আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি। নয়া দিগন্তের অনুসন্ধান
তারেক মোরতাজা
সরকারি দলের ইন্ধনে রামু ও উখিয়ার বৌদ্ধবিহার-বসতিতে হামলা হয়েছে। বৌদ্ধরা বলছেন, এ ঘটনা পরিকল্পিত। এর সাথে সায় দিয়েছে সব রাজনৈতিক দলই।
তবে সন্দেহের তীর সরকারের দিকেই ছিল। এখন সেটাকে পুলিশ সরিয়ে প্রথম দিকে রোহিঙ্গা এবং সর্বশেষ জামায়াতে ইসলামীর দিকে নিতে চাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রের সাথে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ফেসবুক থেকে যে ছবিটি ছড়ানো হয়েছে তার সাথে ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মী জড়িত বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। আবদুল মুক্তাদির আলিফ নামে একজনকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে।
পুলিশের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, আলিফ শিবিরকর্মী।
আসলে কি তাই? ঘটনার পেছনের ঘটনার খবর নিতে গিয়ে মিলেছে বিভিন্ন তথ্য। তবে সবখান থেকেই এসেছে সরকার দলের ইন্ধনের কথা। সরাসরি হামলায় ও মিছিলে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় শীর্ষ নেতারা।
আলিফের মা সাজেদা বেগম শ্রীকুল ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।
দশকের পর দশক ধরে পরিবারটি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে ঐতিহ্যগতভাবেই জড়িত। সে পরিবারের একটি ছেলেকে হঠাৎ করে ছাত্রশিবির হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। যেটাকে কোনোভাবেই সমর্থন করছেন না আলিফের মা সাজেদা বেগম।
তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আমার ছেলে কোনো রাজনৈতিক দলে সাথে জড়িত নয়। সে ঘটনার দিন ফারুকের দোকানে মোবাইল ফোন মেরামতের জন্য গিয়েছিল।
এখন তাকে নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সে এলাকায়ও থাকে না। চট্টগ্রামে শ্যামলী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করে। টাকার জন্য সে বাড়ি এসেছিল।
ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, রামুর উত্তম বড়–য়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের কথা।
রামু ফাকুরে দোকানে সে ফেসবুক ব্যবহার করত। সেখান থেকেই তার ওয়ালে ট্যাগ করা ছবি দেখে সংুব্ধ হন জনতা। এমনটা পুলিশ ও গণমাধ্যম প্রথম দেশবাসীকে জানিয়েছিল। তবে এখন পুলিশ ও সরকারদলীয়রা এটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চান বলেই মনে করছেন বৌদ্ধ ভিুরা।
রামুর প্রাচীনতম সীমা বৌদ্ধবিহারের ভান্তে সত্যপ্রিয় মহাথেরো নয়া দিগন্তকে বলেন, রাজনৈতিকভাবে বিবেচনা না করে এটাকে সামাজিকভাবে বিবেচনা করা উচিত।
আমরা আসল অপরাধীদের ধরতে সরকারকে বলেছি। এ জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটিও হতে পারে। তিনি বলেন, রামু কাণ্ড দেখে আমি হতবাক। আমরা কিছু বলতে পারছি না। এমন কাণ্ড আর যেন না ঘটে।
একই রকম কথা বলেছেন সীমা বৌদ্ধবিহার পরিচালনা পর্ষদের সেক্রেটারি তরুণ বড়–য়া। তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রয়োজনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদান করতে হবে। তরুণ বড়–য়া স্থানীয় আওয়ামী লীগেরও নেতা।
পুলিশ ধারণা করছে উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ম্যানুপলেট করে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পেজ ম্যানুপলেট করা সম্ভব এমনটা জানিয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি ও সফটওয়্যার নির্মাতা মোস্তাফা জব্বার নয়া দিগন্তকে বলেন, উত্তম বড়–য়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।
