আগের পর্ব এর জন্য এখানে ক্লিক করেন
ডেসটিনেশন কোঁটা বারু!!!
সকাল ১০.৪৫ এ আমরা প্লেন এ উঠলাম ১১.৪৫ এ কোঁটা বারু এয়ারপোর্ট এ নামলাম মাত্র ১ ঘণ্টার ফ্লাইট। এয়ারপোর্ট দেখেই সবার মন আরও খারাপ। না আমি অন্যকিছু মিন করে বলেনি অনেক ছোট এয়ারপোর্ট মনে হল না এই শহরে তেমন ভালো কিছু দেখা যাবে। যাই হোক এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে আগে কিছুক্ষণ পাফিং ;-) করে নিলাম। অন্যদিকে বাকি টিম টেক্সি রেন্ট করতে লেগে গেল।
একটা সেডান আর একটা কার ভাঁড়া করা হল ৮৫ রিঙ্গিত করে নিল। এবার জেটি যাওয়ার পালা, ওখান থেকে সব আইল্যান্ড এ যাওয়া যায়।
ট্যাক্সি তে উঠে ভাবছি কেমন হবে সেই জায়গাটা। যাই হোক জেটি যাওয়ার পর ওখানে অনেক বোট ট্রাভেল এজেন্সি আছে, আমাদের ড্রাইভার যে ট্রাভেল এজেন্সি অফিস এ নামিয়ে দিয়েছে আমরা সেই ট্রাভেল এজেন্সির কাছে গিয়ে টিকিট নিলাম পার হেড ৮০ রিঙ্গিত করে লাগলো আসা এবং যাওয়া। এখন আপনি যে দিন এ আসেন আসতে পারেন রিটার্ন টিকিট দিয়ে।
যাই হোক এখানেও একটা সমস্যা ফেস করলাম, কারন ঐ দিন ঐ ট্রাভেল এজেন্ট এর একটা বোট নষ্ট হয়েছে। মনে হল আমাদের যাত্রা তা মনে হয় শুভ না প্রথম থেকেই একটার পর একটা ঝামেলা পিছু ছাড়ছে না। যাই হোক ১ টার সময় বোট আসবে বলে সেই বোট আসলো ২.৩০ এ। এই সময় টা আমরা আমাদের দুপরের খাবার খেয়ে নিলাম। খাবার টা সত্যি অনেক ভালো ছিল সি ফুড আর রান্না টা ছিল থাই।
ওম্ম ম…ম এখনও মনে হয় চোখ বন্ধ করলে সেটার স্বাদ টা কেমন ছিল ফিল করতে পারব।
এক্সাইট মেন্ট এর শুরু!!
দেখছি অনেকেই যাচ্ছে “big island, small island” এর দিকে। কিন্তু আমাদের বোট দেখে তো আমার মাথা খারাপ হয়ে গেল সালার এত ছোট বোট কেমনে ১০ জন এর মত লোক কে নিয়ে যাবে? শেষ পর্যন্ত বোট এ উঠলাম সবাই যখন ঠিক সমুদ্র এর কাছে চলে গেল বোট, ভাই কি আর বলবো স্পীড বোট আর পানিতে থাকে না সেদিন ওয়েদার ভালো ছিল না তাই ওয়েভ অনেক বেশী ছিল। কিন্তু এটা একটা এক্সাইটিং পার্ট ছিল, সবাই ভিজে গেলাম একজন সেই ঢেউ এর দুলনিতে বমি করে ফেলল বুঝেন তাহলে কেমন লাফা লাফি ছিল। আর তখনি মন হল এটা সত্যি একটা ভালো ভ্রমণ হতে যাচ্ছে।
যখন আইল্যান্ড এ পোঁছালাম ও ম্যান “ ইটস এ রিয়েল প্যারাডাইজ বীচ ” সত্যি মনে হল এমন একটা আইল্যান্ড এ কখনও যাব ভাবতেই পাচ্ছিলাম না।
পানি নীল, হোয়াইট ক্লিন স্যান্ড বীচ, বীচ এর সামনেই থাকার রুম, ছোট কটেজ টাইপ এর। ডিনার করছেন বীচ এর সামনে। বীচ থেকে ঢেউ এর শব্দ শুনতে পাচ্ছেন এবং নিল পানি আকাশের সঙ্গে মিশে আরও নিল হয়ে গেছে দেখতেও পাচ্ছেন কেমন ফিল হবে ভাবুন একবার। বোট দিয়ে আসার সময় আপনি আইল্যান্ড গুলো দেখতে পারবেন আর দেখে মনে হবে সব গুলোতেই যাবেন কিন্তু এত কম সময়ে আপনি সব আইল্যান্ড যেতে পারবেন না।
মিনিমাম এক সপ্তাহ হলে হয়ত কিছু আইল্যান্ড আপনি শেষ করতে পারবেন।
