জাপানি চলচ্চিত্র। ২০০৯ সালে ৮১ তম অস্কারের আসরে শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কার বিজয়ি মুভি এটি।
মুভির রেটিং: IMBD-8.1/10, Rotten tomatoes- 81% fresh, 88% liked it, Average rating: 4/5.
আমরা অনেক কিছুতেই বিফল হলে কিংবা অনেক স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেলে ভেবে বসি এটা বোধহয় ভাগ্যের নির্মমতা। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখি যে ভাগ্য আমাদের জন্য কি রেখেছে সামনে... এমন কিছুও তো থাকতে পারে যা কিনা আমাদের চিন্তাধারার বাইরে থেকেও আমাদের জীবনকে অসম্ভব রকম সুন্দর করে তুলতে পারে। যাদের ভাগ্য নিয়ে মনোকষ্ট আছে তারা মুভিটি দেখার চেষ্টা করবেন।
আশা করি নতুন কিছু উপলব্দি আসতে পারে মনে...
গল্পের শুরুতেই দেখবেন অর্কেস্টা ব্যান্ডের এক সেলো বাদক যে সদ্যই দল ভেঙ্গে দেয়াতে চরম হতাশার আঁধারে ডুবে আছে... তারপর পরিস্থিতির কারনে আজীবন লালিত স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে সেই সেলো বাদকের encoffineer এর চাকরি গ্রহন... তারপর এই কাজ করতে গিয়ে বহুবিদ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়া... মানুষের জীবন মরণ সম্পর্কিত অনেক ব্যাপারেই নতুন উপলব্দি হওয়া... মৃত্যু নামক এক চরম সত্যির প্রতি নানান মানুষের নানান প্রতিক্রিয়া, মৃতের প্রতি মৃতের পরিবার পরিজনের ভালোবাসার ধরন, encoffineer এর কাজের প্রতি অন্য মানুষের ধারনা সব কিছুই অনেক শান্ত স্থির কিন্তু মনকে নাড়া দেয়ার মত যথেষ্ট শক্তিশালি ভাবে তুলে ধরা হয়েছে... আর এরই মাঝে encoffineer এর নিজের মনের গোপনে কুঠিতে থাকা দুঃখকে অসাধারন সুর কম্পনে রূপান্তরিত করে মনের গভীর হতে সেলো বাজানো... আহ সে কি সুর!!! সেই সুর বড় বেশি বেদনাদায়ক... সেই সুর বড় বেশি মর্মস্পর্শী... সেই সুর বড় বেশি নিখাদ... সেই সুর বড় বেশি মূর্ছনাদায়ক... সেই সুর... আপনি নিজেও কিছুটা বুঝে নিয়েন...
মুভির স্ক্রীনপ্লে, ক্যামেরা কাজ গুলো ছিল যথেষ্ট খুতহীন। আর আলাদা ভাবে বলব অভিনয়ের কথা মূল চরিত্র Masahiro Motoki সহ বাকি সকল পার্শ্বচরিত্রের অভিনয়ও যথেষ্ট প্রশংসাদায়ক... এবং পরিচালকের অসাধারন পরিচালনাতেই মূলত এরকম সাধারন কাহিনী নিয়ে করা এক মুভি শেষ পর্যন্ত বড় বেশি অসাধারনে পরিনত হয়েছে...
সর্বশেষ কথা মুভি দেখে সেই মুভি নিয়ে ভাবতে এবং সাদাসিদা রকমের অসাধারন মুভি দেখতে যেসব পাগলরা পছন্দ করেন তাদের এই মুভি মিস করা উচিত হবে না...
আর মুভিটি দেখে কেমন লাগলো জানাতে অবশ্যই ভুলবেন না...
(ধন্যবাদ পোস্টটি কষ্ট করে পড়ার জন্য... )
মুভির নামঃ “Departures” (original title: Okuribito) (2008)
http://www.imdb.com/title/tt1069238/
টরেন্ট ডাউনলোড লিঙ্কঃ
Okuribito.Departures.2008.JPN.DVDRip.x264.AC3 1.78GB
অথবা
Departures.2008.BluRay.480p.H264 700MB
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।