I am what I am and that's how I would be. No I am not stubborn. I just want to be myself. গল্প- প্রহেলিকায় বিরতি -১
গল্প- প্রহেলিকায় বিরতি -২
৪।
“অবাক হওয়ার কী আছে? আমি ব্যস্ত থাকতেই পারি! কাজেই তো গিয়েছি, কিভাবে সময় পার হয়ে গিয়েছে টেরই পাইনি। ” রুম্পার লিভিংরুমের ডিভানে হেলান দিয়ে আছে আফতাব। ফ্লোরে বসে রুম্পা বকবক করে যাচ্ছে। আফতাব বুঝতে পারছেনা সে রুম্পাকে কিভাবে বলবে।
“জানো আমার প্রেজেন্টেশনের পরে ওরা আমাকে সামনের মাসে আরেকটা কনফারেন্সে ডেকেছে। আমাদের প্রপোজাল ওদের খুবই ফিজিব্ল মনে হয়েছে...কি হলো, তুমি কি ঘুমিয়ে পড়লা নাকি?” রুম্পা কথা থামিয়ে অবাক হয়ে তাকালো।
“নাহ্ কিছুনা, একটু মাথাব্যাথা করছে। ” উঠে এসে রুম্পা আফতাবের পাশে বসলো। তার মাথায় হাত রাখলো।
“বাসায় চলে যাও। রেস্ট নাও। আমিও একটু রেস্ট নেবো। ভীষণ টায়ার্ড হয়ে আছি। একগাদা পেন্ডিং কাজ, রাত জেগে শেষ করতে হবে।
”
আফতাব রুম্পার হাত ধরে রাখলো তার কপালের উপর। “আমি কি এখানে রেস্ট নিতে পারিনা? বাসায় যেতে ইচ্ছে করছেনা। আই মিস্ড ইউ। আ লট। ইচ্ছে করছে আরও অনেকক্ষণ থাকি এখানে।
তোমার সাথে?” আফতাবের চোখে মুখে আকুতি। রুম্পা কী করবে বুঝতে পারলোনা। একটু বিরক্তও লাগছে তার। সাতদিন গাধার মত খাটাখাটনি করার পর বাসায় মেহমান এন্টার্টেইন করার মত এনার্জি তার নেই।
“থাকতে চাইলে থাকতে পারো, তবে আমি এখন ফ্রেশ হয়ে একটু শোবো।
আমাকে ডিস্টার্ব না করে তুমি তোমার মত রেস্ট নিতে পারো। ” রুম্পার কন্ঠে কি একটু কাঠিণ্য টের পেলো আফতাব? ছয়মাসে তাদের একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, বন্ধুত্ব থেকে হয়তো খানিকটা বেশি। রুম্পার জন্যে হয়তো এটা নিছকই বন্ধুত্ব কিন্তু আফতাব যে তার জন্যে আরও বেশি ভাবে, সেটা কি সে টের পায়না? “আমিও যদি তোমার সাথেই শুয়ে থাকি? আমরা দুজনে তো একসাথে রেস্ট নিতে পারি?” রুম্পা হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো, আফতাব আরও শক্ত করে ধরে রাখলো তাকে।
“দেখো, আমি সত্যি টায়ার্ড। এমন কাজ করতে চেয়োনা যাতে রিগ্রেট করতে হবে।
তাছাড়া আমি একেবারেই একা থাকতে চাইছি, একটু ডীপ স্লীপের দরকার আমার। তুমি চাইলেই তো আর হবেনা, একসাথে শুয়ে থাকার মত রেস্ট নেওয়ার ইচ্ছে আমারও তো থাকতে হবে!” হাতটা টেনে ছাড়িয়ে রুম্পা উঠে দাঁড়ালো। আফতাব একটু আহত হলো। সেও বসে জুতা পায়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। রুম্পা একটু দূরে দাঁড়িয়ে দেখলো, কিছু বল্লোনা।
“আমি হয়তো একটু বেশিই ডিম্যান্ড করে ফেলেছিলাম, আসলে কিছু ব্যাপার শেয়ার করার দরকার ছিল। এনিওয়েজ, চলি। তুমি রেস্ট নাও। ” দরজার দিকে এগুতে এগুতে আফতাব বল্লো। তার শক্ত চোখমুখ দেখে রুম্পা এগিয়ে এলো “কী শেয়ার করতে চেয়েছিলে তা তো জানিনা, তবে কিছু কিছু লাইন শুরুতেই ড্র করে না রাখলে পরে ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে বই কমে না।
আমি তোমার ভালো বন্ধু, এটা জেনে রেখো। সত্যিকারের বন্ধু পাওয়া খুবই টাফ, হাল্কা কোনও চাওয়া-পাওয়ার গন্ডীতে টেনে সেই বন্ধুত্বকে নষ্ট করার মত বোকামি আমি করবোনা, আশা করি তুমিও বুঝবে। ” আফতাব দরজা খুলে বেরিয়ে যাচ্ছিলো, এই কথা শুনে ঘুরে দাঁড়ালো। “খুব ভালো বন্ধু? লাইন ড্র করে দিলে? এরকম ভালো বন্ধু তোমার ক’জন আছে হাতে গুনে জানাতে পারো?”
