ুসমুদ্রেই যার শিয়র শিশিরে তার কিসের ভয় আম্মুর ডায়বেটিছ আছে। গত কয়েকদিন ধরে মাত্রা অত্তাধিক বেড়ে গেছে আবার মাঝ রাতের দিকে কমে যায়। আর হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে সাথে খেতে পারছে না বমি বমি ভাব আর পেটের একদিকে বেথা করে। আম্মুকে বারডেমে ভর্তি করলাম।
সময়ঃ সন্ধ্যা ৬.৩০ - আম্মুকে নিয়ে বারডেম এর ইমারজেনছি তে ঢুকলাম।
আম্মুর ডায়বেটিছ আছে। উনি হটাত হাঁটতে পারছেন না, তাই তাকে নিয়ে যাওয়া। ইমারজেনছি তে ডিওটি ডাক্তার আম্মুকে চেক করে একটা কোমরের এক্স রে আর ডায়বেটিছ মাপতে বললেন। ২২ নম্বর কাউন্তারে টাকা জমা দিলাম। ডায়বেটিছ মাপলাম।
ডায়বেটিছ দেখাচ্ছে হাই, মানে মেশিন এ কুলাচ্ছে না। আম্মু আবার সেদিন সকালে ইন্সুলিন নেয় নি, কারন আম্মুর শরির ঘামছিল আর তার ধারনা ছিল যে তার ডায়বেটিছ কমে গেসে। ডাক্তার আম্মুর ইন্সুলিন পরিবর্তন করে নতুন ইন্সুলিন কিনতে বলেন, নভ রেপিড, যা আম্মু যেটা ব্যবহার করে তারচে দামি আর প্রায় দিগুন পাওয়ারফুল। ওই ইন্সুলিন ১৪ মাত্রায় পুশ করা হল। তারপর এক্স রে করলাম।
সাড়ে সাত টার দিকে আবার ডাক্তার দেখালাম। আবার ২২ নম্বর কাউন্টারে টাকা জমা দিলাম। ডায়বেটিছ মাপলাম। এবারও ডায়বেটিছ দেখাচ্ছে হাই, মানে মেশিন এ কুলাচ্ছে না। আবার ডাক্তারের কথামত ইন্সুলিন ওই ১৪ মাত্রায় পুশ করা হল (দ্বিতীয় দফা)।
ডাক্তার আধা ঘণ্টা পর আবার দেখাতে বললেন। ডাক্তার দেখালাম। আবার ২২ নম্বর কাউন্তারে টাকা জমা দিলাম। ডায়বেটিছ মাপলাম। এবারও ডায়বেটিছ দেখাচ্ছে ২৩।
আবার ডাক্তার দেখালাম। আবার ডাক্তারের কথামত ইন্সুলিন ১০ মাত্রায় পুশ করা হল(তৃতীয় দফা)। আধা ঘণ্টা পর আবার ২২ নম্বর কাউন্টারে টাকা জমা দিলাম। ডাক্তার দেখালাম। এর মধ্যে এক্স রে রিপোর্ট চলে এসেছে, সেটা নিয়ে ডাক্তার কে দেখালাম।
ইতিমধ্যে আম্মুর অবস্থা খারাপ। উনি নড়াচড়া করতে পারছেন না। দুই হাত কেমন যেন উল্টে গেছে। আমরা ডাক্তার কে অনুরোধ করলাম ভর্তি নেয়ার জন্য। ডাক্তার রিপোর্ট দেখলেন আর বললেন এটা কোন ব্যপার না, ডায়াবেটিছ কম্লে ঠিক হয়ে যাবে।
আর উনাকে বললেন একটা অরথোপেডিক এর ডাক্তার দেখাতে পরের দিন এসে। উনারা নাকি ডায়বেটিছ কমানর জন্য চেষ্টা করছেন, আর ডায়বেটিছ কম্লে ছেড়ে দিবেন। এদিকে আম্মুর অবস্থা দেখে আমাদের অবস্থা ত খারাপ। উনি বার বার বমি করছেন, আর কিছুই খাওয়াতে পারছিনা। উল্লেক্ষ্য যারা ইন্সুলিন এর ব্যপারে জানেন, তারা জানেন যে ইন্সুলিন নেয়ার পর খাওয়া জরুরি।
যাই হক ডাক্তার কে বার বার ভর্তির জন্য অনুরধ করছি কিন্তু উনি শুঞ্ছেন না। শেষে নার্স এর সাথে কথা বললাম, নার্স বলল যে এই ডাক্তার এর ডিউটি শেষ, নতুন ডাক্তার যিনি এসেছেন তাকে দেখাতে আর ভর্তির জন্য জোরাজোরি করতে। নার্স ও বলছেন যে তারাতারি ভর্তির ব্যবস্থা করেন, আমার মাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে উনার খুব কস্ট হচ্ছে। আর উনি বললেন এই ইন্সুলিন গুলার প্রভাব একটু পরে পরবে। যাই হক অনেক চেষ্টা করে অবশেষে আম্মুকে রাত প্রায় ১০ টার দিকে ভর্তি করান হল।
ভর্তির পর ডায়বেটিছ চেক করা হল প্রায় ২.২ !!! এদিকে আম্মু কেমন কেমন জানি করছেন। কেবিনে ডাক্তার চেক করল আর বললেন এত ইন্সুলিন কেন আম্মুকে দেয়া হল?আমরা সব বললাম। উনিও অবাক। আম্মুকে গ্লুকোজ দেয়া হল মোট ৩ বার। ডায়বেটিছ আর বারে না।
শেষে রাত প্রায় ১২.৩০ এর দিকে আম্মুকে স্যালাইন দেয়া হল। ডাক্তার বললেন আর আধাঘণ্টা দেরি হলে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা হয়ে যেত।