এটা কি ফেক অ্যাকাউন্ট, নাকি আসল অ্যাকাউন্ট। তার মতে, কোনো সুস্থ ব্যক্তি বা নাস্তিকও কোনো ধর্মকে অবমাননা করে এমন কিছু পোস্ট করতে পারেন না।
তবে অধ্যাপক পিয়াস করিম মনে করেন, রোহিঙ্গাদের তথ্য প্রমাণ ছাড়া দায়ী করা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, হয়তো রোহিঙ্গাদের কেউ বা কোনো সংগঠন জড়িত থাকতে পারেন বলেও যারা দাবি করবেন তাদের তথ্য প্রমাণ দিতে হবে। তবে আমি মনে করি গড়পড়তা তাদের দায়ী করা ঠিক হবে না।
পিয়াস করিম নয়া দিগন্তকে বলেন, ষড়যন্ত্র তত্ত্বটা বড়ই বিপজ্জনক। এটার চর্চা হলে ঘটনা আবডালেই থেকে যাবে। প্রথম দিনেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পরে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলকে দায়ী করলেন। বিএনপির তদন্ত দল বলল জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে দেশকে চিহ্নিত করার জন্য এ হামলা। যে যাই বলুন না কেন এসব দুরদর্শিতার পরিচয় নয়।
আমার মনে হয় এখানে একটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত।
কে এই আলিফ?
আবদুল মোক্তাদির আলিফের বাড়ি রামু উপজেলা শহরের পাশে শ্রীকুল। তার মা সাজেদা বেগম আওয়ামী লীগের শ্রীকূলের সভানেত্রী। তার বাবা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কমল তার আত্মীয়। সাজেদা নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বলেছেন, আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক পুরনো। রামু ঘটনার সাথে তার ছেলের জড়িত থাকার বিষয়টি তিনি উড়িয়ে দেন।
আলিফ স্থানীয় স্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর চট্টগ্রামের বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট শ্যামলীতে ভর্তি হন। সেখানে তার ষষ্ঠ সেমিস্টার শেষ পর্যায়ে। থাকে হোস্টেলে।
আলিফ ২৫ সেপ্টেম্বর তাদের গ্রামের বাড়ি রামুতে আসে। সেখান থেকে সে ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম চলে যায়। পরে পুলিশ তাকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ বলছে, শিবিরের রামু থানার ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে আলিফ। এটি ২০০৯ সালের ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক আবু সালেহ মোহাম্মদ ইয়াহইয়া নয়া দিগন্ত বলেন, শিবিরের থানা কমিটিতে ক্রীড়া সম্পাদক বলে কোনো পদ নেই। তা ছাড়া শিবিরের সমর্থক থেকে শুরু করে সব ধরনের নেতাকর্মীর একটা ডেটাবেজ থাকে। সেখানে আমরা অনুসন্ধান করে এ নামে কাউকে পাইনি। পুলিশ একজন মুক্তাদিরকে ধরে আমাদের কর্মী বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এটা কোনোভাবেই সঙ্গত নয়।
ইয়াহইয়া বলেন, শিবিরকর্মীরা কোনো ধর্মের ওপর হামলায় বিশ্বাসী নয়। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। অহেতুক রাজনৈতিক হয়রানি এখানে কাম্য হতে পারে না। তার মতে, একটি রাজনৈতিক স্পর্শকাতর বিষয়ে পুলিশের এ ধরনের মন্তব্য সঠিক হতে পারে না।
উত্তম বড়–য়া ও কুরআন অবমাননা
উত্তম বড়–য়াকে নিরীহ উল্লেখ করে স্থানীয়রা জানান, সে এমনটা করতে পারে তা তারা ধারণাও করতে পারেননি।
ফারুকের মোবাইলফোন মেরামতের দোকানে বসে উত্তম ফেসবুক ব্যবহার করতেন। তবে তার ওয়ালে কুরআন অবমাননার যে ছবি সংযুক্ত করা হয় অনেকে এটাকে ফেক বলতে চাইছেন।
ফারুক নয়া দিগন্তকে গেফতারের আগে জানিয়েছেন, এটা ফেক কি না আমি জানি না। তার ওয়ালে তিনি নিজেও কুরআন অবমাননার ছবি দেখতে পান। তবে এ নিয়ে তিনি কাউকে কিছু বলেননি।