রুম্পার চেহারা চোখের পলকে অন্ধকার হয়ে গেলো। তার চোখদুটোতে জমাট বাঁধলো ক্রোধ।
খুবই মেপে মেপে, ঠান্ডা গলায় সে বল্লো “আমাকে নিয়ে কষ্ট করে কিছু ভাবার দরকার নেই তোমার, কারণ আমার লাইফটাই ওপেন। তোমার মত বদনসিব নই যে একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক নিয়ে আমার লুকাছাপা করতে হবে। যা বলতে চাও আমাকে নিয়ে, পরিষ্কার করে দেখে, জেনে আমার মুখের উপরেই বলতে পারো। টিপিক্যাল মেইল ডিম্যান্ড নিয়ে মনের ভেতরে জল্পনা কল্পনা করতে হলে অন্য কাউকে খুঁজে নাও, আমার কাছে আর এসোনা। ” রুম্পার কন্ঠে এমন কিছু ছিলো যে আফতাব ভুল বুঝতে পারলো।
সে এগিয়ে এসে রুম্পার হাত ধরতে গেলে রুম্পা সরে গেলো। “দয়া করে দুঃখিত টাইপ কিছু বলতে এসোনা। নিজেকে চেনার চেষ্টা করো আগে, তারপর আশেপাশের মানুষদের চেনো। আমি লুকাবো না, পালাবোও না। এবার এসো।
” আফতাবের চোখের সামনে দরজাটা বন্ধ হয়ে গেলো।
প্রায় পাঁচ মিনিটের মত আফতাব তাকিয়ে থাকলো বন্ধ দরজার দিকে। তার হলোটা কী? সে কি বেশি ডিম্যান্ড করে ফেলেছে আজকে? এর আগেও রুম্পার বাসায় ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়েছে, ঘরে ফিরতে রাত করেছে, কই এমন তো করেনি সে? নাকি এক বিছানায় শুতে চাওয়াতে রুম্পা রেগে গেলো? আফতাব বুঝতে পেরেছে তার ওভাবে বলা উচিৎ হয়নি। আসলে সাতদিন প্রতীক্ষায় কাটানোর পরে তার মাথা খারাপের মত অবস্থা হয়ে গিয়েছিলো রুম্পাকে কাছে পেয়ে। ইস, আফসোস রাখার আর জায়গা নেই।
এটা কী হলো?
৫।
শোভনকে স্কুলের হোমওয়ার্ক করাচ্ছে কুহেলী। ঘরে আজ পাঁচদিন ধরে মেহমান, ওর পড়াশুনা লাটে উঠেছে। আফতাবের ছোটমামি, গ্রামে থাকেন, ঢাকায় এসেছেন কিছু ডায়াগনোসিস করতে। সাথে ওনার ছেলে আর গ্রামের আরেকজন মহিলা, সেও দুঃসম্পর্কের আত্মীয়া।
শোভন খুব খুশী ওনাদের পেয়ে। ঘরে মেহমান এলে সে খুব খুশী হয়। কুহেলীরও বেশ ভালো লাগে। ছোটমামি বেশ আলাপি, অনেক গল্প করেন কুহেলীর সাথে। উনি আসার পর থেকে শোভাকে একফোঁটা চোখের আড়াল করছেন না, কুহেলীরও একটু রেস্ট হচ্ছে।
বাচ্চাগুলো ভীষণ মা-ন্যাওটা হয়েছে। অবশ্য না হয়ে উপায় কী? ওদের বাবার তো ঘরে ফিরতে ফিরতে সেই রাত। বাচ্চারা হয়তো ততক্ষণে ঘুমে, নাহয় ঘুমানোর আয়োজনে।
“আরেকটু বাবা, আর এক পেইজ লিখে নাও তারপর ছুট্টি!!” শোভন কিছুতেই আর লিখবেনা। দু’হাত মুঠি করে সে খাতার দিকে তাকিয়ে আছে।
“মা, আমার খাতায় পেইজ ছেঁড়া!!” খাতার শেষের দিকের কয়েকটা পাতা নেই, শোভন দেখালো কুহেলীকে। আসলেই তো ছেঁড়া, কুহেলী নিজেই তো ছিঁড়েছে। এখন ছেলেকে কী বলা যায়? “এম্মা, তাই তো! কে ছিঁড়লো?” ভ্রু কুঁচকে কুহেলী খাতাটার দিকে তাকিয়ে থাকলো। চিঠিগুলো নিয়ে আফতাব ওকে কিছু বলছেনা। কুহেলী কি আরও লিখবে? তার যে অনেক অনেক কথা বলা বাকী! সাত বছরের একটু একটু করে জমানো কথা কি এক দুইপাতায় লিখে বলা যায়?
