গনজাগরনের মাধ্যেমে পরিবর্তন সম্ভব....মানুষের চিন্তার পরিবর্তন করাটা জরুরি ....বুদ্ধিবৃত্তিক পুনরজাগরনে বিশ্বাসী নৌমন্ত্রীর আচরণে সবাই কিংকর্তব্যবিমূঢ় Part 1 ঘটনা আরটিভির স্টুডিওতে। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল। সেখানে বিএনপির নেতা রফিকুল ইসলাম মিয়ার উদ্দেশে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের ভাষা শালীনতা অতিক্রম করার একপর্যায়ে আরটিভি সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক, অতিথি আলোচক সবাই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দেখছিলেন শ্বাসরুদ্ধকর সেই দৃশ্য। গতকাল সোমবার রাতে আরটিভির টক শোতে এই ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টক শো ‘আওয়ার ডেমোক্রেসি’র সোমবারের আয়োজনের বিষয় ছিল ‘ঈদ-পূজোয় নিরাপদে ঘরে ফেরা’। অনুষ্ঠিত হয় তেজগাঁও শিল্প এলাকায় নির্মিত আরটিভির নতুন স্টুডিওতে। এতে অতিথি ছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী মো. শাজাহান খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইসরাফিল আলম, আওয়ামী লীগের আরেক সাংসদ গোলাম মওলা রনি, বিএনপির সাংসদ রাশেদা বেগম হীরা, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, জাতীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, র্যাবের পরিচালক কমান্ডার এম সোহায়েল, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ইকবাল হাবিব, সাংবাদিক মনির হায়দার ও জাকারিয়া কাজল এবং প্রবাসী সাংবাদিক নিশাদ দস্তগীর।
রাত সোয়া ১১টা থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে দেখা গেছে, নৌপরিবহনমন্ত্রী নতুন নতুন জাহাজ ও ড্রেজার কেনাসহ তাঁদের সরকারের আমলে নৌপথের উন্নয়নের বর্ণনা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘বিগত জোট সরকারের আমলে এই খাতের কোনো উন্নয়ন হয়নি, চাঁদাবাজি আর লুটপাট হয়েছে।
মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র সীমাহীন চাঁদাবাজি করেছেন। ’ এই কথার পিঠে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রমাণ দিয়ে কথা বলেন। আমাদের সময়ে দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি হয়েছে! এখন কি এসব বন্ধ হয়ে গেছে? আমরা তো হলমার্ক, পদ্মা সেতু, শেয়ারবাজার, রেল কেলেঙ্কারি করিনি। এখন তো লোকজন আপানদেরও চোর বলছে। ’
এতে শাজাহান খান কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আপনি চুপ করুন।
আমার বলা শেষ হলে আপনি বলবেন। ’ জবাবে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, কোনো রকম আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া হবে না। এখন দেখছি শুধু আমাদের আমলের বদনাম হচ্ছে। ’ এ সময় উপস্থাপক বলেন, ‘জনাব রফিকুল ইসলাম মিয়া, আপনাকে বলার সুযোগ দেওয়া হবে, আপনি তখন বলবেন। ’
কিন্তু রফিকুল ইসলাম সঞ্চালকের অনুরোধ আমলে না নিয়ে শাজাহান খানের কথার পিঠে কথা চালিয়ে যেতে থাকেন।
এতে মন্ত্রীর ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। এরপর তাঁরা পরস্পরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন। একে-অপরকে ‘তুই-তুমি’ বলেও সম্বোধন করেন। শাজাহান খান তখন রফিকুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘বেয়াদপের মতো কথা বলেন, রাস্তার মাঝখানে কথা বলেন। বেয়াদপের হাড্ডি।
’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সঞ্চালক রোবায়েত ফেরদৌস অসহায়ের মতো টিভি নিয়ন্ত্রণকক্ষের উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘এই অনুষ্ঠান বন্ধ করুন, স্টপ। রাজনীতিবিদদের কাছে আমরা এমন আচরণ প্রত্যাশা করি না। ’ কিন্তু টিভির নিয়ন্ত্রণকক্ষ কারওয়ান বাজারে থাকায় দ্রুত বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। একসময় টিভির স্ক্রিন অন্ধকার হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় দৃশ্য চিত্রায়ণ।
উপস্থিত অতিথিদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এর পরের দৃশ্যপট সম্পর্কে জানা গেছে। সেখানে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। পরে রফিকুল ইসলাম মিয়া স্টুডিও থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাকিরা হতভম্ব হয়ে দেখতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পর আরটিভির কর্মকর্তারা রফিকুল ইসলাম মিয়া ও রাশেদা বেগমকে স্টুডিওতে ফিরিয়ে আনেন।
তাঁদের অংশগ্রহণেই কয়েক মিনিট পর আবার অনুষ্ঠান শুরু হয়। আলোচনার শেষ অংশে আর কোনো উত্তেজনা বা উত্তাপ ছিল না। তবে অনুষ্ঠান শেষে আরটিভি কর্মীদের অনুরোধে মন্ত্রী শাজাহান খান হাত মেলান রফিকুল ইসলাম মিয়ার সঙ্গে।
জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘র্যাবের পরিচালকের সামনে একটি অনুষ্ঠানে একজন মন্ত্রী যে ভাষায় হাত উঁচিয়ে চোখ তুলে নেওয়া হুমকি দিয়েছেন, তা বলতে আমার খারাপ লাগছে। কারণ, এমনিতেই মানুষ রাজনীতিকদের ওপর শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলছে।
আমি তো উনার আগে এ দেশের মন্ত্রী ছিলাম। একজন মন্ত্রী কি এভাবে একজন নাগরিকের চোখ তুলে নেওয়ার কথা বলতে পারেন?’
রফিকুল ইসলাম মিয়া আরও বলেন, ‘মন্ত্রী আমার চোখ তুলে নিলে আমি কী করতে পারতাম? আসলে সরকার টক শোকে সহ্য করতে পারছে না। এটা বন্ধ করার অজুহাত হিসেবেই হয়তো আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। ’
নৌমন্ত্রীর আচরণে সবাই হতবাক (ভিডিও) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।