একই ভাবে ছবিগুলো দেখে মুক্তাদির।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার নয়া দিগন্তকে বলেন, দেশের প্রায় সব ফেসবুক ব্যবহারকারীর প্রোফাইল পাবলিক করা। যে কেউ তার ওয়ালে ছবি ট্যাগ করতে পারেন। উত্তম বড়–য়ার ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে থাকতে পারে।
এ ঘটনার বিষয়ে উত্তমের পক্ষ থেকে কোনো জবাব আসেনি।
তার পক্ষ হয়ে বিভিন্ন জন উত্তর সাজাচ্ছেন। উত্তম পলাতক রয়েছে। পুলিশ বলছে, তারা তাকে খুঁজছে।
উত্তম বড়–য়ার ফেসবুকই যদি হামলার কারণ হতো তাহলে আগে তার বাড়িতে ঢিল পড়ত, আগুন জ্বলত উল্লেখ করে রামু সীমা বিহারের সেক্রেটারি ও আওয়ামী লীগ নেতা তরুণ বড়–য়া নয়া দিগন্তকে এবং মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে গত সপ্তাহে বলেন, যদি উত্তমই হামলার কারণ হবে তাহলে তার বাড়িতে একটি ঢিলও পড়ল না কেন? কেন তার বাড়িতে কেউ আগুন দিলো না? তার স্বজনদের পুলিশ তাদের জিম্মায় নিয়ে আসে! তিনি এসব প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন। তার একটাই কথা এই হামলা পরিকল্পিত।
এর সাথে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
তদন্তের সময় বেড়েছে
রামু ঘটনা তদন্তের সময় বেড়েছে। কমিটি এখনো কারা এ হামলা ঘটিয়েছে, কারা এর পেছনে জড়িত তা চিহ্নিত করতে পারেনি। এ বিষয়ে কমিটির একাধিক সদস্যের সাথে আলাপকালে তারা নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ঘটনার মোটিভ কী ছিল তা ধরতে। দায়সারা কোনো রিপোর্ট আমরা দিতে চাচ্ছি না।
কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয় উদঘাটন করার চেষ্টা চলছে।
তদন্ত দলের সদস্য কক্সবাজারের এএসপি বাবুল আক্তার নয়া দিগন্তকে বলছেন, তারা তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন। এ পর্যন্ত তারা গ্রেফতার করেছেন ২২৩ জনকে।
রামুর হামলা যেভাবে
মেরংলোয়ার বাসিন্দা ও ক্ষতিগ্রস্ত গৃহিণী দীপ্তি বড়–য়া নয়া দিগন্তকে বললেন, দুবার মিছিল আসে। তৃতীয়বার যখন মিছিল যায় তখন পথের কাছে যত ঘরবাড়ি ছিল সবখানে আগুন দেয়া হয়।
রাতের আঁধারে তিনি লোকজনকে চিনতে পারেননি। তাই বলতে পারছেন না কারা ছিল। কিন্তু সমাবেশে যারা বক্তব্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে উসকে দিয়েছেন তাদের চেনা গেছে।
স্থানীয়রা নয়া দিগন্তকে বলেন, রামুর চৌমুহনীতে যে মিছিল-উত্তর সমাবেশ হয়েছে তাতে বক্তব্য রাখেন সরকার দলের নেতারা। তিনি জানান, ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় মিছিলটি বের হয় ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন, আমজাদ হোসেন, জিন বাবু ও রুস্তম আলীর নেতৃত্বে।
ওই মিছিলটি বৌদ্ধমন্দির এলাকা ঘুরে আসে। সেখান থেকে রামু চৌমুহনী বাজারের চৌরাস্তায় মিলিত হয়। সেখানে যোগ দেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সারোয়ার কাজল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুশরাত জাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবী চন্দ ও স্থানীয় থানার (প্রত্যাহারকৃত) ওসি নজিবুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত হন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
সেখানে বিএনপি নেতা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান ইউএনওর ফোন পেয়ে যান। তিনিও ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। ওই সমাবেশ চলাকালে চৌমুহনী বাজারের পাশে বিহার রোডের শ্রীকুল এলাকায় সাদা চিং বিহার ও লাল চিং বিহার মন্দিরে হামলা শুরু হয়। লুৎফর রহমান বলছেন তিনি এ হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করেন। একই কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