মা-কে খাতার দিকে আনমনে তাকিয়ে থাকতে দেখে শোভন সন্তর্পণে নেমে গেলো চেয়ার থেকে।
দিদা সেই কাঠুরিয়ার গল্প এখনও শেষ করেনি, পা টিপে টিপে সে চলে গেলো গেস্টরুমের দিকে। কুহেলী দেখেও না-দেখার ভান করলো।
আজ বেশ কয়েকমাস ধরে কুহেলী আফতাবকে খেয়াল করছে, জেনেছে অনেক কিছু, বুঝতে পেরেছে পরিবর্তন। আফতাবের সাথে তার কিছু ব্যাপারে কথা বলা দরকার। চিঠি ছাড়া উপায় কী আর? সামনাসামনি কতটুকুই বা বলা যায়? সেরকম পরিবেশই বা কোথায় বলার মত? আবার লিখতে হবে, আরো লিখতে হবে, কে জানে পরে সময় হবে কি হবেনা।
ওর ঘরে ফিরতে এখনও ঘন্টা চারেক বাকি। বাচ্চারা ছোটমামির সাথে দিব্যি খেলছে। এই ফাঁকে লিখে ফেলা যায়। বাসায় তো শোভনের খাতাগুলো ছাড়া আর খাতা নেই। আবার দোকান থেকে গিয়ে কিনে আনা ঝামেলা।
আছে আরেকটা খাতা, হঠাৎ মনে পড়লো কুহেলীর। চেস্ট অফ ড্রয়ারের নীচের ড্রয়ারের পেছন থেকে বের করে আনলো অনেক পুরোনো একটা মোটা ডায়রী। কুহেলীর গানের খাতা।
“ভালোবাসা যে কী, তা কি আর আমি জানি? সবাই বলে ভালোবাসার উল্টোপিঠে নাকি ঈর্ষা, কিন্তু আমার তো ঈর্ষা হয়না! একেবারেই হয়না, তুমি চাইলে পরীক্ষা করে দেখতে পারো। আমার ভালোবাসা তারমানে ভেজালে ভর্তি, তাই না?
জানো শোভনকে গতকাল বিকেলের দুধ বানিয়ে দেওয়ার সময় অনেক পুরোনো একটা ঘটনা মনে পড়লো।
দুধ বানিয়ে দিয়েছেন ছোটমামি, শোভন কিছুতেই খাবেনা। সে বলছে মা বানিয়ে না দিলে আমি দুধ খাবোনা। মামি মিথ্যে করে বল্লেন যে দুধটা নাকি আমিই বানিয়ে দিয়েছি। শোভন বলে বসলো মিথ্যে কথা, মা বানালে দুধের গ্লাসে মায়ের গায়ের গন্ধ লেগে থাকে। শেষে আমি নতুন করে ওকে দুধ বানিয়ে দিলাম, তারপর সে খেলো।
মনে আছে বিয়ের পরপর একদিন অফিস থেকে কোনও নোটিস ছাড়াই ভরদুপুরে ঘরে ফিরেছিলে? আমি তখন ঘরের কাজ শেষ করে গোসলে যাবার প্রিপারেশন নিচ্ছি। দরজা খুলে তোমাকে দেখে আমি অবাক, আর আমাকে জড়িয়ে ধরে তুমি মহা বিরক্ত। বলেছিলে-আচ্ছা তোমার গা থেকে সবসময় এমন কিচেন টাইপ গন্ধ আসে কেনো বলো তো? সেসময়ে তোমাকে ভীষণ ভয় পেতাম। খুব নার্ভাস হয়ে তোমার কাছে দশ মিনিট সময় চেয়ে বাথরুমে চলে গেলাম। প্রাণপণে মুছে ফেলতে চাইলাম গা থেকে তেল-নুন-মসলা-রসুনপেঁয়াজের যত গন্ধ।
ফ্রেশ হয়ে ফিরে এসে দেখি তুমি উধাও। আমি কাঁদতে বসলাম। গতকাল, ছেলের এই আব্দার শুনে মনটা ভরে গেলো, জানো? আমার এই কিচেন টাইপ গন্ধ আর মুটিয়ে যাওয়া শরীর নিয়েই সে আমাকে ভালোবাসে।
সৃষ্টিকর্তা আমার জীবনটা দুকুল ছাপিয়ে ভরে দিয়েছেন, আমার সন্তান শোভন আর শোভাকে দিয়ে। জানি তুমি আমার জীবনে না-আসলে ওদের আমি পেতামনা।
তোমার কাছে এজন্যে আমি এত বেশি কৃতজ্ঞ যে বিনিময়ে তোমাকে কিছু দিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু এমন কপাল আমার দেখো, যা যা নিয়ে বসে আছি, সবই তো তোমারই দেওয়া। কী দেবো আমি তোমাকে বলো?
