ভয়াবহ এক দাঙ্গার শিকার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানরা। নতুন করে সৃষ্ট দাঙ্গায় সেখানে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৮৮ জন। মুসলিম অধ্যুষিত একটি গ্রাম বিলীন করে দেয়া হয়েছে। জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে মুসলমানদের ৪ হাজার ৬ শতাধিক বাড়িঘর। ফলে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২২ হাজার ৫ শতাধিক মানুষ।
কেউ কেউ পালাতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে। অনেকে ঠাঁই নিয়েছে পার্শ্ববর্তী কোন দ্বীপে। এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে সেখান থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালাচ্ছে মুসলমানরা। এমন অবস্থায় জাতিসংঘ এই দাঙ্গা মোকাবিলার জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে। মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ উপগ্রহ থেকে নেয়া একটি ছবিতে দেখিয়েছে মুসলিম অধ্যুষিত উপকূলীয় চাওপিউ এলাকার বসতি বিলীন করে দেয়া হয়েছে।
মিয়ানমার সরকারের এক মুখপাত্র এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। কিন্তু এ দাঙ্গা তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিবিসি জানিয়েছে ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, চাওপিউ শহরের আট শতাধিক বাড়ি, বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হয় এমন নৌকা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। থেইন শয়ে নামে এক রোহিঙ্গা বলেছেন, তারা তাদের ঘরবাড়ি, টাকাপয়সা সহ সর্বস্ব হারিয়েছেন।
পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে তারা পশু কোরবানি দিতে পারেননি। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গ মুসলিমদের মধ্যে বেশ কয়েক মাস ধরে চলছে এই দাঙ্গা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একজন মুখপাত্র বলছেন, রোহিঙ্গারা ‘হিংস্র’ আক্রমণের শিকার হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আক্রান্ত এলাকার মানুষ নৌকায় করে পালিয়ে যাচ্ছেন।
তারা একটি দ্বীপে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু তাদের আঞ্চলিক রাজধানী সিটয়ে শহরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। গত জুনে এক বৌদ্ধ নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এজন্য বৌদ্ধরা মুসলমানদের দায়ী করে। এ নিয়ে দাঙ্গার সূত্রপাত।
এর পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে এক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এর বেশির ভাগই মুসলমান। রাখাইনের প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গাকে স্বীকার করে না মিয়ানমার। তাদের দাবি, এরা বাংলাদেশ থেকে গিয়ে সেখানে বসতি গেড়েছে। মিয়ানমারের অনেকেই তাদেরকে ‘বাঙালি’ নামে অভিহিত কর।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।