তবে স্থানীয়রা বলেছেন, মিছিল, সমাবেশ ও হামলার ক্ষেত্রে সামনের সারিতে ছিলেন সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা।
উখিয়ায় হামলাও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে
কক্সবাজার জেলার ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বেশ পুরনো বলেই জানালেন স্থানীয় উখিয়া আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অধ্য হামিদুল হক চৌধুরী। ঘটনার দিন ৩০ সেপ্টেম্বর বের করা মিছিলে তিনি নিজেও হাজির ছিলেন। তবে দায় পুরোটাই এড়িয়ে গেছেন। বলেছেন, তার দলের লোক জড়িত নয়।
জড়িত হলে তিনি নিজেই তাদের শাস্তি নিশ্চিতের জন্য বলতেন।
তার অভিযোগ হামলার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। সেটি তিনি নিজেই উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেছেন। বিকেল ৪টায় জাদিমুড়া আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি ১৪৪ ধারা জারি করার কথা বলেছেন। কিন্তু সেটি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ঘটনা পুরো উখিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইউএনও তাকে জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক তার সাথে ১৪৪ ধারা জারি বিষয়ে একমত হতে পারেননি।
তাই তা করা হয়নি। তিনি বলেন, ঘটনার পর সেনা ও বিজিবি সবাই এসেছে।
জাদিমুড়া বিহারের ভান্তে জ্যোতি শুভ নয়া দিগন্তকে বলেন, এলাকার লোকজনই এখানে হামলা করেছে। যাদের সাথে আমরা অনেক বছর ধরে এখানে উৎসব পালন করে আসছি, তারা হামলা করায়ই আমরা বেশি দুঃখ পেয়েছি। প্রথমে তারা ৩০ থেকে ৪০ জন আসে।
পরে এ সংখ্যা দুইশতে রূপান্তরিত হয়।
জাদিমুড়া বিহারের পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক অরুণ বড়–য়া স্বারিত ওই চিঠিতে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা সবাই স্থানীয় রাজাপালং ইউনিয়নের ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মী। তারা হলেন, মোহাম্মদ আলম, টিটু, জিয়াউদ্দিন, রুবেল, কামাল উদ্দিন, টিপুসহ অজ্ঞাত আরো ২০০ জন। তবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের কেউ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি।
২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর উখিয়াতে সতর্ক থাকার কথা ছিল।
কিন্তু তেমনটি ঘটেনি। সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ নেতারা মাইকিং করে কোর্টবাজারের জমায়েত থেকে ‘ধর্ম প্রাণ’ মুসলিমদের আমন্ত্রণ জানান। সেখান থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। যে মিছিলে আওয়ামী লীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহামুদুল হক চৌধুরী, হলুদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন মিন্টু প্রমুখ ছিলেন। তারা এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বরও একটি মিছিল করেন।
সেটি করা হয়েছিল আমেরিকায় নির্মিত ও ইন্টারনেটে প্রচারিত ইনোসেন্স অব মুসলিমসের প্রতিবাদে। সে সময় থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত দাবি করে স্থানীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তহিদুল আলম তহিদ নয়া দিগন্তকে বলেন, আগে থেকেই আওয়ামী লীগ মাঠ উত্তপ্ত করে রেখেছে। ৩০ তারিখে ফাইনাল শোডাউন করে তারা। এটা একবারেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কেন এমন একটি হামলার ঘটনা ঘটেছে তার জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।