একটা কথা দিতে চাই। আমাকে তুমি পাশে পাবে, যখন যেভাবে চাও। ধরো আমি যদি তোমার স্ত্রী না-হতাম, আমার সাথে কি কথা বলতে না? হয়তো ভালোবাসতে না, কিন্তু বন্ধু কি হতে পারতে না? আমি জানি আমি গুছিয়ে বলতে পারিনা, লিখতে গেলেও গুলিয়ে ফেলি।
তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো, আমার কাছে তোমার কখনও কোনও কৈফিয়ত দিতে হবেনা। আমাকে কিছু জানানোর জন্যে তোমাকে দায়বদ্ধ থাকতে হবেনা। আমি জেনে গেলে ঈর্ষা করবো, ঝামেলা করবো এমন ভয়েরও কোনও কারণ নেই।
তোমার মন খারাপ দেখলে আমার ভালো লাগেনা। যদি মনে হয় কারো সাথে শেয়ার করলে মন ভালো হবে, আমার সাথে শেয়ার করে দেখতে পারো।
আমি মানুষটা সেকেলে হতে পারি, কিন্তু আমার ধারণা বন্ধু হিসেবে আমি ফুলমার্ক্স পাবো।
আর শোনো, বাসায় লিখালিখির জন্য ভালো কোনও খাতা নেই। একবার শোভনের খাতায়, একবার পুরোনো গানের খাতায় লিখতে বেশ প্রব্লেম হচ্ছে। কতকিছু লিখতে ইচ্ছে করে, কিন্তু লিখে মোটেও আরাম পাচ্ছিনা। একটা ভালো রাইটিং প্যাড গিফট করবে আমাকে? নাহয় কিন্তু আর চিঠি লিখতে পারবোনা, এইই শেষ।
”
৬।
আফতাব বেশ কয়েকবার পড়লো চিঠিটা। পড়তে পড়তে আপনমনে হাসলো। কুহেলীর সাথে গল্প হয়না বহুদিন। প্রায়ই এসেমেস করে, “আমার ফোনে পাচশ’ টাকা ভরে দাও তো, এক্ষুণি।
কথা বলতে বলতে লাইন কেটে গিয়েছে। ” সিনিয়র জুনিয়র নির্বিশেষে কুহেলী জমিয়ে আড্ডা দিতে পারে। কেন যেন আফতাবকে সে শুরু থেকেই ভয় পেতো, এড়িয়ে চলতো। অন্যকারো সাথে গল্প করার মাঝখানে যদি আফতাব সামনে পড়ে যেত, সে চুপ করে যেতো অথবা কথা শেষ করে ফেলতো। এই নিয়ে আফতাব তেমন খোঁচাখুঁচিও করেনি তাকে।
ডেস্কে রাখা নতুন রাইটিং প্যাড টেনে নিয়ে পৃষ্ঠা উল্টালো আফতাব।
“চিঠি লেখা বন্ধ করে দিলে তো আমার জানাই হবেনা, এতো কী কথা জমিয়ে রেখেছ? সামনাসামনি বলতে নিষেধ করেছিলে, তাই কষ্ট করে লিখতে হচ্ছে এখন। হাতের লেখা পড়তে না পারলে আমাকে দোষ দিয়োনা। প্রথম পাতায় আমি লিখে দিলাম, এর পরের পাতাগুলো তোমার। বন্ধুত্বের এইই হলো শর্ত।
শুধু আমি শেয়ার করলে তো হবেনা, তোমাকেও শেয়ার করতে হবে। তবে আমার ভালোবাসায় যতই কমতি থাকুক, আমি ভয়ানক ঈর্ষাকাতর। ” ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।