আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বংগভবনের ভেতরে

লেখক বইয়ের ভুমিকায় বলেছেন, বংগভবন আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতির বাসভবন এবং সরকারী অফিস। এর কার্যাবলী এবং ভেতরের মানুষের কাজকর্ম নিয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারনা নেই। অবশ্য সংবিধান সংশোধন করে সকল ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে চলে যাওয়ার পর, রাস্ট্রপতির কাজ কর্ম নিয়ে দেশের মানুষের তেমন আগ্রহও নেই। তবুও রাস্ট্রপতি দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ব্যাক্তি । ১/১১র মত রাজনৈতিক পটপরিবর্তন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ পদটি দেশের জন্য গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠে।

মতিঝিলের প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় আমরা অনেকেই এর পাশ দিয়ে হেটে যাই। মনে আগ্রহ থাকলেও জানতে পারি না, এর ভেতরে কী হয়! লেখকের ভাষায় -বংগভবন নিয়ে আমাদের ধারনা সত্য-মিথ্যা আর ভুল্ভ্রান্তি মেশানো। বংগভবন ছিল ঢাকার নবাবদের প্রমোদ উদ্যান। তারা এ জমি কিনেছিলেন আর্মেনীয় ব্যবসায়ী মিঃ মানুকের কাছ থেকে। মি মানুক যে বাড়ীতে থাকতেন, সেটি এখনো "মানূক হাঊজ" নামে বিদ্যমান রয়েছে।

বৃটিশরা নবাবদের কাছ থেকে লীজ নিয়ে ১৯০৫ সালে লাট ভবন নির্মান করেন। ১৯৪৭ এ লাটভবন হয় "গভর্নর হাউজ"। ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারীর পর থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের রাস্ট্রপতির সরকারী বাসভবন ও অফিস হিসেবে "বংগভবন" যাত্রা শুরু করে। এ হল তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। বংগভবন মোট আটান্ন একর জমি উপর অবস্থিত।

রাস্ট্রপতি ও কর্মচারীদের অফিস-বাসভবন-পুকুর বাদ দিয়ে মোট ৪৭ একর জায়গা এখনো উম্মুক্ত আছে। রাস্ট্রপতির সচিবালয়ের দুটি বিভাগ আছে। ১। আপন বিভাগ ২। জন বিভাগ।

দুখের বিষয় হলো যে এখানাকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোন প্রমোশন নেই। সারা জীবন একই পদে থেকে যেতে হয়। নিয়োগপ্রাপ্তরাও হন সেইরকম। সেনাবাহিনীর গোলযোগে নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী বা ক্ষমতাসীন কোন মন্ত্রী, এমপির আত্নীয়। লেখক যখন বংগভবনে ছিলেন তখন দেশের রাস্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আহসানউদ্দিন- সেনাপ্রধান এরশাদের ধামাধরা।

খাওয়া-দাওয়া ছাড়া তার কোন কাজ ছিল না। রাস্ট্রপতির খরচপাতির কোন অডিট হয় না,আমাদের সংবিধানেই এ সুবিধা রাস্ট্রপতিকে দেয়া হয়েছে। তাই একজন রাস্ট্রপতি চাইলে যত খুশি টাকা খরচ করে ভোজবিলাসে মত্ত থাকতে পারেন। রাস্ট্রীয় ভোজের সময় আমন্ত্রন পাওয়ার জন্য কত আমলা যে কত নাটক করে তার একটি বর্ননা লেখক দিয়েছেন। তবে প্রটোকল অফিসারদের মন জয় করে ভোজ সভায় যোগ দিয়ে রাস্ট্রপতির কাছাকাছি যেতে পারলেই কেল্লা ফতে।

তখনকার এক আমলা মোশাররফ হোসেন এভাবে এক অফিসারকে ম্যনেজ করে ভোজ সভায় যোগ দিয়ে এরশাদের কাছাকাছি পৌছেন । এর পর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরশাদের মন্ত্রী, বিএনপির এমপি মন্ত্রী এরপর নাইকো কেলেংকারীতে এখন চুপ। বংগভবনের ভিতরের জৌলুস দেখে বিদেশের কোন কোন রাস্ট্রদুত হতবাক হয়ে যান। বাংলাদেশ যে একটি হত-দরিদ্র দেশ সেটা তাদের বিশ্বাস হয় না।

কেউ কেউ সেই বিস্ময় প্রকাশ ও করেন। এই হল আমাদের রাস্ট্রনায়কদের অফিস কাম আবাসস্থল। বইঃ যখন বংগভবনে ছিলাম লেখকঃ ব্রিগেডিয়ার শামসুদ্দীন আহমেদ প্রকাশকঃ আগামী প্রকাশনী  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.