দ্বিতীয় দিনঃ ডিউটি ডাক্তার আবার আসলেন, যিনি কেবিনে চেক করেছিলেন রাতে, দেখলেন ডায়বেটিছ এবার অনেক বেশি। যাই হক উনি নতুন কিছু ঔষধ দিলেন কিছু কমালেন আর বললেন পা এর ব্যথা ডায়বেটিছ কম্লে ই ঠিক হয়ে যাবে। তাকে অনুরধ করলাম এক্স রে রিপোর্ট টা দেখতে, উনি দেখলেন না।
যাই হোক আম্মুর ডায়বেটিছ না কম্লেও পায়ের বেথা মনে হয় একটু কমেছে। উনি হাঁটতে পারছেন।
তৃতীয় দিনঃ আবার ডাক্তার এলেন রুটিন চেক করতে, আম্মু তার সমস্যা তৃতীয় বারের মত বললেন যেমনঃ বমি বমি লাগে, পেটের নিচের দিকে চাপ লাগে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি আবারো অনুরধ করলাম এক্স রে রিপোর্ট টা দেখার জন্য। এবার ডাক্তার দেখলেন আর যেন একটু ভয় পেলেন।
সাথে সাথে আর একজন কে ডাকলেন আর অবশেষে বললেন উনারা আম্মুর Pancreas এ পাথরের ভয় পাচ্ছেন। যাই হক একটু পর প্রফেসর লেভেলের একজন দেখলেন আর ultra sonogram করার পরামর্শ দিলেন। করালাম ultra sonogram। রিপোর্ট ও পেয়ে গেলাম সাথে সাথে। যাতে পাথরের সাথে সাথে আম্মুর কিডনিতেও সমস্যা ধরা পড়ল।
চতুর্থ দিনঃ এবার উনারা সিউর যে Pancreas এ পাথরের অস্তিত্ব আছে, যেটা অপারেশন করে রিমুভ করা লাগতে পারে, আর উনারা আর একজন বিশেষজ্ঞ রেফার করলেন। দেখলেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। উনি অপারেশন এর কথা কিছু বললেন না, শুধু আর একটা টেস্ট দিলেন আর রিপোর্ট টা নিতে বললেন।
পঞ্চম দিনঃ এবার ডিউটি ডাক্তার আর একজন প্রফেসর (যথাসম্ভব) কে দেখালেন, উনি বললেন একজন সার্জন কে দেখাতে আর উনি আম্মুর পা এর একটা এক্স রে দিলেন আর বললেন পা এর জন্য একজন অরথপেদিক দেখাতে। সার্জন এর ডাক্তার দেখলেন আর বললেন অবশ্যই অপারেশন করতে হবে আর সেটা ১৫ দিনের মধ্যে।
এখন আপ্নারাই চিন্তা করুন এরা কি ডাক্তার না অন্য কিছু??? সাধারন মানুষ যারা ইন্সুলিন এর সাথে বিন্দুমাত্র অভিজ্ঞ তারাই জানে যে ইন্সুলিন যে কি জিনিষ! আর একটা পাশ করা বারডেমের মত হাস্পাতালের ডাক্তার উনি কি জানে না? উনি আম্মুকে ২ ঘণ্টায় মোট ৩৮ মাত্রার ইন্সুলিন পুশ করাইছে!!! আল্লার রহমত যে উনি এর পরও বেঁচে আছেন। আর একটা মেডিকেল অফিসার ও যত্ন করে রিপোর্ট দেক্ল না। জোর করে দেখাতে হল। যদি না দেখত তাইলে ত রোগ ই ধরা পরত না। আর যে ছয় দিন রাখলাম ডায়বেটিছ নিয়ন্ত্রন ই করতে পারল না।
আফসোস। কার কাছে যাব যেখানে বারডেমের মত প্রথিতজশা হাসপাতালে এই ধরনের মানহীন সব ডাক্তারে ভরা।
আর খরচের কথা বলে বেহুদা মেগাবাইট নষ্ট করব না। অদের মূলমন্ত্র মনে হয় বারডেমের ইন্থডোর এ থাকার অধিকার কোন গরিব মানুষের নেই, কাজেই গরিব দের হাসপাতালে ভর্তি হয়ার মত ডায়াবেটিক থাকতে পারবে না
আর বারডেমের খাবারের কথা কি বলব বারডেমের ক্যান্টিন ঢাকার বিখ্যাত একদিনই খাবার সৌভাগ্য হয়েছিল এই অধমের... যা দেখলাম খাবার টাও গলা দিয়ে নামে নাই,পয়সাই লস মাছ কেটে সেই একি সরকারি মেঝের সরবোচ্চ বেবহার সাধনের জন্য সেই খানেই ফেলে রাখা হচ্ছে কাটা মাছের টুকরা ।
আমি যতটুকই জানি, বারডেম একটা বেসরকারি হাসপাতাল।
এখানের ক্যান্টিন টা ও অরা একটু দেখে না।
কিছু ভাল দিক ও আছে...
অবশ্যই প্রথমে আসবে নার্সদের কথা। ২/১ টা মিস্টেক করলেও অদের ব্যবহার খুব ই ভাল। সত্যি ওরা রোগীদের অনেক মেন্টাল সাপোর্ট ও দেয়।
আর রাত বিরাতে ডাক্তার দাক্লেও পাওয়া যায় ।
আর দুরমুল্লের বাজারে এটাও অনেক বড় পাওয়া ই বটে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।