যে সকল ছাগু আর ভাদা আসে আশপাশ, জীনের বাদশা তাদের পিছে দেয় মুলি বাঁশ। একটু দেরিতে হলেও ব্লগ লেখালেখিতে আস্তে আস্তে নিয়মিত হচ্ছি। আমি চাচ্ছি সব ধরনের,সব রকমের লেখা লেখতে। আগের লেখাটা মোটামোটি সিরিয়াস ধরনের ছিল,সেটার কপালে কি হয়েছে এখন পর্যন্ত বলতে পারছিনা। তবে আবারও পুরাতন ধারায় ফিরে যাচ্ছি,মানে হাস্য-রসমূলক।
এই ঘটনাও আমার স্কুলে পড়াকালীন সময়ের। কথা না বাড়িয়ে মূল ঘটনাতে চলে যাচ্ছি।
তখন সম্ভবত ক্লাস এইটে কি সেভেনে পড়ি। বিচিত্র সব সহপাঠীদের সাথে থেকে আমার বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা হয়েছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে,আমার ক্লাসে এমনসব ছেলেমেয়ে ছিল,যারা পরীক্ষার খাতায় জ্ঞান প্রকাশের নামে এমন সব প্রতিভার প্রকাশ ঘটাতো,যা দেখে আমার নিজেরই আক্কেল-গুড়ুম হয়ে যেত।
প্রাইমারি আর হাইস্কুলের পরীক্ষার খাতা আমাদের মত কচিকাঁচাদের জন্য খুবই সিরিয়াস ব্যাপার ছিল,সেই খাতা নিয়েই আমার সহপাঠিরা এমন সব অদ্ভুত কাণ্ড করত,যা পুরা স্কুলে মুখরোচক সব ঘটনার জন্ম দিত। এইবারেরটাও সেইরকম একটা ঘটনা। ইসলাম শিক্ষা পরীক্ষা হচ্ছে,একটা প্রশ্ন এসেছে,ফেরেশতা কাকে বলে? তাদের কাজ কি? এবং তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। মোটামোটি সবাই এর উত্তর জানে,সেটা হচ্ছে অনেকটা এইরকম-ফেরেশতা আল্লাহতায়ালার বিশেষ সৃষ্টি বা বান্দা। ফেরেশতারা নূরের তৈরী।
তারা আল্লাহর নির্দেশে বিভিন্ন কাজ করে এবং আসমান জমিনে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করে। ফেরেশতাদের আহার নাই,নিদ্রা নাই এবং বিশেষ বিশেষ ফেরেশতা আল্লাহর নির্দেশে বিশেষ বিশেষ কাজ করে। উদাহরনস্বরূপ, ফেরেশতা জিবরাঈল আল্লাহর ওহী বা বানী নবী-রাসূলদের কাছে পৌছে দেয়। অল্প নম্বরের জন্য এর চেয়ে বেশী লেখার দরকার নেই।
আমরা পিচ্চিরাও উপরে উল্লেখিত উত্তরটাই লিখলাম।
কিন্তু আমাদের ক্লাসের ইকবাল নামের ছেলেটা ছিল মহা ত্যাদড় প্রকৃতির। সহজ সব প্রশ্নের জবাবে উদ্ভট সব কথা লেখার অভ্যাস ছিল তার, তাই ফেরেশতা সংক্রান্ত এই সব পুথিঁগত গাল-গল্প তার মোটেও পছন্দ নয়। পরীক্ষার হলে আড়ঁচোখে দেখলাম, আমাদের ইকবাল ক্রমাগত কলমের মাথা কামড়াচ্ছে আর আকাশ-বাতাস এক করে কি যেন ভাবছে। আমরাও ভেতরে ভেতরে অনেক উৎফুল্ল্য বোধ করলাম আর পরীক্ষার খাতায় ইকবালের আসামান্য প্রতিভা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। যথারীতি পরীক্ষার পর,পরীক্ষার খাতা দেখানোর সময় এল।
সবার খাতা দেবার পর আমাদের ইসলাম শিক্ষার হুযুর ইকবালকে ডেকে সবার সামনে নিয়ে গেলেন এবং সে উত্তরপত্রে কি লিখেছে তা সবাইকে পরে শুনাতে বললেন,আমাদের মহাজ্ঞানী ইকবাল ফেরেশতা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে কি লিখেছিল তা হুবহূ তুলে ধরা হল,ইকবাল লিখেছিল,ফেরেশতা এক প্রকার অলৌকিক জীব,তারা নূরের তৈরি,আমরা সবাই জানি নূর মানে হচ্ছে আলো,আর আলোর একটি অনন্য রুপ হচ্ছে আগুন। আমরা সবাই এও জানি আগুন পানি দিলে নিবে যায়। তাই যুক্তিপূর্ন বিচারে বলা যায়,ফেরেশতা পানিতে পড়লে মারা যায়। আমাদের চারপাশে পানির অন্যতম উৎস হচ্ছে,পুকুর। গত পরশু আমদের পাশের বাড়ির পুকুরে পড়ে গিয়ে একখানা ফেরেশতা মারা গিয়েছে।
ইন্না লিল্লাহে ও ইন্না ইলাহে রাজিউন, মরনের সময় তার বয়স কত হয়েছিল তা অজানা। আসুন আমরা সবাই তার রূহের মাগফিরাত কামনা করি।
এইখানে একটা কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করার মত, আমাদের ইসলাম শিক্ষা হুযুরের রাম-ধোলাই ছিল জগৎ বিখ্যাত। বহু ছেলে কাপড়-চোপড়ে Instant হাগা-মুতা করে দিত এই হুযুরের মার খেয়ে। ইকবালের কপালে কি হয়েছিল তা আশা করি সবাই বুঝতে পারছেন।
পরের সাতদিন আমরা ইকবালকে স্কুলে দেখি নাই,তার ছুটি চাহিয়া আবেদনপত্রের বিষয়ের স্থানে লেখা ছিল- পশ্চাদদেহে প্রচন্ড প্রদাহের কারনে ছুটি চাহিয়া আবেদনপত্র।
সবাইকে আমার লেখা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। মন্তব্য করে উৎসাহিত করলে খুশি হব। সবাইকে নিরন্তর শুভেচ্ছা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।