বোট থেকে নেমে আমরা রিসিপ্সন এ গেলাম আর রুম নিলাম যেহেতু আমরা ৭ জন ছিলাম এর জন্য আমাদের কিছু সুবিধাই হল আমরা ওদের ফিক্সড প্যাকেজ নিলাম এতে কিছুটা সেভ হল আমাদের। রুম নেয়ার কাজ শেষ করে প্রথম কিছু ছবি নিলাম আশে পাশের অবশ্যই নীল পানির বীচ তো আছেই। এর পর সুমিং আপ্রন পরে বীচ এর দিকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত থাকলাম। কারন ডিনার ৭ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত সারভ করে।
রাতে ডিনার করার যায়গা থেকে আপনি বীচ এ পানির শব্দ এবং বীচ দেখতে পাচ্ছেন, অন্যরকম একটা অবিজ্ঞতা ওটা ঠিক বলে বুঝান যাবে না। সামনে আরও এক্সাইটিং যে কি অপেক্ষা করছে চিন্তা করছি। একটা মজার বাপ্যার হছে ঐ আইল্যান্ডে ওয়্যারলেস ইন্টারনেট ও আছে সো রাতে বীচ এর পাশে বসে বসে নিজের পারসনাল কাজ টা সেরে নিলাম। রাত ১১ টার সময় ঘুমাতে গেলাম।
সকালে ভোঁর ৬ টায় ঘুম থেকে উঠলাম কারন হচ্ছে বীচ এর আশপাশ টা দেখে নেয়া আর কি যেনে নেক্সট প্লান টা টিক মত করা যায়।
কিছু ল্যান্ডস্কেপ ও নিলাম যদিও আমি কোন প্রফেশনাল না কিন্তু ঐ বীচ যাই তুলবেন তাই সুন্দর আসবে প্রফেশনাল না হলে ও চলবে।
Snorkeling
এই আইল্যান্ড এর সবচেয় বড় আকর্ষণ হচ্ছে এটা, কারন এই আইল্যান্ডে যে কোরাল আছে এগুলো অনেক সুন্দর না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। সঙ্কালিং করার সময় আমার এটাই মনে হয়েছে এটা দেখতে না পারলে জীবন টাই বৃথা। এত সুন্দর কোরাল আর বিভিন্ন কালারের মাছ এটা দেখার পর আপনার মনে হবে পুরা ত্রিপ টাই আপনার ১০০ ভাগ সফল।
এই পর্বের পানির নিচের ১ টা ফডু গুগুল মামার কাছে ধার নিছি কারন আমার ওয়াটার প্রফ ক্যামারা ছিল না আর আপনাদের একটা ধারনা দেয়ার জন্য আর বাকি সব ছবি আমার তোলা।
সবচেয়ে যেটা ভাল লেগেছে সিকুউরিটি নিয়ে কোন চিন্তা নাই এখানে। ফিরে আসার পর খারাপ লেগেছে এটা ভেবে আমাদের দেশে এমন কিছু যায়গা আছে যেগুলো কে একটু পলিস করলেই লাখ লাখ ডলার ইনকাম করা যেত। যেটা আমাদের বাংলাদেশ সরকারের মাথা মোটা লোক গুলো কে দিয়ে হচ্ছে না।
আর লিখতে ইচ্ছে করছে না এখন ফডু দেখেন ও যাওয়ার আগে কিছু টিপস দেই।
১।
৩ সপ্তাহ আগে টিকিট করবেন যদি কোন ন্যাশনাল হলিডে থাকে
২। ৩ সপ্তাহ আগে টিকিট অনলাইনে কাটলে অনেক কমে পাবেন
৩। KLCCT এয়ার পোর্ট থেকে আপ ডাউন ৮হাজার এর মধ্যে হয়ে যাবে
৪। কোটা বারু এয়ার পোর্ট থেকে জেটি পর্যন্ত ৮০ রিংগিত এর মত নিবে মানে ২ হাজার টাকার মত
৫। হোটেল বুক দিয়ে আসতে পারলে ভাল (ন্যাশনাল হলিডে তে অবশ্যই হোটেল বুক দিয়ে আসতে হবে)
৬।
হোটেল ভাড়া ১০ হাজার এর মধ্যই হয়ে যাবে ৩ বার খাবার সহ। আপনি চাইলে খাবার ছাড়াও হোটেল ভাড়া নিতে পারেন।
৭। সঙ্গে কিছু কিট, কিছু শুকনো খাবার অবশ্যই নিয়ে আসতে হবে
৮। ট্যাক্সি ড্রাইভার এর দেখানো বোট সার্ভিস এ না গিয়ে একটু যাচাই করে বোট এর টিকেট নিলে ভাল হবে
ভাল থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
আবারও ঈদ মোবারক।
[img|http://ciu.somewherein.net/ciu/image/49943/small/?token_id=c0620299f40fc6cb9ee62acdd584d856
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।